অশ্বগন্ধার উপকারিতা কী কী? বিভিন্ন বয়সের সবাই - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, 16 October 2019

অশ্বগন্ধার উপকারিতা কী কী? বিভিন্ন বয়সের সবাই



নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

খেতে পারেন!

অশ্বগন্ধা নামের চিরহরিৎ গুল্মটি মূলত ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল যেমন, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, গুজরাট ও রাজস্থানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জন্মায়। এ ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের শুষ্ক অঞ্চল এবং আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার কোনও কোনও অংশে অশ্বগন্ধা গাছ দেখা যায়। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও পাকিস্তানে এই গুল্ম ভাল ভাবেই পরিচিত। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভেষজ অ্যাডাপটোজেন অশ্বগন্ধা, অন্যান্য বিখ্যাত ভেষজ টনিক জিনসেং, অ্যাসট্রাগালুস, ডং কুয়াই, রেইশি মাসরুম ও সুমার সঙ্গে তুলনীয়। তাই কেউ কেউ এদের ‘ভারতীয় জিনসেং’ কিংবা ‘শীতের চেরি’ বলেও উল্লেখ করে থাকেন।



বিদেশে ‘পয়জন গুজবেরি’ কিংবা ‘উইনটার চেরি’ নামেও এর পরিচিতি আছে। ‘অশ্বগন্ধা’ নামটি এসেছে ঘোড়ার গায়ের তীব্র গন্ধের সঙ্গে এই গাছের শিকড়ের গন্ধের অদ্ভুত সাদৃশ্যের কারণে। ‘অশ্ব’ আর ‘গন্ধ’ দুটি শব্দই সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতের সনাতন ‘আয়ুর্বেদ’ শাস্ত্রের নয়নমণি হয়ে রয়েছে এই ভেষজ। মনে করা হয়, নিয়মিত অশ্বগন্ধ গ্রহণ করা হলে অশ্বের মতো শক্তি ও পুরুষকার অর্জন করা যায়। এই গুল্মের বৈজ্ঞানিক নাম ‘উইদেনিয়া সোমনিফেরা’ (Withania somnifera)। ‘সোমনিফেরা’ একটি ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ ‘ঘুমে প্রভাব বিস্তারকারী’।



ব্যবহার

অশ্বগন্ধা গাছের শিকড়, পাতা ও কমলা-লাল রঙা ফল বহু প্রাচীন কাল (৩০০০ বছরের বেশি) থেকেই নানা ধরনের রোগ নিরাময়ের জন্য ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শতাব্দী পর শতাব্দী ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মূলত জীবনীশক্তি, ধৈর্য্য, দৃঢ়তা, আয়ুবৃদ্ধি এবং শরীর উদ্দীপ্ত না করেও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার কাজে এই ভেষজ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাই আয়ুর্বেদে একে গুরুত্বপূর্ণ ‘রসায়ন’ বলে মান্য করা হয়। যার প্রকৃত অর্থ, এটি এমন একটি ভেষজ, যা মানসিক ও শারীরিক উভয়ের বিচারেই শরীরকে সুস্থ রাখবে। আসলে এটি স্নায়ুতন্ত্রের যত্ন নেয়, অশান্তি ও মানসিক চাপ কাটিয়ে মনকে প্রশান্ত রাখে।



এ ছাড়াও এই ভেষজের শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং আর্থারাইটিক ও রিউম্যাটিক সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। সে কারণে অশ্বগন্ধা পুরুষ বন্ধ্যাত্ব থেকে ক্রনিক ভ্যাজাইনাল ডিসচার্যের মতো বিভিন্ন রোগের জন্য উপকারী। সমগ্র উদ্ভিদ রাজ্যের মধ্যে এই ভেষজ থেকেই সবচেয়ে শক্তিশালী কামোদ্দীপক টনিক তৈরি করা হয়। কোনও টনিককেই একই সঙ্গে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-আর্থারাইটিক, অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি, প্রশান্তিকারক ও কামোদ্দীপক হিসেবে কাজ করতে দেখা যায় না। বর্তমানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভারতে ও বিশ্বের অন্যান্য কিছু দেশে অশ্বগন্ধা গাছের শিকড়, পাতা, বীজ, এমনকী ফল বিভিন্ন ওষুধের সক্রিয় উপাদান রূপে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে কাজেও লাগছে।



পি/ব

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad