করোনা মোকাবেলায় দেশ জুড়ে লকডাউন চলছে। এর ফলে সকলেই বেশ সমস্যায় পড়েছেন। তবে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন ভিন রাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকেরা। কাজ হীন, গৃহ হীন হয়ে বাড়ী ফেরার তাগিদে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে তাদের। আর তাই তো কেউ কেউ হাঁটা পথেই বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন, কেউ বা গাদাগাদি করে কোনও লরিতে করে ফেরার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি সরকার থেকে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হলেও অনেকেই নিজেদের মত করেই ফেরার চেষ্টা করছেন। এই জন্য অবশ্য বেঘোরে প্রানও হারিয়েছেন অনেকেই।
তবে যাই হোক এই করোনা আবহে নিজ ঘরে ফিরতে চাইলেই তো আর হুট করে ফেরা সম্ভব নয়, তার আগে মেনে চলতে হবে সরকারি নির্দেশিকা। করাতে হবে থার্মাল স্ক্রিনিং, থাকতে হবে কোয়ারেন্টিন সেন্টারে। সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে সকারের পক্ষ থেকেই। কিন্তু সেই কোয়ারেন্টিন সেন্টারে যদি পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না পাওয়া যায়, তাহলে দুর্দশার অন্ত থাকে না। এমনই অভিযোগের খবর পাওয়া গেল কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলার কিছু কোয়ারেন্টিন সেন্টারের বিরুদ্ধে।
আলিপুরদুয়ার জেলার কামাখ্যাগুড়ির এক কোয়ারেন্টিন সেন্টারের করুণ চিত্র তুলে ধরেছেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ যুব আইএনটিইউসি-র সহ সভাপতি শ্রী রাজর্ষি ভৌমিক মহাশয়। ঘটনাটি গত পরশু, অর্থাৎ শুক্রবার ২২ শে মে-র। তার গলায় এদিন অভিযোগের সুর ছিল স্পষ্ট। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, “ রাজ্য সরকার হয়ত পরিযায়ী শ্রমিকদের মানুষ বলে গণ্য করতে চাইছেন না। এক জায়গায় গাদাগাদি করে লোক রাখা হয়েছে, পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই, শৌচাগার ঠিক নেই, কাল রাতের পর খাওয়া দেওয়া হয়নি শ্রমিকদের। আমি সংবাদ পেয়ে স্থানীয় বিএলও-র সাথে যোগাযোগ করি। কিন্তু ওনার পরিবর্তে অন্য একজন ফোন তোলেন এবং জানিয়ে দেন প্রশাসন তাদের কথার গুরুত্ব দিচ্ছে না। এরপর কুমারগ্রামের বিডিও-র যে নম্বর ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে, সেখানে ফোন করলে সেই নম্বর বৈধ নয় বলে জানা যায়। এমন পরিস্থিতিতে আলিপুরদুয়ার জেলা শাসকের দপ্তরে সব জানালে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর সন্ধ্যে ৬ টা নাগাদ পুনরায় জেলা শাসকের দপ্তরে ফোন করা হলে তিনি পরপর ২ টো বাসের ব্যবস্থা করেন। সেই বাসে মোট ৫৭ জন পরিযায়ী শ্রমিকদের তাদের নিজ নিজ জেলায় অর্থাৎ মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদীয়াতে ফেরত পাঠানো হয়”।
জেলা শাসকের এই উদ্যোগে সকলের মুখেই হাসি ফুটেছে।

No comments:
Post a Comment