প্রতীকী ছবি
প্রথমে বেড়াতে যাওয়ার নাম করে মাদক খাইয়ে এক অপরিচিতের শয্যাসঙ্গিনী হতে বাধ্য করা। তার পর সেই বিকৃত ঘটনার ভিডিও দেখিয়ে বছরের পর বছর ব্ল্যাকমেলিং করে নিজেদের মেয়েকে যৌন-ক্রিয়ায় বাধ্য করার অভিযোগে বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। নিগৃহীতার অভিযোগে রয়েছে তাঁর বোন, বউদি-সহ অন্তত ১৫ জনের নাম।
এমন নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার বালিগঞ্জে। বালিগঞ্জের পদ্মপুকুরের বাসিন্দা ৩০ বছরের নির্যাতিতা যুবতীর অভিযোগ, বাড়ির সদস্যরাই তাকে দেহ ব্যবসায় নামায়। জোর করে তাকে বাধ্য করে দেহ ব্যবসা করতে। ২০১৫ সাল থেকে এমন চলছে। শহরের একের পর এক হোটেলে তাকে নিয়ে যান তার বাবা ও মা। সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়। তারপর সেই ধর্ষণের ভিডিও দেখিয়ে ভয় দেখানো হয়।
ট্যাংরা থানায় দায়ের তরুণীর অভিযোগে চমকে গিয়েছেন লালবাজারের কর্তারাও। নজিরবিহীন এমন অভিযোগকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই দেখছে পুলিশ।
লালবাজারের এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার বলেন, ‘বিচারকের কাছে অভিযোগকারিণীর গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই তাঁর বাবা-মা’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদেরও খোঁজ চলছে।’
কিছু দিন আগে রিজেন্ট পার্কে এক তরুণীও ভয় দেখিয়ে বছরের পর বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছিলেন তিন কাকাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে। পাটুলিতে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় এক দম্পতিকে।
কিন্তু নিজের মেয়েকে জোর করে বছরের পর বছর যৌন-ক্রিয়ায় বাধ্য করা হচ্ছে-এমন অভিযোগে বিস্মিত তদন্তকারীরা। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে মামলার তদন্তভার থানার হাত থেকে ইতিমধ্যেই তুলে দেওয়া হয়েছে লালবাজারের মানব-পাচার দমন শাখার হাতে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ট্যাংরার বাসিন্দা ওই তরুণীর বিয়ে হয় ২০১২ সালে। তাঁর ছয় বছরের সন্তানও রয়েছে। স্বামী সামান্য বেতনে বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থায় কাজ করেন। তিনি আদতে বিহারের বাসিন্দা হলেও এখন কলকাতায় ভাড়া থাকেন।
তরুণীর অভিযোগ, বেশ কয়েক বছর আগে শপিংয়ে যাওয়ার নাম করে তাঁকে শিয়ালদহের একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে খাবার বা পানীয়ের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে অচেতন করে এক অপরিচিত যুবক দিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করানো হয়।
সেই ঘটনা ভিডিও করে রাখা হয় বলে অভিযোগ তরুণীর। তার পর থেকে লাগাতার সেই ভিডিও দেখিয়েই তরুণীকে যৌন-ক্রিয়ায় বাধ্য করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, শুধু শিয়ালদহের ওই হোটেল নয়, পদ্মপুকুর রোডের একটি বাড়ি এবং বিভিন্ন সময়ে অন্য হোটেলে নিয়ে গিয়েও তরুণীকে কয়েক বার ধর্ষণ করা হয়। পুরোটাই চলছিল তাঁর বাবা-মা-সহ পরিবারের সদস্যদের মদতে।
সূত্র: কালের কণ্ঠ

No comments:
Post a Comment