মৃত্যু দণ্ডের কিছু পদ্ধতি, যা জানলে শিহরিত হয়ে উঠবেন - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, 26 March 2020

মৃত্যু দণ্ডের কিছু পদ্ধতি, যা জানলে শিহরিত হয়ে উঠবেন






মৃত্যুদণ্ড ঠিক না ভুল? সভ্য সমাজে কি কাউকে প্রাণদণ্ড দেওয়া যায়? বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু বিতর্ক সত্ত্বেও বিশ্বের ৫৬টি দেশে এখনও অপরাধের চরম শাস্তি হিসেবে রয়ে গিয়েছে প্রাণদণ্ড। অতীত থেকে বর্তমান, মধ্যযুগ থেকে ডিজিটাল যুগ, শুধু বদলে গিয়েছে মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতিগুলো। কতটা নির্মম মানুষ হতে পারে, তারও একটা উদাহরণ প্রাণদণ্ডের ধরনগুলো।

আধুনিক সমাজে মৃত্যুদণ্ডের সবচেয়ে প্রচলিত উপায় হল ফাঁসি। ভারত তো বটেই, পাকিস্তান, ইরান, জাপান, সিঙ্গাপুরে এভাবেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় অপরাধীকে।

এর পরেই সব থেকে পরিচিত উপায়টি হল গুলি করে মারা। তবে এর আবার প্রকারভেদ আছে। চীন, বেলারুশ, রাশিয়া, তাইওয়ানে দোষীর কপালে একটা গুলি করেই হত্যা করা হয়। আবার থাইল্যান্ডে অপরাধীকে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয় মেশিনগানের গুলিতে। ইন্দোনেশিয়াতে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় দোষীকে। উত্তর কোরিয়ায় তো মানুষ মারতে অ্যান্টি এয়ারক্রাফট গান-ও দাগা হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, গুয়াতেমালা, ভিয়েতনামে মারণ ইঞ্জেকশনদিয়ে হত্যা করা হয় অপরাধীকে। গুলি করে মারার পাশাপাশি চিন, থাইল্যান্ডেও প্রাণদণ্ডের আর এক উপায় হল এই মারণ ইঞ্জেকশন।

ফিলিপিন্সে বিদ্যুতের শক দিয়ে হত্যা করা হয় অপরাধীকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তো মারণ ইঞ্জেকশনের প্রয়োগে মারা হয়ই, বিষাক্ত গ্যাসের প্রয়োগেও মারা হয় দোষীকে।

সৌদি আরবে তলোয়ারের এক কোপেই শেষ হয় অপরাধী। মুণ্ডচ্ছেদই হল সে দেশে অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা।

এ ছাড়াও রয়েছে আরও ভয়ঙ্কর মৃত্যুদণ্ড। জনসমক্ষে পাথর ছুড়ে মারা হয় অপরাধীকে। পশ্চিম এশিয়া ও আফ্রিকার কিছু দেশে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এ ভাবেই।

এ তো গেল আধুনিক সভ্যতার কথা। প্রাচীন কালে কী ভাবে প্রাণদণ্ড দেওয়া হত? উপায়গুলো জানলে হিম হয়ে যেতে হয়।

পশুদের দিয়ে হত্যা করানো ছিল সে সময়ে প্রাণদণ্ড দেওয়ার অন্যতম জনপ্রিয় উপায়। কখনও হাতি বা ঘোড়ার পায়ের তলায় পিষে, থেঁতলে মারা, কখনও বাঘ, সিংহের মতো হিংস্র পশু মাধ্যমে, কখনও আবার সাপের কামড়ে মারা হত অপরাধীকে।

প্রাচীন গ্রিসে অপরাধীদের শাস্তি দিতে উদ্ভাবন হয় ব্রেজেন বুল পদ্ধতির। পিতলের ষাঁড়ের পেটে ঢুকিয়ে দেওয়া হত সাজা প্রাপ্তকে। ঢাকনা বন্ধ করে সেই ষাঁড়ের নীচে জ্বালিয়ে দেওয়া হত আগুন। সেই উত্তাপে সিদ্ধ হয়ে মারা যেত ওই ব্যক্তি। বাইরে থেকে সে আর্তনাদ শোনাত ষাঁড়ের ডাকের মতো।

দশম শতক থেকে চীনে চালু ছিল প্রাণদণ্ডের খুবই নৃশংস এক পদ্ধতি। এটির নাম লিং চি। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে লোকালয়ে এনে বেঁধে ফেলা হত। এরপর ছুরি দিয়ে ওই ব্যক্তির বিভিন্ন অঙ্গ থেকে আস্তে আস্তে মাংস কেটে নেওয়া হত। যন্ত্রণা ভোগ করে শেষে অপরাধী মারা যেত। উনিশশো পাঁচ সাল থেকে এই সাজাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ভিয়েতনামেও এক সময় এই ভাবে প্রাণদণ্ড দেওয়া হত।

শূলে চড়ানো ছিল আর এক ধরনের প্রাণদণ্ড। একটি সুচালো দণ্ড বা খুঁটিকে দেহের বিভিন্ন ছিদ্রপথে, বিশেষ করে পায়ুপথে প্রবেশ করানো হত। এক সময় সুচালো অংশটি অপরাধীর শরীর ভেদ করে বুক অথবা ঘাড় দিয়ে বের হয়ে যেত।

ফরাসি বিপ্লবের সময় ফ্রান্সে আমদানি হয় গিলোটিন। ফরাসি বিপ্লবের আগে ফ্রান্সের শেষ রাজা ষোড়শ লুই এবং রানি মারি অন্তয়নেতকে মারা হয় গিলোটিনেই।

গোলা বারুদ আবিষ্কারের পর এল মৃত্যুদণ্ডের নতুন এক উপায়। শত্রু, রাজদ্রোহীদের বেঁধে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হত কামানের মুখে। এর পর তোপ দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হত মাথা, পড়ে থাকত নিথর শরীরটা। এছাড়াও ক্রসবিদ্ধ করে মারা, জ্যান্ত কবর দেওয়া কিংবা পুড়িয়ে মারার মতো সাজা তো ছিলই।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad