লকডাউন পরিস্থিতিতে তেলেঙ্গানার এক গ্রামে পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে শ্রমিকের পরিবারসহ ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ছ’জন পশ্চিমবঙ্গের এবং একই পরিবারের। দু’জন বিহারের। এক জন ত্রিপুরার। ঘটনাটি ঘটেছে ওয়ারাঙ্গল গ্রামীণ জেলায় গোরেকুন্তা গ্রামে।
বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী কে সি রাও জানিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার জন্য ট্রেন-বাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। হেঁটে যেন কেউ বাড়ীর পথ না-ধরেন। সে দিনই হায়দরাবাদের উপকণ্ঠে গোরেকুন্তা গ্রামে এই কুয়োটি থেকে চার জনের দেহ উদ্ধার হয়। শুক্রবার মেলে আরও পাঁচ জনের। তবে তাদের গায়ে আঘাতের কোনও চিহ্ন না থাকায় ব্যাপারটি নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এটা গণ-আত্মহত্যা। লকডাউনের কারণে ঘরে ফিরতে পারছিলেন না। এছাড়া গত দু’মাস ধরে জুটমিল ও অন্য কারখানা থেকে বেতন পাননি এই শ্রমিকেরা। কারও শরীরে আঘাতের চিহ্নও নেই। ফলে হত্যার ঘটনা হওয়ার সম্ভবনা কম বলে মনে করা হচ্ছে। ঘরে ফিরতে না-পারা, আশ্রয় হারানো এবং চরম আর্থিক সঙ্কট নিয়ে সকলেরই অবস্থা ছিল কোণঠাসা।
পশ্চিমবঙ্গের মকসুদ আলম ২০ বছর আগে গোরেকন্টার এক জুট মিলে কাজ পান। কারখানার সাথে লাগানো দু’টি ঘরে সপরিবার থাকতেন তিনি। লকডাউনে বেতন বন্ধ হয়। হারান আশ্রয়ও।
স্থানীয় এক দোকানদার নিজের গুদামে আশ্রয় দিয়েছিলেন তাদের। তারই কাছে এই কুয়োটি, যা থেকে মিলেছে মকসুদ, তার স্ত্রী নিশা, দুই ছেলে সোহেল ও শাবাদ, মেয়ে বুশরা খাতুন এবং তিন বছরের নাতি শাকিলের দেহ। ত্রিপুরার বাসিন্দা শাকিল আহমেদ জুট মিলের গাড়ি চালাতেন। এ ছাড়া বিহারের শ্রীরাম ও শ্যাম অন্য একটি কারখানায় কাজ করতেন। এরা সকলে একই কুয়োয় কী ভাবে মারা গেলেন সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি। মৃতদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার এবং প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চলছে।

No comments:
Post a Comment