নিজস্ব প্রতিনিধিঃ তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের অন্যায় আবদার না মানায় নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাহি সহায়ক সুশান্ত প্রামানিককে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েত সদস্য থেকে তাদের স্বামী ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, হেনস্থা হওয়ার পরও তাকে চিকিতসার জন্য হাসপাতাল যেতে দেওয়া হয়নি। দেড় ঘন্টা পরে মহকুমা শাসকের ফোন পেয়ে মুরারই দুই ব্লকের বিডিও অমিতাভ বিশ্বাস ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে পাইকর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। ক্ষুব্ধ সুশান্ত প্রামানিক দোষীদের শাস্তি চেয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যান। একইসঙ্গে ওই পঞ্চায়েতে আর ফিরবেন না বলে জানিয়ে দেন তিনি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান নাজরিন সুলতানা বলেন, আমরা গরীব মানুষদের সকলের বাড়ির জন্য উনাকে দাবি জানাতেই উনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে নন্দীগ্রামের জন্য বাংলা গ্রামীণ আবাস যোজনার ৫০০টি ঘরের বরাদ্দ আসে। তার তালিকাও তৈরি করা হয়। কিন্তু সুশান্তবাবু সেখান থেকে ১৯৬ জনের নাম বাদ দেন। কারন তার দাবি, যাদের নাম বাদ গিয়েছে তাদের সকলের অবস্থা ভালো,এবং তাদের সকলের পাকা বাড়ি আছে। সুশান্তবাবু বলেন, শুক্রবার সকাল থেকেই তাকে তালিকায় থাকা সকলের নামেই টাকা বরাদ্দের জন্য চাপ দেন সদস্য থেকে তাদের স্বামীরা। আমি তাদের বলি, বিডিওর নির্দেশ তাকে মানতে হবে। তার দাবি বিডিও সাহেব নির্দেশ দিয়েছেন, তালিকা থেকে পাকা বাড়ি থাকা উপভোক্তার নাম বাদ দিতে হবে। শুক্রবার প্রধানের ঘরে সুশান্তবাবুকে ডেকে সেখানেই সব নামে সহি করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
তিনি জানান,এলাকার প্রাথমিক শিক্ষক তথা তৃণমুল নেতা চৈতন্য ভাস্কর তাকে রীতিমতন হুমকি দিতে থাকেন। তার টেবিল চাপড়ে তাকে সই করার জন্য বাধ্য করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে সফল না হওয়ায় তিনি প্রধানের ঘর থেকে নিজের চেম্বারের দিকে যাচ্ছিলেন। তখনই তাকে ঠিকাদার ও নেতারা রাস্তা থেকে একরকম জোর করে টেনে নিয়ে গিয়ে তার ঘরে নিয়ে যায়। তার পর কিল চড় মারতে থাকেন। তিনি জানান, তার ওপর চড়াও হন সদস্যের স্বামী মৃণাল মণ্ডল,শেখ রাজা। তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, তৃণমূল সদস্য প্রতিমা রাজবংশী ও ইতিমুন খাতুন সহ অনান্য ঠিকাদাররাও। মার খেয়ে দেড় ঘন্টা তিনি নিজের চেম্বারে বসে পড়েন।
পরে বিডিও এসে তাকে পাইকর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিতসার জন্য নিয়ে যান। মুরারই দুই ব্লকের বিডিও অমিতাভ বিশ্বাস বলেন, আমি সকলকেই তালিকা দেখে তা চূড়ান্ত অনুমোদন করতে বলেছিলাম। এখানে কি হয়েছে তা না দেখে বলতে পারব না। তবে এভাবে চড়াও হয়ে গায়ে হাত তোলা অন্যায়। অন্যদিকে, সুশান্তবাবু বলেন সাড়ে চারবছর তিনি নন্দী গ্রামে থেকে কোনও আপোষ করেন নি।তাই বছর দেড়েক আগেও ওই মৃনালবাবু তার ওপর চড়াও হয়েছিলেন। তার বিহিত আজও হয়নি। তাই অন্যায়ের শাস্তি চেয়ে দীর্ঘ ছুটি নিয়ে রামপুরহাট দুই ব্লকের বাড়িতে ফিরে যান নির্বাহি আধিকারিক। ঘটনার প্রসাশনিক তদন্ত শুরু হয়েছে, বলে সূত্রের খবর।
পি/ব
No comments:
Post a Comment