সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি ভুলে মোদি-মমতাকে দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday, 23 May 2020

সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি ভুলে মোদি-মমতাকে দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়




ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের বসিরহাট মহকুমা পরিদর্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাথে ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও।


এই খবর চাউর হতেই শুক্রবার  (২২ মে)  সকাল থেকে বসিরহাট কলেজ সংলগ্ন এলাকায় কাতারে-কাতারে মানুষ ভিড় জমাতে থাকেন। ফলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম কার্যত ভেঙে পড়ে।

বেলা ১২টার দিকে বসিরহাট শহরের উপর দেখা মেলে প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টারের। তার আগে সকাল ৯টা থেকে উৎসাহী মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার দেখার সঙ্গে-সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়েন তারা। হাত নেড়ে স্বাগত জানান তাদের। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাশাপাশি দাঁড়িয়ে কার্যত গায়ে গা ঘেঁষে মানুষ দাঁড়িয়েছিলেন। অনেকের মুখেই ছিল না মাস্ক। যে ছবি দেখে কার্যত স্তম্ভিত স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা এবং চিকিৎসকেরা।

সচেতন শহরবাসী প্রশ্ন তুলেছেন, করোনা পরিস্থিতি যখন জটিল আকার রূপ নিচ্ছে, তখন কীভাবে পুলিশ প্রশাসনের চোখের সামনে মানুষ শারীরিক দূরত্ব বজায় না রেখে দাঁড়িয়ে থাকলেন ঘন্টার পর ঘন্টা।

এদিনের ভিড় থেকে যদি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে তাহলে তার দায় কে নেবে? প্রশ্ন তুলছেন সচেতন বসিরহাটবাসী। যদিও পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা এ বিষয়ে কুলুপ এঁটেছেন মুখে।


কেন তারা শারীরিক দূরত্ব বজায় না রেখে এভাবে জমায়েত হন প্রশ্নে উত্তরে এক বৃদ্ধ বলেন, মোদি-মমতাকে একসঙ্গে দেখব এমন দুর্লভ জিনিস কি হাতছাড়া করা যায়! একটু সাহস করেই চলে গিয়েছিলাম। আমরা একটু দূরত্ব মেনেই দাঁড়িয়েছিলাম।

 বাকিদের কথায়  উঠে আসে প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন, এর থেকে ভালো জিনিস আর কিছু হতে পারে না।

রাজনৈতিক কারবারিরাও অবাক হয়েছেন। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে ফাটল ধরেছিল। সর্বশেষ বিতর্ক দানা বেঁধেছিল করোনা পরিস্থিতি দেখতে এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠানো নিয়ে।

উপস্থিত মানুষের বক্তব্য এখন থেকে রাজনীতি থাকুক রাজনীতির জায়গায় কিন্তু রাজনীতিকে কেন্দ্র করে যেন আর হিংসা, খুন দেখতে না হয় আমাদের। মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী যে ঐক্যের বাতাবরণ দেখিয়ে গেলেন তা থেকে যেন দুই দলের কর্মী-সমর্থকরা শিক্ষা নেন। তবে ওই শারীরিক দূরত্ব বজায় না রাখা ওই ভীড়কে ঘিরেই দিনের শেষে আশঙ্কা থেকেই গেল।

এদিকে, দেশে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির হারে প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে নতুন রেকর্ড। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৬ হাজার ৬৫৪ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে।

আজ শনিবার (২৩মে) কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে, যা একদিনে সর্বোচ্চ। এছাড়াও দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১৩৭ জন। শুক্রবার বৃদ্ধির সংখ্যাটা ছিল ৬ হাজার ৮৮।

গত চারদিনে দেশে ২৫ হাজার করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। লকডাউনের চতুর্থ পর্ব শুরু হওয়ার পর দেশের বেশকিছু জায়গায় চলাচলে শিথিলতা আনায় করোনা আক্রান্ত বাড়ছে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad