করোনা লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের অভ্যন্তরীণ অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারমন। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঘোষণা দেন, প্রায় ৮ কোটি অভিবাসী শ্রমিককে দুই মাস বিনামূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহ করা হবে। এ কাজে ব্যয় হবে ৩৫ বিলিয়ন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষিত ২০ লাখ কোটির আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় এই খাদ্যশস্য বিতরণ করা হবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসে বিস্তার ঠেকাতে জারি করা লকডাউনে বিপাকে পড়েছেন অভ্যন্তরীণ অভিবাসী শ্রমিকরা। বেশিরভাগই লকডাউনে হারিয়েছেন কাজ। ফলে বাধ্য হয়ে তারা নিজ রাজ্যে ফেরত আসতে চাইছেন। যদিও ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রেখেছিল। পরে শুধু শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, এপ্রিল থেকে ভারত সরকার প্রায় ১০০ বিলিয়ন ব্যয় করেছে ২৩ মিলিয়ন বেকারদের পেছনে। গ্রামে চাকরির নিশ্চয়তা প্রকল্পে এই অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।
সিতারমন জানান, সরকার অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। যাতে করে শ্রমিকরা স্বল্পমূল্যে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে পারেন।
হকার ও ফুটপাথের ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণ প্রকল্প ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। এই প্রকল্পে ব্যবসায়ীরা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘সারা দেশে মোটামুটি ৫০ লাখ স্ট্রিট ভেন্ডর রয়েছেন। তাদের জন্য এই ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। এই প্রকল্পের জন্য খরচ হবে ৫ হাজার কোটি।’
সিতারমন আরও বলেন, কৃষিক্ষেত্রে প্রতি বছর ৯০ হাজার কোটি টাকা দেয় নাবার্ড। কৃষি ঋণসহ বিভিন্ন খাতে সেই অর্থ সমবায় ও অন্যান্য গ্রামীণ ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে দেওয়া হয়। এ বার তার সঙ্গে কেন্দ্র আরও ৩০ হাজার কোটি দেবে নাবার্ড। এতে দেশের আড়াই কোটি কৃষক উপকৃত হবেন। এ ছাড়া মৎস্যচাষি ও পশুপালনকারীদেরও ‘কিসান ক্রেডিট কার্ডে’র আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়অ ভাষণে মোদি ২০ লাখ কোটির এই প্যাকেজের রূপরেখা হাজির করেছিলেন। এই প্রণোদনা দেশের জিডিপির প্রায় দশ শতাংশ। তিনি বিস্তারিত না জানালেও বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন পরে তা ঘোষণা করবেন।

No comments:
Post a Comment