পোকার হানায় ধান চাষীদের মাথায় হাত - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday, 1 December 2019

পোকার হানায় ধান চাষীদের মাথায় হাত

IMG_20191201_131142




নিজস্ব সংবাদদাতাঃ আবহাওয়া ভালো থাকায় অতিরিক্ত ফলন হয়েছে দেখে খুশিতে ছিলেন চাষীরা। আমন ধান পাক ধরার পর তা কেটে রেখেছেন জমিতে। শুকানোর পর তা তুলে নিয়ে গিয়ে মাড়াই করবেন। কিন্তু শেষ লগ্নে শীষকাটা ল্যাদা পোকার হানায় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের আমন চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। উইপোকার হানায় ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কেননা, যেভাবে পোকা শিষ‌ কেটে ফেলেছে, তাতে ধান জমিতে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। তা আর আটকানো সম্ভব নয়। কিভাবে পোকার হানা থেকে রেহাই মিলবে, তা জানতে অনেকেই কৃষি দপ্তরেরও‌ দ্বারস্থ হচ্ছেন অনেকে। পোকার হানায় উদ্বিগ্ন কৃষি দফতরও। এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রুত মাঠ থেকে ধান তুলে নেওয়ার আবেদন করেছেন কৃষি দফতরের কর্তারা।

কৃষি কর্তারা বলেন,"এবার আমনের ফলন ভালো হয়েছে। তবে শেষলগ্নে রোগ পোকার হানায় নষ্ট হচ্ছে। চাষিরা যাতে ধান দ্রুত মাঠ থেকে তুলে নিয়ে যান তা বলা হচ্ছে।"
হরিশ্চন্দ্রপুরের এক কৃষক শেখ রাজেশ বলেন,"ধান না শুকোলে তুলবো কিভাবে! কিন্তু যেভাবে পোকা শিষ কাটছে, তাতে তো বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। কাটা শিষ তো জমি থেকে তোলা সম্ভব নয়। শেষ সময়ে এমন সমস্যায় আমাদের ঘুম উড়ে গিয়েছে।"

হরিশ্চন্দ্রপুরের ভবানীপুর গ্রামের কৃষক মহ: নুরুদ্দিন বলেন, "আমার চার বিঘা জমির ধান পুরোটাই ল্যাদা পোকার উপদ্রবের কারণে নষ্ট হয়েছে, যা ছিল আমার সারা বছরের খোরাকি। পোকার কারণে ফসল বিনষ্ট হওয়ায় কীভাবে সংসার চলবে সে চিন্তাতেই এখন ঘুম নাই।

একই গ্রামের কৃষক সামসুল হক বলেন, আমার দুই বিঘা জমির পুরো ধানই পোকার কারণে মাঠেই নষ্ট হয়ে গেছে।

পার্শ্ববর্তী মাঠের কৃষক নিমাই দাস বলেন, আমার এক একর আমন ধানের ৭৫ শতাংশই পোকার উপদ্রবে বিনষ্ট হয়েছে। ফলে দিশেহারা হয়ে মাথায় হাত এখন প্রায় সব আমন চাষিদেরই।

এছাড়াও তাদের অভিযোগ, কৃষি বিভাগের কাজ ছিল কোনও এলাকায় ফসলে পোকার উপদ্রব হলে গোটা জেলায় সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সেরকম কোন ব্যবস্থা নেননি। ফলে পোকার উপদ্রব এক এলাকা থেকে ছড়াতে ছড়াতে এটি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে সহজেই।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, এবার চাচোল  মহাকুমার ছটি ব্লকে ৬০ হাজার হেক্টরে আমন ধানের চাষ হয়েছে, যার মধ্যে ৯০ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ধান কাটার পর জমিতেই সারসার করে তা ফেলে রাখা হয়। এবার ধান কাটা শুরু হতেই প্রবল কুয়াশা থাকায় ধান শুকোচ্ছে না। পাশাপাশি শ্রমিকেরও অভাব রয়েছে। ফলে ধান মাঠেই পড়ে রয়েছে। কেটে রাখা গাছ থেকে ল্যাদা পোকা ধানের শিষ কেটে ফেলেছে। আবহাওয়ার ওঠানামার জন্যই ওই পোকার হানা বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। কৃষি দফতর জানিয়েছেন, এর কোনও ওষুধ নেই। ফলে কাটা ফসল দ্রুত তুলে নিতে হবে। পরবর্তী চাষের আগে জমিতে গভীর চাষ দিতে হবে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad