আম্ফানে ক্ষত-বিক্ষত বাংলা, হবু সন্তানকে সেই দুর্দশার কথা জানাতে চিঠি লিখলেন শুভশ্রী - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, 25 May 2020

আম্ফানে ক্ষত-বিক্ষত বাংলা, হবু সন্তানকে সেই দুর্দশার কথা জানাতে চিঠি লিখলেন শুভশ্রী




প্রকৃতি যেন রুদ্ররূপ ধারণ করেছে মহামারী করোনায়। এ যেন এক অচেনা চারিদিক, অচেনা শহর। প্রাকৃতিক বিপর্যয় যে প্রিয় শহরকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। চেনা অলি-গলি, চেনা ময়দানের ছবি বদলে গেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়তো এক অন্য কলকাতাকেই দেখবে! বিপর্যস্ত বাংলার সেই আবেগকে সম্বল করেই শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় চিঠি লিখলেন পেটের সন্তানকে। যে এখন ভূমিষ্ঠ হওয়ার অপেক্ষায়।

পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি দেখে কিছুতেই মন শান্ত রাখতে পারছেন না শুভশ্রী। মনের কোণের সেই কথাই চিঠিতে ভাগ করে নিলেন অভিনেত্রী বললেন, মনটা বড্ড খারাপ, সারাক্ষণ চেষ্টা করছি মনটাকে ঠিক রাখার, কিন্তু কিছুতেই পারছি না। সবাই বলে প্রেগনেন্ট হলে হাসিখুশি থাকতে হয়, কী করে থাকব বল তো! তোর কথা ভেবেই সব ভোলার চেষ্টা করছি। কিন্তু এত ধ্বংসস্তূপ আগে কখনও দেখিনি যে… কান্না চেপে রাখতে পারছি না। নিজের মনটাকে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে, না না এখন মন খারাপ করলে চলে না! ভাবছি তুই কী ভাববি… কিন্তু নিজেকে আটকে রাখতে পারছি না। তার চিঠিতে উঠে এল গৃহহীনদের কথা। যারা এই আম্ফা‌নের দাপটে ঘর হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়েছেন।অভিনেত্রীর কথায়, জানিস কত হাজার হাজার গাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে… সেগুলোকে আর ফেরানো যাবে না। ওই গাছগুলোকে যে এত ভালবাসতাম আগে কখনও অনুভব করিনি… তোকে গল্ফগ্রীন, সাউদার্ন এভিনিউ, ময়দানের সবুজ দৃশ্য আর দেখানো হল না। সেই বড় বড় গাছগুলো যেগুলো তো শুধু গাছ ছিল না। ছিল হাজার হাজার পাখির বাসা। তুই দেখতে পেলি না! ৮২ হাজার ঘর ভেঙে গেল এই ঝড়ে।

প্রকৃতির কোলে এই আমরাই আধুনিকতার পালে হাওয়া দিয়ে কত শত হাইরাইজ বিল্ডিং তুলেছি। সে প্রসঙ্গও উঠে এল শুভশ্রীর চিঠিতে, মাঝে চিৎকার করে প্রকৃতিকে বলতে ইচ্ছে করছে.. আর কত? আবার ভয়ও লাগছে। পাছে, পাল্টা‌ প্রশ্ন আসে! পৃথিবীর হৃৎপিন্ড যখন দাউ দাউ করে জ্বলছিল, কোথায় ছিল তোদের মনুষ্যত্ব? প্রকৃতির কোল কেটে যখন ফ্ল্যাটবাড়ী বানাস, তখন তোদের বিবেকে বাঁধে না? জঙ্গলের মাঝেই রেল লাইন পাতিস, আর তাতেই কাটা পড়ে কত হাতির দল। কটা প্রশ্ন করিস তোরা মানুষরা? ছি-ছি সত্যিই কোনও উত্তর দিতে পারব না। তার জন্যেই চুপ করে আছি।

প্রসঙ্গত, সোশ্যাল মিডিয়ায় বছর চারেকের এক বাচ্চার খাবারের থালা হাতে নিয়ে একটি ছবি বেশ ভাইরাল হয়েছে। সন্তানতুল্য সেই শিশুর কথাও বললেন, বুক অবধি জল নিয়ে ত্রাণের খাবার নিতে এসেছে বছর চারের এক বাচ্চা, এরপরেও তোর কথা ভেবে কী করে বেশি বেশি খাই বলতো? এই তো আর কিছু বছর পর তুইও ওর সমানই হবি। ও তো তোরই মতো…। শুভশ্রীর কথার মধ্য দিয়েই এক মায়ের আরতি ফুটে উঠল। যেন হাজার হাজার গর্ভবতী মায়েদের মুখপত্র হয়েই কথা বললেন শুভশ্রী।

সন্তানের উদ্দেশ্যে বললেন, তোকে সৃষ্টি করার যে আনন্দ প্রত্যেকদিন আমি উপভোগ করি, পৃথিবীর সবাই সেই আনন্দ উপভোগ করবে খুব তাড়াতাড়ি। শুধু সময়ের অপেক্ষা। প্রিয় বাংলা যে আবার উঠে দাঁড়াবেই, সেই বার্তাই দিলেন চিঠির শেষে শুভশ্রী ।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad