দিনমজুরদের থেকে ক্ষয়ক্ষতি আদায় করছে যোগী প্রশাসন - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, 2 January 2020

দিনমজুরদের থেকে ক্ষয়ক্ষতি আদায় করছে যোগী প্রশাসন




উত্তর প্রদেশে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনবিরোধী বিক্ষোভের অগ্নিশিখা নিভতে না নিভতেই পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সরকারি সম্পত্তি নষ্টের ক্ষতিপূরণ আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন। ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব তৈরি করে উঠতে না পারলেও, সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগে ২৬ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায় ফিরোজাবাদ জেলা প্রশাসন। নোটিশ পাওয়া কয়েকজনের পরিবার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছে, তারা প্রত্যেকেই দিনমজুরের কাজ করে। এদের বেশিরভাগই এখন জেলে রয়েছেন।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে সবথেকে রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ ও ভাঙচুর হয়েছে উত্তর প্রদেশে। সংঘটিত বিক্ষোভের এক পর্যায়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ হুঁশিয়ার করেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, যারা সরকারি সম্পদ ভাঙচুর কিংবা আগুন ধরিয়েছে, হামলাকারীদের সম্পত্তি নিলাম করেই সেই অর্থ আদায় করা হবে। এই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিশোধ নেব।’ সেই মোতাবেক সম্পত্তি ধ্বংসের অভিযোগে রাজ্যের মুসলিম ব্যক্তিদের নোটিশ পাঠানো শুরু হয়।

নোটিশ পাওয়া ব্যক্তিদের একজন  ২০ বছর বয়সী আদিল খান। পেশায় কাঠমিস্ত্রী ও ছয় সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় আদিল তার বাবা সায়েদ খানের সঙ্গেই কাজ করতেন। ঘটনায় বিহ্বল সায়েদ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “ও যখন নামাজ শেষ করে আসছিল, তখনও আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলছিল। হঠাৎ করে ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। কিছু সময় পরে আমরা জানতে পারি যে ওকে জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আদিল আমাকে জানায় যে পুলিশ খুব মারধরও করেছে ওকে। আমাকে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিপূরণের নোটিশ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আমার ছেলে তো জড়িত নয়। ও নিজের কাজ নিয়েই ব্যস্ত ছিল।”

উল্লেখ্য, ফিরোজাবাদ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের জারি করা সমস্ত নোটিশেই উল্লেখ করা হয়েছে  “… এফআইআর থেকে আমি নিশ্চিত যে আপনি প্রাথমিক (সরকারী এবং ব্যক্তিগত সম্পদের ক্ষতির) দায়ী। এক সপ্তাহের মধ্যে এই আদালতে উপস্থিত হয়ে এই ক্ষতি পুনরুদ্ধারের জন্য কেন আপনাকে আদেশ জারি করা হবে না তা জানিয়ে দিতে হবে।” যদিও বিজ্ঞপ্তিটিতে কোনও নির্দিষ্ট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের কথা উল্লেখ করা হয়নি। শুধু উল্লেখ করা হয়েছে যে ২০ ডিসেম্বর পিডাব্লুডি, পৌর কর্পোরেশন, পুলিশ, অন্যান্য সরকারি বিভাগ এবং সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

এদিকে আদিলের মতোই একই ঘটনার শিকার আমির। ছয় ভাই-বোনদের মধ্যে চতুর্থ আমির রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। আয় বলতে প্রতিদিন ১৫০-২০০ টাকা। আমিরের দাদা আসিফ বলেন, “আমার ভাই আসিফ জিনিসপত্র নিয়ে ফিরে আসার সময় প্রতিবাদ মিছিলের মধ্যে আটকা পড়ে যায়। এরপর ও একটি দোকানে ঢোকে আশ্রয় নিতে। সেখানে অন্য সম্প্রদায়ের লোকেরা ওকে মারধর করে। এমনকী ওর ফোন ও সঙ্গে থাকা ২৬৭০ টাকাও ছিনিয়ে নেয়। ওই যুবকরা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। প্রতিবাদের সাথে তার কোনও যোগসূত্র নেই।”

নাদিমের এলাকা থেকেই গ্রেফতার করা হয় ২৩ বছর বয়সি হাফিজকে। পেশায় মসজিদের গৃহশিক্ষক হাফিজকে মুক্তি দেওয়ার কথা হলেও এখনও তাকে জেলবন্দি করেই রাখা হয়েছে,  অভিযোগ তার মা রেশমার। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদিত্য প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, “আমাদের একটি অনুমান আছে যে ২০-২৫ লক্ষ টাকার সরকারী ও বেসরকারী সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। চূড়ান্ত পরিসংখ্যান গণনা করা হবে। আমরা এফআইআর-এর ভিত্তিতে নোটিশ পাঠিয়েছি। ”








সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad