পথভোলা মানসিক ভারসাম্যহীনদের ঘরে ফিরিয়ে নজির গড়লেন মালদার একদল যুবক - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, 22 January 2020

পথভোলা মানসিক ভারসাম্যহীনদের ঘরে ফিরিয়ে নজির গড়লেন মালদার একদল যুবক




নিজস্ব সংবাদদাতাঃ পথ চলতে অনেকেই বাড়ীর পথ ভুলে যায়। আবার অনেকেই মানসিকভাবে ভারসাম্য হারিয়ে বাড়ীর পথ ভুলে যায়। ফলে এই রাজ্য সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে  পথ চলতে এমন মানসিক ভারসাম্যহীনদের পথে দেখা যায়। মালদা জেলাও ব্যাতীক্রম নয়। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এমন মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে রয়েছে। পথ চলতিরা পথে দেখেও কোন ভ্রুক্ষেপ  করেন না। আবার কিছু কিছু পথ চলতিরা অতি উৎসাহিত হয়ে সন্দেহবশে এই সব মানসিক ভারসাম্যহীনদের গণপিটুনীও দেয়। মালদা জেলার আনাচে কানাচে পথের ধারে দাহার সিং, কারমা এককা, গায়েত্রী পাল ,বিকি যাবদ, রামরতি দেবী। অখিলেশ কুমার ঝা, সীমা বিশ্বাস, অমিত গোস্বামী, আরমান খান, সুশান্ত সিং, তুলসী কুমারদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গিয়েছিল। কেউ তাদের খোঁজ নেয় নি। এমনই সব  ২৫জন  মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরেদের পরিচয় উদ্ধার করে তাদের পরিবারে সদস্যদের  সাথে যোগাযোগ করে ঘরে ফিরিয়ে দিয়েছেন একদল দামাল যুবক, যারা প্রত্যেকেই এখনও ছাত্র।

পথ চলতে এমন সব মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরেদের উদ্ধার করে নিজের ঘরে রেখে  পরিসেবা  দিয়ে সুস্থ করে পরিবারের সদস্যদের হাতে ফিরিয়ে দিচ্ছে। মালদা জেলার হবিবপুর থানা এলাকার  ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রাম  কলাইবাড়ি তালুকদার পাড়ার ২৩জন যুবক এমন কাজের নেশায় মেতে উঠেছেন। কৃষিজীবি প্রধান এলাকার পরিবারের যুবকদের ইচ্ছাকেই মর্যাদা দিয়েছেন দিন আনা খেটে খাওয়া তাদের পরিবার। তাদের এমন উদ্যোগকে সম্মান জানিয়েছে পুলিশ  প্রশাসনও। কোন মানসিক ভারসাম্যহীনের বাড়ী বিহারে, আবার  কারও বাড়ি ঝাড়খন্ডে। কেউবা ছত্তিশগড়। আবার কেউ রাজস্থানের রয়েছে। তাদের প্রত্যেকেই সুষ্ঠ করে নিজ ঘরে ফেরৎ পাঠিয়েছে এই গ্রামের যুবকেরা। কি করে এমন অবাস্তবকে সম্ভব করেছো তারা প্রশ্ন করতেই তাদের সাফ জবাব স্যোশাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে এমন কাজ করছেন। আগামীতেও করবেন।

মানসিক  ভারসাম্যহীনদের শুশ্রুষা করে তাদের ঠিকানা জেনে  গুগুলে তাদের ছবি দিয়ে সংলিষ্ট এলাকার তথ্য পোষ্ট করে এই অসাধ্য সাধন করছে তারা। এখন পর্যন্ত ২৬ জন মানসিক ভারসাম্যহীনদের ঘরে ফেরৎ পাঠিয়েছেন  তারা। এই ২৩জন দামাল যুবকদের কর্মকর্তা তারাশঙ্কর রায় জানান, এই মানসিক ভারসাম্যহীনদেরও পরিবার রয়েছে। নানা সমস্যার কারণে তারা  নিজ ঘরে ফেরার পথ হারিয়েছে। সামান্য সেবা শুশ্রুষা তাদের স্বাভাবিক পথে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। সেই প্রচেষ্ঠা থেকে আজ তা সাফল্য পেয়েছে। নিজেদের পকেট মানি বাঁচিয়ে এই মানসিক ভারসাম্যহীনদের জীবনের ছন্দে ফেরানোর জন্য খরচ বহন করছে তারা। তারাশঙ্করের(২২)সাথে যোগ দিয়েছে খোকন লোহার(১৮), দীপংকর মহলদার(১৭), গোপাল দাস(১৭),রাজীব দাস(১৬),রা। তারাওএমন কাজে খুশি। তারাশঙ্করদের কাজে খুশি পুলিশ প্রশাসনও।

হবিবপুর থানার  এসআই অমর সাহা বলেন, এমন কাজে সকলের এগিয়ে আসা উচিৎ। প্রায় ২০০০কিলোমিটার দূর থেকে দাহার সিংকে ছত্তিশগড়ের নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে এসে সেই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য ইমরান আলীও জানান স্বপ্নেও ভাবেন নি, জীবিত অবস্থায় দাহার সিংকে পাওয়া যাবে। পেয়ে খুব খুশি হচ্ছে। তারাশঙ্কর রায়ের এমন কাজে বেশ খুশি তাঁর বাবা উমাশঙ্কর রায়। তিনি বলেন রাজনীতির বাইরেও জনসেবা করা যায়। তাই করছে তাঁর ছেলে। ছেলের কাজে বিরক্তি নেই। গ্রামের ছোট ছেলেরা যা করছে তাতে তিনি খুশি। মালদা জেলার  ভারত বাংলাদেশ  সীমান্তবর্তী  প্রত্যন্ত গ্রামের যুবকদের এমন কর্মকান্ড সত্যিই প্রশংসাযোগ্য।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad