রাজনৈতিক বিষয়ে মন্তব্য করায় সেনাপ্রধানকে চিদাম্বরমের জবাব

নয়া নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করায় সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা পি চিদাম্বরম। সাবেক এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে সেনা কর্মকর্তাদেরও ব্যবহার করছে বিজেপি সরকার। এটি দেশের জন্য লজ্জার। এ খবর দিয়েছে 'দ্য হিন্দু'।

খবরে বলা হয়, উত্তর প্রদেশে আইনের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে সহিংসতা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন রাওয়াত। দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘বহু কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা দেখছি যে, সহিংসতা ও অগ্নিকান্ডে মানুষকে নেতৃত্ব দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। একে নেতৃত্ব বলে না।’ তিনি বলেন, প্রকৃত নেতারা মানুষকে সঠিক পথে নিয়ে যায়। রাজনৈতিক বিষয়ে সেনাপ্রধানের এ মন্তব্যে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে বিরোধী দলগুলো। কেউ কেউ তাকে তার সীমার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তবে সাবেক সেনাপ্রধান ও বিজেপি নেতা ভিকে সিং এ বিষয়ে রাওয়াতকে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বলেন, সবকিছুকেই রাজনীতির রঙ দেওয়া উচিৎ নয় বিরোধী দলগুলোর।

কেরালায় নিজের এলাকায় ‘সেভ ইন্ডিয়া সেভ কন্সটিটিউশন’ শীর্ষক পদযাত্রায় অংশ নিয়ে কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা চিদাম্বরম বলেন, বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকার এখন সেনাবাহিনী ও রাজ্য পুলিশ প্রধানদের দিয়ে প্রতিবাদরত শিক্ষার্থীদের বিরোধিতা করাচ্ছে, যা লজ্জাজনক। চিদাম্বরম বলেন, ‘আমি জেনারেল রাওয়াতকে বলছি। আপনি সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে আছেন। সুতরাং, নিজের চরকায় তেল দিন। রাজনীতিবিদরা যা করবে, তা রাজনীতিবিদরাই করবে। রাজনীতিবিদদের কী করা উচিৎ সেটা বলার দায়িত্ব সেনাবাহিনীর নয়। ঠিক যেমন, কীভাবে যুদ্ধ করা উচিৎ সেটা আপনাদের বাতলে দেওয়াটাও আমাদের কাজ নয়।’

এ সময় চিদাম্বরম বিজেপি সরকারের নাগরিকপঞ্জি ও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, নাগরিকপঞ্জির কারণে ১৯ লাখ মানুষ ইতিমধ্যেই আসামে নাগরিকত্ব হারিয়েছেন। এরপর আসবে নাগরিকত্ব আইন। আপনি যদি হিন্দু হন, আপনাকে ভারতে স্বাগত, আপনি নাগরিকত্ব পাবেন। কিন্তু আপনি যদি বাসিন্দা সূত্রে মুসলিম নাগরিক হয়ে থাকেন, তাহলে এই নতুন সংশোধিত আইনের কারণে আপনি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীতে পরিণত হবেন।

তিনি বলেন, বিজেপির এই প্রগতিবিরোধী রাজনীতি ভারতকে অন্ধকার যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। ১২ই ডিসেম্বর পাস হওয়া নতুন এই নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ চলছে ভারতে। গত তিন সপ্তাহে এই বিক্ষোভে মারা গেছে ২৫ জন। কেবল উত্তর প্রদেশেই মারা গেছেন ১৯ জন।








সূত্র: ইনকিলাব