বর্ষ শেষের রাতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, 2 January 2020

বর্ষ শেষের রাতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু




গভীর রাতে একটি মেয়ের কান্নার শব্দ শুনে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন বহুতল ভবনের বাসিন্দারা। কিন্তু পুলিশ এসে কাউকে খুঁজে পায়নি। পরে সেই বহুতল ভবনের দুটি ভবনের মাঝের ফাঁকা জায়গা থেকে উদ্ধার হয় এক তরুণীর রক্তমাখা দেহ।

জানা গেছে, বর্ষবরণের মাঝেই এ ঘটনা ঘটেছে। যাদবপুর থানা এলাকার পোদ্দারনগরের ঘটনা এটা। মৃতার নাম সুইটি সূত্রধর (২৯)।

পুলিশ জানিয়েছে, বহুতল ভবনের ছাদ থেকে পড়েই মৃত্যু হয়েছে সুইটির। তবে সেটি দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা নাকি কেউ ঠেলে ফেলে দিয়েছে, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। আপাতত সুইটির স্বামী কুন্তল আচার্যকে জেরা করছে পুলিশ। তাতে কিছু অসঙ্গতিও মিলেছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, যাদবপুর পোদ্দারনগর এলাকার ২/২৪ প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি বহুতল ভবনের চারতলার ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন কুন্তল এবং তাঁর স্ত্রী সুইটি। পুরুলিয়ার বাসিন্দা কুন্তলের পারিবারিক হোটেল ব্যবসা রয়েছে। সুইটি একটি কল সেন্টারে কাজ করতেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে কুন্তলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল আসানসোলের বাসিন্দা সুইটির। পোদ্দারনগরের এই ফ্ল্যাটে তাঁরা আসেন চার মাস আগে।

পুলিশ বরাত দিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে ওই বহুতল ভবনের পুরোনো বাসিন্দারা মিলে ছাদে একটি ছোট পার্টির আয়োজন করেছিলেন। সেখানেই গভীর রাত পর্যন্ত মদ খাওয়া, হইহুল্লোড় চলছিল। তবে নতুন আসায় ওই পার্টিতে কুন্তল এবং সুইটি যোগ দেননি। পরে ছাদে গিয়ে নিজেদের দিকের অংশে মদ নিয়ে বসেন তাঁরা।

বাসিন্দারা পুলিশকে জানিয়েছেন, একটা সময়ের পরে তাঁরা সকলে একে একে নেমে এলেও কুন্তল আর সুইটি সেখানেই ছিলেন। যদিও পুলিশের কাছে কুন্তলের দাবি, শরীর খারাপ লাগায় আবাসিকেরা নেমে আসার পরপর তিনিও নেমে আসেন। এদিকে, গভীর রাতে একটি মেয়ের কান্নার আওয়াজ পেয়ে ফের পুরোনো বাসিন্দাদের কয়েকজন ছাদে যান। কিন্তু সেখানে কাউকে দেখেননি তাঁরা। এর পরেই আড়াইটে নাগাদ যাদবপুর থানায় ফোন করে পুলিশকে খবর দেন এক বাসিন্দা। পুলিশ এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেও কাউকে পায়নি।

বুধবার সকালে তরুণীর স্বামী কুন্তল প্রতিবেশীদের জানান, তিনি স্ত্রীকে খুঁজে পাচ্ছেন না। ফের যাদবপুর থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ গিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। ছাদে গিয়ে দেখা যায়, দুজোড়া জুতো পড়ে রয়েছে সেখানে। পড়ে আছে কাচের গ্লাসও। তার পাশেই রয়েছে ছোট্ট চৌবাচ্চার মতো ফাঁকা জায়গা।

ওই ফাঁকা জায়গায় ঢোকার দরজার তালা খুলে পুলিশ দেখে, সেখানে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন সুইটি। তাঁকে উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় লালবাজারের হোমিসাইড বিভাগের কর্মকর্তারা এবং ফরেন্সিক দল। তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করেন। পরে ফরেন্সিকের ডিসি ওয়াসিম রাজা জানান, উপর থেকে পড়ে যাওয়ার যে চিহ্নগুলি ঘটনাস্থলে মিলেছে, তাতে এটি দুর্ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। তবে মৃত্যুর আগে ওই তরুণীর দেহে কোনও আঘাত হয়েছিল কিনা, সেটা অ্যান্টি-মর্টেম রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না।সুইটির বাবা-মাকে খবর দেওয়া হয়েছে।






সূত্র: কালের কণ্ঠ

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad