আসাম এনআরসি-তে প্রচুর আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday, 1 December 2019

আসাম এনআরসি-তে প্রচুর আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী

a22aa4a554542fb552ce2d28ee5fc9f9-5d69fea3c26b2



আসামে জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) তৈরি নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের প্রভাবশালী বিজেপি নেতা ও অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। গতকাল শনিবার তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এই এনআরসি করতে বিপুল আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে। সেই দুর্নীতির কথা ধরা পড়েছে ক্যাগ বা কমট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের প্রতিবেদনে।

আসামের এনআরসি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গত তিন বছর ধরে চলছে এই এনআরসি তৈরির কাজ। আর এই তিন বছর ধরে চলছে এই আর্থিক দুর্নীতির ঘটনা। মন্ত্রী বলেন, দেশের অডিটর জেনারেল তাঁদের প্রতিবেদনে এই আর্থিক দুর্নীতির কথা উল্লেখ করেছে। উল্লেখ করেছেন ১৬টি অনিয়মের কথা। আগামী সপ্তাহে এই আর্থিক দুর্নীতির বিস্তারিত প্রতিবেদন আসাম রাজ্য বিধানসভায় জমা দেওয়া হবে।

আসাম সরকারের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই মাসে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়েছিল ৪০ লাখ নাগরিকের নাম। পরে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র জমা দিলে সেই সংখ্যা নেমে আসে ১৯ লাখে। এই ১৯ লাখ নাগরিককে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য দ্বারস্থ হতে হবে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে। ১২০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে হবে। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে এই ১৯ লাখ মানুষের নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হলে তাদের আবেদন করতে হবে আসামের গুয়াহাটি হাইকোর্টে। সেখানে ব্যর্থ হলে সুপ্রিম কোর্টে। আসাম সরকারের এসব সিদ্ধান্ত মানছে না বিরোধী দল। তাঁদের বক্তব্য একজন গরিব মানুষ কিভাবে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন।

আসামের রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তর গতকাল রাজ্য বিধানসভায় জানায়, গত মে মাস পর্যন্ত রাজ্যের ১০০টি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে নাগরিকত্বের দাবিতে দায়ের হওয়া ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৫৪টি মামলা ঝুলে আছে। বর্তমানে এই রাজ্যে সন্দেহজনক ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ৭৩৮ জন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, তিন বছরে সন্দেহজনক বিদেশিদের বিরুদ্ধে চলা মামলাগুলোর মধ্যে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৯০টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৪১ হাজার ৪০০ জনকে ভারতীয় এবং ৫৫ হাজার ৬৭৯ জনকে বিদেশি বলে রায় দেওয়া হয়েছে। আর এই রাজ্যে একপক্ষীয় রায়দানের মামলার সংখ্যা ৬৮ হাজার ৭৮৯টি।

আসামের কারাগারে স্থাপিত বন্দী শিবিরে (ডিটেনশন ক্যাম্প) ‘বিদেশি’ তকমা লাগিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া বন্দীদের মধ্যে ১৩ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ১৩ জন বন্দীর কারাগারে থাকার মেয়াদ তিন বছর পার হয়েছে। গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেন, যেসব বন্দীর বন্দী শিবিরে আটক থাকার মেয়াদ তিন বছর পার হয়েছে, তাঁদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।

এর আগে আসাম সরকার দুই দফায় ৭৩ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। গতকাল আরও ১৩ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৮৬ জনকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে সরকার।

আসামে বিদেশি তকমা দিয়ে বাংলাভাষীদের তাড়াতে গিয়ে আসামের বহু বাঙালি হিন্দু-মুসলিমকে বন্দী করা হয়। তাঁদের অনেককেই ঠাঁই দেওয়া হয় আসামের ছয়টি কারাগারে স্থাপিত বিশেষ বন্দী শিবিরে। আসামের তেজপুর, গোয়ালপাড়া, শিলচর, ডিব্রুগড়, কোঁকরাঝাড় এবং জোরহাট জেলায় এই ক্যাম্পগুলো আছে। এখন এই বন্দী শিবিরে আটক রয়েছে ৯৮৮ জন। আর এখানেএখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২৮ জন।


সূত্র: প্রথম আলো

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad