শুকিয়ে যাওয়া নদীতে পাওয়া গিয়েছে স্বর্ণমুদ্রা! - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday, 31 May 2020

শুকিয়ে যাওয়া নদীতে পাওয়া গিয়েছে স্বর্ণমুদ্রা!




নদীতে মাছ থাকে তা নিশ্চয়ই অজানা নয়! তবে নদী শুকিয়ে গেলে সেখানে মাছ কিংবা অন্য কোন জলজ প্রাণীও থাকে না। কারণ জল ছাড়া তাদের বেঁচে থাকা অসম্ভব। তবে বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে, শুকিয়ে যাওয়া নদীতে পাওয়া যাচ্ছে স্বর্ণমুদ্রা! অবাক করা তথ্য হলেও এটি সত্যি।

নদীটি শুকিয়ে গেছে। আর তার থেকেই মিলেছে স্বর্ণ ও রৌপ্যমুদ্রা। এসব মুদ্রার সবই আবার প্রাচীন আমলের। এমন কাণ্ডই ঘটেছে দানিউব নদীর হাঙ্গেরি অংশে। প্রত্নতত্ত্ববিদরা নদীর শুকনো অংশ থেকেই পেয়েছেন দুই হাজারের বেশি মুদ্রা।

ফেরেঞ্জি মিউজিয়ামের সঙ্গে যুক্ত প্রত্নতত্ত্ববিদ কাতালিন কোভাস জানিয়েছেন, মুদ্রা ছাড়াও সেখানে মিলেছে প্রাচীন আমলের লোহার অস্ত্র, কামানের গোলা, বর্শা, তরবারি। হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের দক্ষিণে এর্দ শহরের গা-ঘেঁষে নদীটা যেখানে বইছে, সেখানেই মিলেছে এগুলো। নদীতে জল স্তর বেড়ে যাওয়ার আগেই কাজ সেরে ফেলার চেষ্টা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, ইউরোপের অন্য নদীগুলোর মতো দানিউবেরও বেশ কিছু জায়গা একেবারে শুকিয়ে গেছে। এই নদীর কিছু অংশে জল স্তর মাত্র ১৫ ইঞ্চিতে নেমে এসেছে।

প্রাচীন আমলের এত মুদ্রা এক সঙ্গে পেয়ে উচ্ছ্বসিত গবেষকরাও। প্রত্নতত্ত্ববিদ বালজ ন্যাগি জানিয়েছেন, ৯০ শতাংশই মুদ্রাই প্রায় ১৬৩০ থেকে ১৭৪৩ সালের। নেদারল্যান্ডসে তৈরি হয়েছিল মুদ্রাগুলো। এছাড়াও ফ্রান্স, জুরিখ ও ভ্যাটিকানের মুদ্রাও রয়েছে।

দানিউবের পাশেই বুদাপেস্টের প্রাচীন সেতুর ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি হামলায় এটি ধ্বংস হয়। এর পাশেই মিলেছে এই গুপ্তধনের সন্ধান।

২২ কারাটের হাঙ্গেরিয়ান মুদ্রা ছাড়াও ফ্রান্সের মুদ্রাগুলো যে ১৬০০ শতকে ষোড়শ লুইয়ের আমলের তাও নিশ্চিত করছেন গবেষকরা। ১৭০০ থেকে ১৮০০ শতকের ইউরোপের অন্য দেশের মুদ্রাও মিলেছে।

ফেরেঞ্জি মিউজিয়ামের কর্মকর্তা গাবর গুলিয়াস এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, প্রথমে একজন প্রত্নতত্ত্ববিদ মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমেই গুপ্তধনের হদিস পেয়েছিলেন। তিনি প্রথম সেন্ট জর্জের ছবিযুক্ত একটি ঘণ্টা খুঁজে পান। তিনি বিষয়টি মিউজিয়ামকে জানান। তারপর শুরু হয় পুরোদমে কাজ। ১৭৪৩ সালে অস্ট্রিয়ার সম্রাজ্ঞী মারিয়া থেরেসার আমলের মুদ্রাও উদ্ধার হয়।

মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের অনুমান, এখানে জাহাজের ধ্বংসাবশেষ মিলতে পারে।

তারা বলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী উদ্ধারের কাজ অব্যাহত। ২০২০ সালে একটি প্রদর্শনীতে এগুলো রাখার কথা ভাবা হয়েছে। হাঙ্গারির অন্য অংশেও প্রদর্শনীটি করার কথা ভাবছেন তারা।

দানিউব নদী জার্মানি, অস্ট্রিয়া, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, মলদোভা ও ইউক্রেন এই ১০টি দেশের মধ্য দিয়ে বহমান।

সম্প্রতি স্বর্ণ ও রৌপ্যমুদ্রাগুলো যেখানে উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে নদীটি প্রায়ই শুকিয়ে গেছে। জায়গাটি বুদাপেস্ট থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad