মহারাষ্ট্রের ‘পওয়ার প্লে’-তে অবশেষে জিতলেন কাকা শরদই। মেয়ে-জামাইকে সঙ্গে নিয়ে হোটেলের ঘরে ভাইপো অজিতের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক। দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে গলল বরফ। উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অজিত পওয়ার। রেগে নেই, বার্তা শরদেরও।
মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে অজিত দাদা নামে পরিচিত, শরদ পওয়ারের এই ভাইপোর রাজনৈতিক ওজন নিয়ে কারোর মনে কোনও সন্দেহ নেই। শরদ পওয়ারের উত্তরসূরি কে হবেন, ভাইপো অজিত না কি মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে, তা নিয়ে এনসিপির অন্দরে দ্বন্দ্বের কথাও কারোর অজানা নয়। কিন্তু, কাকা শরদ পওয়ার উদ্ধব ঠাকরের নাম মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ঘোষণা করে দেওয়ার, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অজিত, বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ে ফেলবেন, এটা সম্ভবত অনেকেই আন্দাজ করতে পারেননি। ভাইপোর এই সিদ্ধান্তের পর গোটা বিষয়টা কার্যত প্রেস্টিজ ফাইট হিসাবে নিয়ে ফেলেছিলেন কাকা শরদ পওয়ার। মারাঠা রাজনীতির এই পুরনো খেলোয়াড় ৭৯ বছর বয়সেও, পুরোদমে নেমে পড়েছিলেন অজিত-বিজেপির কৌশলকে মাত দিতে। একে একে অজিত পওয়ারের সঙ্গে থাকা বিধায়কদের নিজের দিকে টেনে নেন শরদ পওয়ার। লড়াইটা শরদ বনাম অজিত হয়ে যাওয়া মাত্রই, ঘোর অজিত পওয়ার ঘনিষ্ঠরাও, শরদ পওয়ারকে ক্ষুণ্ণ করার সাহস দেখাতে পারেননি! তাই একে একে অজিতের সব অনুগামীরাই, সিনিয়র পওয়ারের দিকে চলে আসতে শুরু করেন। কার্যত একঘরে হয়ে যান অজিত পওয়ার। কিন্তু, তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ভাইপোকে বিধায়ক দলের নেতার পদ থেকে সরালেও, তাঁর সম্পর্কে কোনও খারাপ কথা কিংবা দল থেকে বের করে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নেননি শরদ পওয়ার। উল্টে অজিত পওয়ারকে বোঝানোর কাজটা শুরু হয় সোমবার সন্ধে থেকেই। এনসিপির শীর্ষ নেতা জয়ন্ত পাতিল, ছগন ভুজবল, ধনঞ্জয় মুণ্ডেকে দায়িত্ব দেওয়া হয় বোঝানোর জন্য। কিন্তু, প্রথমে বাগে আনা যায়নি অজিত পওয়ারকে। আর শেষ অবধি পরিবারের ছেলেকে বোঝাতে আসরে নামে খোদ পরিবার মঙ্গলবার সকালে মুম্বইয়ের ট্রাইডেন্ট হোটেলে অজিত পওয়ারের সঙ্গে দেখা করেন কাকা শরদ পওয়ার। পওয়ারের মেয়ে অর্থাৎ অজিতের বোন সুপ্রিয়া সুলে এবং সুপ্রিয়ার স্বামী অর্থাৎ অজিত পওয়ারের ভগ্নীপোত সদানন্দ সুলে। সূত্রের খবর, শরদ পওয়ার ভাইপো অজিতকে বলেন, তিনি অজিতের ওপর রেগে নেই। অজিত যেন উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দলে ফিরে আসেন।
সুপ্রিয়া সুলেও ফিরে আসার জন্য বোঝান দাদা অজিতকে। এনসিপি সূত্রের খবর, দু’জনের কথাই চুপ করে শোনেন অজিত। তখন ফের শরদ পওয়ার তাঁকে বলেন, উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে। শরদ এও বলেন, যদি অজিত ইস্তফা দিতে রাজি নাও হন, তাহলেও যেন তিনি বুধবার আস্থা ভোটে অংশগ্রহণ না করেন। পওয়ার ভাইপোকে এও বলেন, তিনি যদি মনে করেন যে স্পিকার তাঁকেই এনসিপি পরিষদীয় দলের নেতা মানবেন এবং অজিত হুইপ জারি করতে পারবেন, তাহলে তিনি ভুল ভাবছেন। কারণ তা যাতে না হয় সেই রাস্তাও তিনি বের করে ফেলেছেন। আর কাকা ভাইপোর এই মিলনেই বরফ গলে। পরিবার ফের এক হয়ে যায়। আলাদা পড়ে যায় বিজেপি।
source https://www.rarebreaking.com/2019/11/blog-post_27.html

No comments:
Post a Comment