পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে বুধবার (২০ মে) ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়েছে আম্ফান। এর তিনদিন পরেও থমকে আছে শহর কলকাতা। নেই জল সরবরাহ, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও হয়নি স্বাভাবিক। বিশেষ করে রাজধানী কলকাতা এ দশার সম্মুখীন হয়নি কখনও। শহরজুড়ে এখন হাহাকার, জায়গায় জায়গায় চলছে বিক্ষোভ। সময় যত গড়াচ্ছে, ততই ধৈর্যের বাধ ভেঙে পড়ছে শহরবাসীর। চূড়ান্ত অসহায় অবস্থায় দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন কলকাতার বাসিন্দারা।
একে করোনার দাপট বিন্দুমাত্র কমেনি। তার উপর আম্ফানের তাণ্ডব। শহরবাসী যেন এক দুঃস্বপ্নের মধ্যে বাস করছে। তিন দিন পেরিয়ে গেলেও শহরের ৭০ শতাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ নেই। নেই খাওয়ার জল। এখনও অনেক এলাকায় জমে আছে গঙ্গার জল। বিচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ। বিচ্ছিন্ন নেট পরিষেবা। রাজ্যের রাজধানী শহর কলকাতাসহ সব জেলার ছবিটা একই। বিশেষ করে কলকাতাসহ দুই ২৪ পরগনায়। আর সময় যত গড়াচ্ছে, ততই অধৈর্য হয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে মানুষ। শোচনীয় অবস্থা নারী, শিশু, অসুস্থ রোগীদের। হাসপাতালগুলোয় মর্গে জমছে মরদেহের স্তূপ। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে এবং লোকবল কমে যাওয়ায় সেসব মরদেহগুলো সৎকার করা যাচ্ছে না।
প্রশাসনকে বারবার বলেও কোন লাভ হচ্ছে না। সহ্যের চরম সীমায় পৌঁছেছে অনেক স্থান। এই অভিযোগে রাস্তা অবরোধ করেছে অনেক এলাকা। বিদ্যুৎ ও জলের জন্য এলাকায় চলছে পথ অবরোধ। কলকাতার ক্ষেত্রেও একই চিত্র। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৮৫ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। শুধু শহর কলকাতায় ভেঙেছে হাজারের কাছাকাছি গাছ। ল্যাম্পপোস্ট ভেঙেছে ২০০-র কাছাকাছি। খেলনার মতো ভেঙেছে আধপাকা বাড়ী। কাগজের মতো উড়ে গেছে লোহার গেট থেকে শুরু করে টিনের চাল। এমনকী প্রথমবারের মতো শহরবাসী দেখল টালিগঞ্জ কুদঘাটের মেট্রোর চাল উড়ে যাওয়া।
ইতোমধ্যে রাজ্যে হেলিকপ্টারে করে শুক্রবার ঘুরে গেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, বাস্তবায়ন করেছেন এক হাজার কোটির অর্থায়ন। ফিরে গিয়ে আরও সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতার কথা মতো পশ্চিমবঙ্গে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকা। কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে সচল অবস্থায় আনার চেষ্টা করবেন কলকাতাকে। তবে নতুন করে কলকাতাকে আবার সাজাতে কমপক্ষে দুই মাস সময় লাগবে।

No comments:
Post a Comment