ভালোবাসা প্রকাশের সাথে হার্ট শেপ যেভাবে জুড়ে গেল - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, 24 February 2020

ভালোবাসা প্রকাশের সাথে হার্ট শেপ যেভাবে জুড়ে গেল






ভালোবাসার কথা মুখে না বলে অনেকেই একটি বিশেষ চিহ্নের মাধ্যমে তা প্রকাশ করেন। আর সেটি হচ্ছে ‘হার্টশেপ’। নিশ্চয় জানেন, ভালোবাসার সঙ্গে হার্টশেপ ওতঃপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। ভাবতে পারেন, হার্টশেপ ছাড়া ভালোবাসা অচল!
ভালোবাসার প্রতীক হিসেবেই যেন আজকাল সবাই এই হার্টশেপটিকে সর্বোপরি ব্যবহার করা শুরু করেছেন। মূলতঃ মানুষের হৃদপিণ্ডকেই ইংরেজিতে হার্ট বলা হয়। আর এই হার্ট বুঝাতে ব্যবহৃত হয় হার্টশেপটি। কিন্তু আদতে কি আমাদের হৃদপিণ্ড দেখতে এমন? না, মোটেও এমন নয়। তাহলে কৌতূহল মনে এই প্রশ্নটি উঠতেই পারে, এই হার্টশেপটি কীভাবে গঠিত হয়েছে! 
এর পেছনে বেশ কয়েকটি ধারণা রয়েছে! তবে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ ধারণাটি হল, মানুষের হৃদপিণ্ডের আকৃতিটির আঁকাবাঁকা যে অংশগুলো আছে, তা বাদ দিয়ে খুব সুন্দর একটি আকৃতি দিতে গেলে এই আকারটিই আসে। এখানে উল্লেখ্য, অনেক গ্রীক এবং রোমান চিন্তাবিদরা ধারণা করতেন যে, মানুষের দেহের কেন্দ্রস্থল হল হৃদয়। আর তাদের এই চিন্তাটি পরবর্তীতে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়ে গিয়েছিল।
এছাড়াও অ্যারিস্টটল মানুষের সঠিক ভাবনা-চিন্তা, আবেগ ও নৈতিকতার উৎস হিসেবে হৃদয়কেই বর্ণনা করেছেন। যদিও ব্যাপারটি বেশ কিছুটা আপেক্ষিক, তবে এটি মিশরীয়দের চিন্তার সঙ্গেও মিলে যায়।
আদতে পুরো বিষয়টি একটি আপেক্ষিক ধারণা এবং কল্পনাপ্রসূত, যা কিনা পরবর্তীতে সবার মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ‘মন’ এর উৎস মস্তিষ্ক হলেও, আমরা মন বলতে হৃদয়কেই বুঝিয়ে থাকি। আর সেই তৎকালীন সময় থেকেই বিভিন্ন চিত্রশিল্পীদের বিভিন্ন চিত্রকলার মধ্যেও এই ধারণাটির প্রভাব দেখা যায়। আর তাই চিত্রশিল্পীরাও ভালোবাসার চিহ্ন বা হৃদয় বলতে এই হার্টশেপটিকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন।
এছাড়া অন্য আরও একটি ধারণা বিদ্যমান, আর সেটি হল এই হার্টশেপটি মূলতঃ শরীরের কোন অঙ্গের প্রতিরূপ নয় বরং সপ্তম শতাব্দীর দিকে সিরেন রাজ্যের রাজধানীতে বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায় সিলিফিয়াম নামক একটি উদ্ভিদের বীজপাতা রূপ। উল্লেখ্য যে, এই উদ্ভিদটি জন্মনিয়ন্ত্রণের একটি রূপ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তৎকালীন সময়েই এই চিহ্নটি যৌনতার প্রতিনিধিত্ব করত এবং পরবর্তীতে এটি ভালোবাসার চিহ্ন হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া শুরু করে।
অপরদিকে এই ভালোবাসার চিহ্নটিকে ঘিরে ক্যাথলিক চার্চেরও একটি বক্তব্য প্রায়শই শোনা যায়। যেখানে বলা হয়েছে ষোলশ শতকের দিকে সেন্ট মার্গারেটের কাছে এই চিহ্নটি দৈববাণী বা স্বপ্নরূপে এসেছিল। সেন্ট মার্গারেটের দিব্যলোকের মধ্যে একটি কাঁটা দিয়ে ঘেরা হৃদয় তার কাছে এসেছিল। এই হৃদয়টি পরবর্তীতে যিশুর পবিত্র হৃদয় এবং তাঁর প্রেমের প্রতিনিধিত্ব হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। যদিও এই আকৃতিটি এই ঘটনার অনেক আগে থেকে প্রচলিত ছিল। তবে ধারণা করা হয় ক্যাথলিকরা এই চিহ্নের পরিচিতি এবং প্রসারের ক্ষেত্রে বেশ ভালো ভূমিকা পালন করেছিল।
তবে এর উৎসটিকে যদি একপাশে সরিয়ে রেখে একটু দেখি, তাহলে দেখা যাবে যখনই এই চিহ্নের উৎপত্তি হোক না কেন, সতেরোশ সালের দিকে ইংল্যান্ডে ভালোবাসা বা প্রেম-ভাব বিনিময়ের প্রথা হিসেবে এই চিহ্নটিকে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ভিক্টোরিয়ান যুগে ভালোবাসা দিবস অর্থাৎ ভ্যালেন্টাইনের সঙ্গে শুধুমাত্র লাল রঙের এই হৃদয় আকৃতিটিই যে জড়িত আছে তা নয় বরং রিবন ফিতা, ধনুক সহ অন্যান্য আরও বেশকিছু চিহ্ন যোগ হয়েছিল। ভালোবাসার চিহ্ন বলতে এই হার্টশেপকেই আমরা বুঝি।







সূত্র: ডিএনকে

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad