দুপুরবেলা লন্ডনের অফিসে কাজ করে রাতে নিউইয়র্কের বাসায় খাবার খাচ্ছেন- অনেকের কাছেই এটা এখনও শুধুই স্বপ্ন। অথচ আজকাল মানুষ কত অসম্ভবকেই সম্ভব করে ফেলছে, তাহলে এতদিনেও সুপারসনিক বা শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিতে ভ্রমণের বাধা কাটছে না কেন? দেখতে দেখতে প্রায় ৫০ বছর হয়ে গেল, কতবার চেষ্টা হয়েছে, কত দেশ নতুন নতুন সুপারসনিক বিমান বানিয়ে আশার আলো দেখিয়েছে। তবে প্রতিবারই কিছুদিনের মধ্যেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে সবার।
মানুষ আর কতকাল অপেক্ষা করবে? বর্তমান প্রজন্ম কি পারবে সুপারসনিক বিমানে চড়তে? উত্তর এখনও ‘হ্যাঁ’ না হলেও এ নিয়ে আবারও নতুন করে আশার আলো জেগে উঠেছে। গত সপ্তাহে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ও মহাকাশ ভ্রমণ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ভার্জিন গ্যালাকটিকের মধ্যে কার্যকর সুপারসনিক উড়োযান তৈরিতে একটি চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তি মোতাবেক ভার্জিন গ্যালাকটিক তাদের বিশেষজ্ঞ জ্ঞান ও সরঞ্জাম নাসার সঙ্গে শেয়ার করবে।
নাসার অ্যাডভান্সড এয়ার ভেহিকেল প্রোগ্রামের পরিচালক জেমস কেনিয়ন এক বিবৃতিতে জানান, নতুন একটি বাণিজ্যিক উড়োযান তৈরি করতে ভার্জিন গ্যালাকটিকের প্রকৌশলীরা গত ৫০ বছর ধরে বিকশিত হওয়া প্রযুক্তির ওপর নজর দেবেন।
ভার্জিন গ্যালাকটিকের প্রধান নির্বাহী জর্জ হোয়াইটসাইডস সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সুপারসনিক ভ্রমণ সফল করার নতুন চেষ্টায় নেতৃত্ব দিতে খুবই ভালো অবস্থানে রয়েছে তার প্রতিষ্ঠান। কারণ গ্যালাকটিকই একমাত্র বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান যা ম্যাক ১-এর (শব্দের গতি, প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১ হাজার ২৩৪ কিলোমিটার) চেয়ে দ্রুত উড়ছে।
নতুন সুপারসনিক বিমানের নকশা করার পর্যায়ে এখনও পৌঁছায়নি ভার্জিন গ্যালাকটিক। তবে ধারণা করা হচ্ছে, নতুন নকশায় তারা রকেট ইঞ্জিন ব্যবহার না-ও করতে পারে।
হোয়াইটসাইডস জানিয়েছেন, এখনও কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও তারা এয়ার-ব্রেথিং জেট ইঞ্জিন ব্যবহারের চিন্তা করছেন। অর্থাৎ, প্রতিষ্ঠানটি রকেট প্লেনের বদলে সুপারসনিক বিজনেস জেটের মতো উড়োযান তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রকেট আর উড়োজাহাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন দু’টি প্রযুক্তি। তবে হোয়াইটসাইডসের মতে, ভার্জিন গ্যালাকটিকের দু’টি ক্ষেত্রেই অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রকৌশলীরা ৫০ থেকে ২০০ আসনের নেক্সট জেনারেশন সুপারসনিক এয়ারলাইনার নিয়ে ভাবছেন। যদিও এ উড়োযান ভ্রমণে টিকিটের মূল্য কেমন হবে তা নিয়ে এখনও ভাবেনি প্রতিষ্ঠানটি। তবে সেটি যে খুব একটা সাশ্রয়ী হবে না, ইতিহাস তেমনই সাক্ষ্য দেয়।

No comments:
Post a Comment