বসন্তের বার্তা বহনকারী নয়, পলাশের আছে নানান ঔষধি গুণ - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday, 22 February 2020

বসন্তের বার্তা বহনকারী নয়, পলাশের আছে নানান ঔষধি গুণ





জনপ্রিয়তার কারণে বাংলার ঘরে ঘরে পলাশ ফুল খুবই পরিচিত। মাঘ মাসের কয়েকটি দিন হাতে থাকতেই পলাশ ফুটতে শুরু করে। আর তখনই আমরা বুঝতে পারি বসন্ত সমাগত। তবে শুধু সৌন্দর্যেই নয়, গুণেও অনন্য পলাশ। বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে পলাশের নানামাত্রিক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

সাধারণ পেটের অসুখে এক চা-চামচ পলাশ পাতার রস ৭-৮ চা-চামচ জল মিশিয়ে সকাল-বিকেল দু'বার খেলে ভালো হয়ে যায়। সুতাকৃমির উপদ্রবে এক চামচ ছালের রসের সঙ্গে আধা কাপ জল মিশিয়ে অথবা এক গ্রাম বীজগুঁড়া জল সহ প্রতিদিন সকালে খেলে উপদ্রব কমে যাবে।

শুক্র তারল্যে পলাশের গদ ঘিয়ে ভেজে গুঁড়া করে এক গ্রাম সকাল-বিকেল ৩-৪ সপ্তাহ একনাগাড়ে খেলে সমস্যা দূর হবে। তবে কোষ্ঠকাঠিন্যে এক চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খেতে হবে। ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা থাকলে পলাশ পাতার এক চামচ রস ৭-৮ চামচ জল মিশিয়ে সকাল-বিকেল খেলে উপকার পাওয়া যায়। রাতে ঘুমের মধ্যে ঘাম হলে ২ চামচ পলাশ পাতার গরম রস ৭-৮ চামচ জলের সঙ্গে মিশিয়ে সকাল-বিকেল দু'বার করে ৩-৪ দিন খেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

শরীরের ক্লান্তি দূর করে লাবণ্য ফিরিয়ে আনতে তিনটি কচি পাতার রস ৭-৮ চামচ জলে মিশিয়ে খেলে লাবণ্য ফিরে আসবে। বিছার কামড়ে পলাশ বীজ আকন্দের আঠার সঙ্গে বেটে সেখানে লাগালে উপশম হয়।

একশিরা হলে ৫০ গ্রাম পলাশ ফুল অল্প জলে সিদ্ধ করে হালকা গরম অবস্থায় ফুলগুলো শুক্রাশয়ের চারপাশে কয়েক ঘণ্টা রেখে ছাড়িয়ে নিতে হবে। এভাবে ২-৩ দিন পর ২-১ বার করে লাগালে শুক্রাশয়ের কলেবরটি কমে যাবে।

এসব ছাড়া পলাশের আরেকটি প্রধান ব্যবহার লাক্ষা উৎপাদনে। পলাশের বাকল থেকে যে আঠা পাওয়া যায়, তা বেঙ্গল কিনো নামে প্রসিদ্ধ। ফুলের পাপড়ি থেকে হলুদ রং পাওয়া যায়। তুঁতের সঙ্গে এ হলুদ রং মিশালে খাকি রং তৈরি হয়। পলাশ বীজের গুঁড়া কীটপতঙ্গনাশক। বাকলের মোটা আঁশ দড়ি তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়।

পলাশ বা কিংশুক মাঝারি আকারের পত্রমোচি গাছ, সাধারণত ২০ থেকে ৩০ ফুট উঁচু হতে পারে। কাণ্ড বহু শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত, আঁকাবাঁকা ও গাঁটযুক্ত। পাতার রঙ গাঢ় সবুজ, যৌগিক ও তিনটি পত্রিকার সমাহার। শীতে পাতা ও ফুলহীন পলাশ গাছ একেবারেই রিক্ত ও হতশ্রী। বসন্তকালে ফুলকলিরা যখন রক্তিম পাখনা মেলে প্রজাপতির মতো উদ্ভাসিত হয়, তখনই পলাশ সবচেয়ে সুশ্রী।

ফুলের পরপরই কাঁচা সবুজ রঙের পাতায় ভরে ওঠে ডালপালা। পলাশফুল দ্বিধাবিভক্ত। পাঁচটি মুক্ত পাপড়ির একটি সবচেয়ে বড় এবং সামনে প্রসারিত। ঘনবদ্ধ ফুলগুলোর পাপড়ির আগা পাখির ঠোঁটের মতো বাঁকানো। পাপড়ির রঙ গাঢ় কমলা কিংবা হলুদ-সোনালি রঙের। ফল চ্যাপ্টা ও রোমশ।







সূত্র: সমকাল

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad