প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ায় ১৪ বছরের মেয়ের মুন্ডুচ্ছেদ করল বাবা - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, 28 May 2020

প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ায় ১৪ বছরের মেয়ের মুন্ডুচ্ছেদ করল বাবা






ইরানের উত্তরাঞ্চলের জিলান প্রদেশে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে হত্যার দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে তার বাবাকে। আপত্তি সত্ত্বেও প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ায় পারিবারিক সম্মান রক্ষার্থে ওই কিশোরীকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর দেশটিতে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, জিলান প্রদেশের বাড়ী থেকে ৩৫ বছর বয়সী প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছিলেন কিশোরী রোমিনা আশরাফি। প্রেমিকের সঙ্গে বিয়েতে আশরাফির বাবা আপত্তি জানানোয় বাড়ী ছাড়েন।

পুলিশ এই দম্পতিকে উদ্ধার করে। প্রাণহানির আশঙ্কা জানালেও তাতে কর্ণপাত না করে কিশোরী রোমিনাকে তার বাবার বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে শোওয়ার ঘরে রোমিনার ওপর হামলা চালান তার বাবা।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিলখবরডটআইআর বলছে, ধারালো কাস্তে দিয়ে রোমিনার শিরশ্ছেদ করে তার বাবা। পরে সেই কাস্তে হাতে নিয়ে বাড়ী থেকে বেরিয়ে মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

দেশটির বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায় রোমিনার গল্প গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হয়। 'নিরাপত্তাহীন বাবার বাড়ী' শিরোনামে দেশটির সংস্কারপন্থী পত্রিকা এবতেকার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনে নারী এবং কিশোরীদের সুরক্ষায় দেশটির বিদ্যমান আইনের ব্যর্থতার সমালোচনা করা হয়।

এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্যুইটারে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশিবার হ্যাশট্যাগে রোমিনা আশরাফি ব্যবহার করে নিন্দা জানানো হয়েছে। এসব ট্যুইটে ইরানি পিতৃতান্ত্রিক সমাজের বৈশিষ্ঠ্য এবং হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়।
ইরানের সোস্যাইটি ফর প্রোটেক্টিং উইমেন'স রাইটসের বর্তমান সভাপতি শাহিনদখত মোলাভার্ডি বলেন, ইরানে অনার কিলিংয়ের প্রথম এবং সর্বশেষ বলি নন রোমিনা। তিনি বলেন, স্থানীয় এবং বিশ্ব সম্প্রদায় প্রভাব বিস্তারকারী সংস্কৃতি ও আইনে পরিবর্তন না আনলে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড চলতেই থাকবে।

ইরানের ইসলামিক দণ্ডিবিধি অনুযায়ী, বিদ্যমান আইনে পারিবারিক সহিংসতা অথবা অনার কিলিংয়ের শাস্তিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন আইনে পরিবারের সদস্য এবং পিতাদের সাজা হ্রাস করা হয়।

দেশটিতে বর্তমান আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি যদি মেয়েকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তার সর্বোচ্চ সাজা তিন থেকে দশ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। যদিও আগে এই অভিযোগে সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান ছিল।
ইরানে প্রত্যেক বছর কত সংখ্যক অনার কিলিংয়ের ঘটনা ঘটে তার কোনও পরিসংখ্যান নেই। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং উপজাতি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রায়ই অনার কিলিংয়ের ঘটনা ঘটে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad