রাজধানী দিল্লিতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। গত রবিবার শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ মঙ্গলবার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নিয়েছিল।
অথচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হুশ ফিরে চার দিন পর! মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের খাতির-যত্ন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন তিনি।
সোমবার সিএএবিরোধীদের ওপর এর পক্ষের লোকেরা চড়াও হয়ে লুটপাট, ভাঙচুর এমনটি মসজিদে অগ্নিসংযোগকালেও দিল্লি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে।
দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় পুলিশ ও বিজেপি সরকারের এই নীরবতাকে বড় লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াংকা গান্ধী।
তিনি বলেন, ‘কপিল মিশ্রর উসকানিমূলক মন্তব্য লজ্জার। কিন্তু তার চেয়েও বড় লজ্জা কেন্দ্রীয় সরকারের নীরবতা। দিল্লির প্রতিহিংসার দায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পদত্যাগ দাবি করছি আমরা।’
দিল্লির সহিংসতা নিয়ে গত বুধবার দুপুরে কংগ্রেসের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রিয়াংকা গান্ধী। খবর দ্য ওয়ালের
সংবাদ সম্মেলনে প্রিয়াংকা বলেন, ‘দিল্লির মানুষের কাছে আমার আবেদন– আপনারা শান্তি বজায় রাখুন। এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় আসলে আপনাদের জীবনই সংকটের মধ্যে পড়ছে। এই পরিস্থিতির অবসান হোক।’
এ সময় দিল্লির পরিস্থিতি শান্ত নিজ দলের কর্মীদের মাঠে নামতে বলেন প্রিয়াংকা।
কংগ্রেসকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রিয়াংকা বলেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে যা যা করতে হয় জলদি করুন। ভারতে আমরা ধর্ম বিভাজন নিয়ে অশান্তি দেখতে চাই না।’
ওই একই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
তিনি টানা চার দিনের এই সহিসংতাকে ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়ে ক্ষমতাসীন দলকে প্রশ্ন ছুঁড়েন– ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কোথায়? গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি কী করছেন? চলতি সপ্তাহেই বা তিনি কোথায় ছিলেন? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন দেখলেন পরিস্থিতি হাতের বাইরে, তখন আধাসামরিক বাহিনী কেন ডাকলেন না?’
দিল্লির সংঘর্ষের জন্য বিজেপিকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘এই সংঘর্ষের পেছনে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র রয়েছে। দিল্লির ভোটের সময় দেশবাসী সেটি দেখেছে।’
প্রসঙ্গত দেশে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে রাজধানী দিল্লিতে কয়েক দশকের মধ্যে নজিরবিহীন সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। টানা চতুর্থ দিনের সহিংসতায় নিহত বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছিল, যা আজ ৩৪ এ পৌঁছায়। আহত হয়েছে দুই শতাধিক।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ‘হিন্দুও কা হিন্দুস্তান’, ‘জয় শ্রীরাম’- এসব স্লোগান দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও মসজিদে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, সহিংসকারীদের সঙ্গে পুলিশ নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে। দাঙ্গাবাজদের একজন ভিডিওতে এসে বলছে, পুলিশ আমাদের সঙ্গে আছে।
সূত্র: যুগান্তর
সূত্র: যুগান্তর

No comments:
Post a Comment