কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বাংলা ভাষার অন্যতম শক্তিশালী কবি সুবোধ সরকারকে বিশেষ সংবর্ধনা প্রদান - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, 22 January 2020

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বাংলা ভাষার অন্যতম শক্তিশালী কবি সুবোধ সরকারকে বিশেষ সংবর্ধনা প্রদান




নিজস্ব সংবাদদাতাঃ  কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আজ বাংলা ভাষার অন্যতম শক্তিশালি কবি সুবোধ সরকারকে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব কবি সুবোধ সরকারকে বিশেষ সংবর্ধনা দিয়ে সম্মানিত করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য গৌতম পাল।

বুধবার ২২ জানুয়ারি, ২০২০ আড়াইটের সময় কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যাসাগর সভাগৃহে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কথা বলবেন এবং এনআরসি নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠও করবেন কবি সুবোধ সরকার।

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, আধিকারিক, গবেষক, অধ্যাপক, কর্মচারীরা উপস্থিত হয়ে কবিকে কুর্নিশ জানাবেন।

বাংলা ভাষার অন্যতম শক্তিশালি কবি সুবোধ সরকার।

কবি সুবোধ সরকারের জন্ম ১৯৫৮ সালের ২৮ অক্টোবর কৃষ্ণনগরে৷ বাবা: সত্যেন্দ্রনাথ সরকার, মা: রেখা সরকার। বাবার মৃত্যু হয়েছিল যখন তিনি ক্লাস এইটের ছাত্র। প্রথম পড়াশোনা টিন উড়ে যাওয়া প্রাইমারি স্কুলে। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ. করেছেন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি। কলকাতার সিটি কলেজে ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক। সমালোচকরা বলেন তার কবিতায় আছে গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও মানবিকতা, যা কখনও শ্লেষাত্মক, কখনও সরাসরি ও সংবেদনশীল। তিনি বর্তমানে ভাষানগর পত্রিকার সম্পাদক ও পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমি'র সভাপতি।

কবিতা পড়তে গিয়েছেন আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া, কানাডা, চেক রিপাবলিক, গ্রিস, তাইওয়ান। তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ঋক্ষ মেষ কথা (১৯৮৩), চন্দ্রদোষ ওষুধে সারে না (১৯৯১), ধন্যবাদ মরীচিকা সেন (১৯৯৭), জেরুজালেম থেকে মেদিনীপুর (২০০১) ইত্যাদি।
গত বছর বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে ‘তিন মিনিট বাইশ সেকেন্ডে বিপ্লব আসে না’।


‘দ্বৈপায়ন হ্রদের ধারে’ বইয়ের জন্য পেয়েছেন সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার। সম্বলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গঙ্গাধর মেহের জাতীয় কবিতা পুরস্কার পেয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে দিয়েছে বঙ্গভূষণ। সাহিত্য আকাদেমির ঐতিহ্যবান সাহিত্য পত্রিকা ‘ইন্ডিয়ান লিটরেচার’ সম্পাদনা করেছেন সুবোধ সরকার। ডি লিট পেয়েছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

কবি সুবোধ সরকার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর স্মৃতির কথা জানিয়েছেন "আমার জীবনের প্রথম পঁচিশ বছর কেটেছে কৃষ্ণনগরের পাড়ায় পাড়ায়, রানাঘাটের রাস্তায় রাস্তায়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে। নতুন ঝকঝকে একটা  বিশ্বমানের লাইব্রেরি পেয়েছিলাম। এখানেই আমি ভাস্কো পপা, নিকানোর পাররা, মিরোস্লাভ হলুব, নিকোলাস গিয়েন, অ্যালেন গিনসবার্গের কবিতা প্রথম পড়ি এবং মাথা ঘুরে যায়। সেই যে ঘুরে যায় আর থামেনি। নিউ ইয়র্কে অ্যালেন গিনসবার্গের ঘরে বসে মনে হয়েছিল 'হাউল'-এর প্রথম বরোয়ার ছিলাম আমি।

আমি গ্রিসের পারোস  দ্বীপে আন্তর্জাতিক লেখক শিবিরে বসে বলেছি কল্যাণীর কথা , তেমনি আমেরিকার  বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিতে নিতে বার বার বলেছি কেমন ছিল আমার কল্যাণী  বিশ্ববিদ্যালয়। পৃথিবীর এত বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলাম কিন্তু কল্যাণী আমাকে কখনও ডাকেনি। এই প্রথম ডাকল। যেন মায়ের ডাক পেলাম। কতদিন বাদে মায়ের আঁচল পেতে বসব। আনন্দে চোখে জল আসছে। আমার কাছে হার্ভার্ড নয় কলম্বিয়া নয় তুরিন নয়, অক্সফোর্ড নয়,  আমার কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ  বিশ্ববিদ্যালয় হল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। রিফিউজি পরিবারের ছেলেটাকে সেদিন স্থান দিয়েছিল ইংরেজী সাহিত্যের ক্লাসরুমে। কল্যাণী, তুমি কোল না দিলে আমি ধুলোয় পড়ে থাকতাম। কাল দেখা হবে।"

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad