মানব দেহেই লুকিয়ে রয়েছে ক্যান্সারের প্রতিষেধক! - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, 22 January 2020

মানব দেহেই লুকিয়ে রয়েছে ক্যান্সারের প্রতিষেধক!





বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার নতুন আবিষ্কৃত একটা অংশ সব ধরনের ক্যানসারের চিকিৎসা করতে পারে।

কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির একটি গবেষক দল একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে যা প্রোস্টেট, স্তন, ফুসফুস এবং অন্যান্য ক্যানসার সারিয়ে তুলতে পারে।

তাদের এই গবেষণা নেচার ইমিউনোলজি ম্যাগাজিনে প্রকাশ করা হয়েছে।

গবেষকরা বলছেন যদিও এটা এখনও কোন রোগীর শরীরে পরীক্ষা করা হয় নি কিন্তু সফল হওয়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই কাজ এখনও প্রাথমিক ধাপে রয়েছে কিন্তু এটা খুব উত্তেজনাকর।

গবেষকরা কী খুঁজে পেয়েছেন?
আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আমাদের শরীরে রোগ সংক্রমণের বিরুদ্ধে স্বাভাবিকভাবে কাজ করে।

এটা ক্যান্সারের কোষ বা সেল কেও আক্রমণ করে।

বিজ্ঞানীরা খুঁজেছে ‘অস্বাভাবিক’ এবং পূর্বে অনাবিষ্কৃত পন্থা যেটা দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা স্বাভাবিকভাবে টিউমারের উপর আক্রমণ করে।

তারা বলছে, মানুষের রক্তে আছে একটি টি-সেল। এটা একটা রোগ প্রতিরোধক সেল বা কোষ যা দিয়ে শরীর পরীক্ষা করে পরিমাপ করতে পারে যে কোন ঝুঁকি আছে কিনা যেটা দূর করা দরকার।

পার্থক্য হল এই কোষটি বৃহৎ আকারে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে।

গবেষক অধ্যাপক অ্যানড্রু সিওয়েল বিবিসিকে বলেছেন ‘এটাতে সব রোগীকে চিকিৎসা করার একটা সুযোগ রয়েছে’। তিনি আরো বলেন ‘আগে কেউ বিশ্বাস করেনি এটা সম্ভব হতে পারে। একটা কোষ দিয়ে সব ক্যান্সারের চিকিৎসার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে। যেটাকে ইংরেজিতে বলে ‘ওয়ান সাইজ ফিটস্‌ অল’ (one-size-fits-all)।

কীভাবে এটা কাজ করে?
টি-সেলের ‘রিসেপ্টর’ আছে। রিসেপ্টর হল একটা সেল বা কোষ যেটা আলো, তাপ বা অন্যান্য উদ্দীপক বস্তুর প্রতিক্রিয়া পাঠাতে পারে।

এর ফলে তারা রাসায়নিকের মাত্রাটা দেখতে পারে।

কার্ডিফের এই গবেষক দলটি রক্তের এই টি-সেল এবং তার রিসেপ্টর আবিষ্কার করেছে যেটা দিয়ে পরীক্ষাগারে বৃহৎ পরিসরে ক্যান্সারের সেল আবিষ্কার করা এবং ধ্বংস করা যেতে পারে।

এসব ক্যান্সারের মধ্যে রয়েছে ফুসফুস, ত্বক, রক্ত, কোলন, স্তন, হাড়, প্রোস্টেট, ওভারি, কিডনি এবং জরায়ুর ক্যান্সার।

জটিল হলেও এটা স্বাভাবিক টিস্যুকে প্রভাবিত করবেনা।

তবে আসলেই এটা ঠিক কীভাবে কাজ করবে সেটা এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়।

এই নির্দিষ্ট টি-সেলের রেসেপ্টর এমআরওয়ান নামে একটা অণুর সাথে মিথস্ক্রিয়া করানো হয়েছে, যেটা মানুষের শরীরের প্রত্যেক সেলের উপরিভাগে থাকে।

রিসার্চ ফেলো গ্যারি ডলটন বিবিসিকে বলেছেন ‘আমরাই প্রথম যারা বর্ণনা করছি একটি টি-সেল যেটা ক্যান্সার সেলের মধ্যে এমআরওয়ান খুঁজে পায়। এটা এর আগে করা হয়নি। এটা এবারই প্রথম’।

এটা কেন তাৎপর্যপূর্ণ?
টি-সেল থেরাপি আগে থেকেই রয়েছে। তবে ক্যান্সার প্রতিরোধক থেরাপির উন্নয়ন এই ক্ষেত্রে অন্যতম উত্তেজনাকর অগ্রগতি।

অতি বিখ্যাত উদাহরণ হল সিএআর-টি। এটা হল একটা জীবিত ওষুধ যেটা রোগির টি-সেল খুঁজে বের করবে এবং ধ্বংস করবে।

সিএআর-টি’র একটা নাটকীয় ফলাফল হতে পারে, যার ফলে যে রোগী মৃত্যুর দিকে ধাবিত হতে পারতো তাকে আগেই পুরোপুরি সারিয়ে তুলবে।

যাই হোক, এর লক্ষ্য ছিল খুবই নির্দিষ্ট এবং যেটা সীমিত সংখ্যার ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কাজে লাগে।

অন্যদিকে টি-সেলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার একটা পরিষ্কার লক্ষ্য আছে যাতে ক্যান্সার ধরতে পারে এবং এটা ব্লাড ক্যান্সার বা লিউকেমিয়াতে যতটা সফলতা পেয়েছে টিউমার থেকে যে ক্যান্সার হয় সেটাতে সফলতা আনতে ততটাই হিমশিম খাচ্ছে।

গবেষকরা বলছেন তাদের টি-সেল রিসেপ্টর সার্বজনীন ক্যান্সারের চিকিৎসার প্রতিনিধিত্ব করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?
সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব বাসিলের দুইজন গবেষক লুসিয়া মোরি এবং জিনারো ডি লিভেরো বলছেন এই গবেষণার ‘বড় সম্ভাবনা’ আছে। কিন্তু এটা এতটাই প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে যে এটা সব ক্যান্সারে কাজ করবে সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না।

দ্যা ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টার এর অধ্যাপক ড্যানিয়েল ডেভিস বলছেন ‘এই মুহূর্তে এটা খুব প্রাথমিক গবেষণা এবং রোগিদের জন্য সঠিক ওষুধ তৈরির কাছাকাছি পর্যায়ে নেই।’








সূত্র: কালের কণ্ঠ

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad