করোনা আতঙ্কে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। এরই মধ্যো ১৬০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে এই মারণ ভাইরাস। আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজারেরও বেশি। যেহেতু এ ভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক নেই, এ কারণে বিশেষজ্ঞরা এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে প্রতিরোধকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। অনেকেই এর প্রতিষেধক হিসেবে নানা গুজবের ওপর ভরসা করছেন। করোনাভাইরাস ঠেকাতে কখনও খাচ্ছেন তুলসি পাতা, কখনও বা থানকুনি পাতা। কিন্তু কোন কিছুতেই এই ভাইরাস ঠেকানো যাচ্ছে না। সম্প্রতি অনেক রাজ্যে করোনা প্রতিরোধে গোমূত্র খাওয়ার ধূম পড়েছে। এতে ফল হচ্ছে বিপরীত। অনেকেই অসুস্থ হয়ে ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে।
অনেকের দেখাদেখি ঝাড়গ্রাম শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডের জামদা এলাকার শিবু গরাইও করোনা থেকে মুক্তি পেতে পান করেছিলেন গোমূত্র। কিন্তু এতে তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে শেষ পর্যন্ত তার ঠাঁই হয় জেলার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
কাপড় ব্যবসায়ী শিবু জানান, কিছু দিন আগে বন্ধুদের সঙ্গে মায়াপুরে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। ফেরার সময়ে সবার দেখাদেখি সেখান থেকে ১৮০ টাকা দিয়ে গো মূত্রের শিশি কেনেন তিনি।
৪২ বছর বয়সী শিবু জানান, বিক্রেতা জানিয়েছিলেন, এক থেকে দুই ছিপি ওই ‘গো-আরক’ নিয়মিত খেলে শরীরের রক্ত দোষ কেটে যাবে। সেই সঙ্গে করোনাসহ নানা রকম রোগ থেকেও সহজে মুক্তি পাওয়া যাবে। করোনার ভয় কাটাতে তাই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক ছিপি গোমূত্রের আরক খেয়েছিলেন শিবু। এরপরই তার শরীরের নানা অস্বস্তি শুরু হয়। গলা ও বুক জ্বলতে থাকে। অবস্থা এতটাই খারাপ হয় যে শিবুর পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে যান ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে।
শিবু জানান, পরিবারে তিনিই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। করোনা হলে তার পরিবারের কি হবে- এমন আশঙ্কাতেই তিনি বিশ্বাস করে গোমূত্রের আরক খেয়েছিলেন। কিন্তু সেই অন্ধবিশ্বাসই তার কাল হয়েছে। এভাবে গোমূত্র খাওয়া যে ঠিক হয়নি এখন তা বুঝতে পেরেছেন শিবু। করোনা ঠেকাতে আর কাউকে তাই এভাবে গোমূত্র না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
No comments:
Post a Comment