নিজস্ব সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার :-- ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ার জেলার আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ব্লকের মাঝের ডাবরি পঞ্চায়েতের কালকূট ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করাকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল এলাকা।
এদিন সকালে ডাম্পিং গ্রাউন্ড- এর কাজে বাধা দেন এলাকার বাসিন্দারা। এরপরই ধাপে ধাপে পুলিশের সাথে শুরু হয় পাথর বৃষ্টি। একদিকে গ্রামবাসীদের পাথর বৃষ্টি, অন্যদিকে পুলিশের টিয়ার গ্যাস ফাটানোয় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকা। প্রথম পর্যায়ে শামুকতলা থানার ওসির নেতৃত্বে গ্রামবাসীদের বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও তারা পুলিশকে পাত্তা দেয়নি। ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ না থাকায় পিছু হটে যায় শামুকতলা থানার পুলিশ।
পরবর্তী সময়ে জেলার কন্ট্রোল রুমে বিষয়টি নিয়ে জানালে কালচিনি থানা এবং আলিপুরদুয়ার থানা থেকে প্রায় দেড় শতাধিক পুলিশসহ কমব্যাট ফোর্স চলে আসে। কমব্যাট ফোর্স-এর দাপটে পিছু হটে যায় গ্রামবাসীরা। এরপর তারা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। পুলিশ সেখানে গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশকে পিছপা হতে হয়। এরপরেই চলে লাঠিচার্জ, গ্রেপ্তার করা হয় কম করে ১২ জন আন্দোলনকারীকে। এদিকে শামুকতলা থানার ওসি বিরাজ মুখার্জী সহ, এ এস আই অভিরাম বর্মন এবং এক কনস্টেবল এবং এক মহিলা কনস্টেবল গুরুতর জখম হন। ডাম্পিং গ্রাউন্ড-এর জন্য তৈরি ঠিকাদারের ক্যাম্প ঘুরিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। ভাঙচুর হয় একটি আর্থ মুভার, একটি ট্রাক্টর, একটি বাইক সহ ক্যাম্পের যাবতীয় জিনিসপত্র। আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পে থাকা পাঁচজন পুলিশকর্মীর টাকা-পয়সা, বিছানাপত্র, এটিএম কার্ড সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে যান। ঘটনাস্থলে এখনও প্রায় ২০০ পুলিশ রয়েছে। এরমধ্যে আলিপুরদুয়ার-এর অ্যাডিশনাল এসপি সহ অন্যান্য আধিকারিকরা রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাঝেরডাবরী গ্রাম পঞ্চায়েতের কালকূট ব্রিজ সংলগ্ন চা বাগানে প্রায় ১৩ একর জমির উপর ডাম্পিং গ্রাউন্ড তথা সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট- এর জায়গা নেওয়া হয়েছে। আর এটা নিয়েই মাঝেরডাবরী এলাকার বেশিরভাগ লোকের আপত্তি। যদিও ৩ দিন আগে মহকুমা শাসকের দপ্তরে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট- এর বিষয় নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল, কিন্তু মহকুমা শাসকের আলোচনার পরেও আজ এমন ঘটনা ঘটবে তা বোঝা যায়নি। বেসরকারি সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০০ টি আর এস গ্যাস ফাটিয়েছে পুলিশ। যদিও এখনও সরকারিভাবে কোনও কিছু জানানো হয়নি। মাঝেরডাবরী গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা তথা আলিপুরদুয়ার জেলার যুব তৃনমূলের সহ-সভাপতি মানস রায় বলেন, বিজেপির নির্দেশে মাঝের ডাবরী গ্রাম পঞ্চায়েতের বাইরে থেকে কিছু লোক এসে আজকের এই গন্ডগোল পাকিয়েছে। ঘটনার সরকারি তদন্ত হোক। যদিও এ বিষয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতা আমির হোসেন ওরফে বেদনাকে পাওয়া যায়নি।
No comments:
Post a Comment