দেবশ্রী মজুমদার, রামপুরহাট, ১৫ অক্টোবরঃ জিয়াগঞ্জ শিক্ষক নিহতের ঘটনায় মুর্শিদাবাদ পুলিশ সুপারের সর্বশেষ তদন্তের ঘটনা সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসার পর, মুখ খুললেন নিহত শিক্ষকের শ্বশুর সুখেন মণ্ডল ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য। এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, পুলিশ আষাঢ়ে গল্প শোনাচ্ছে। থ্রিলার সিনেমাকেও হার মানাচ্ছে এই তদন্ত। অনেক অসঙ্গতি আছে এই তদন্তে। আমরা এই তদন্তে মোটেই খুশি নই। সিবিআই তদন্তের দাবিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব আমরা।
প্রসঙ্গত, দশমীর দুপুরে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের লেবুতলায় বাড়ির মধ্যে খুন হন এক শিক্ষক, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও ছয় বছরের সন্তান। তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। ঘটনার ছয়দিন পর উৎপল বেহেরা নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পেশায় রাজমিস্ত্রি ওই যুবকই তিনজনকে খুন করেছে বলে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন মুর্শিদাবাদ পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার। কিন্তু সেই দাবিকে নসাৎ করেছে নিহত শিক্ষকের পরিবার। নিহত শিক্ষকের স্ত্রী বিউটির মণ্ডলের ভাই সাক্ষীগোপাল মণ্ডল বলেন, “পুলিশ প্রথম দিন থেকে আমাদের অন্ধকারে রেখে তদন্ত করেছে। পুলিশের বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। প্রথম দিন যখন জামাইবাবু বাড়িতে যায় তখন পুলিশ বলেছিল বাড়ির পাশে ঘেরা তার কাঁটার মধ্যে এক টুকরো মাংস পিণ্ড লেগে রয়েছে।
কিন্তু বর্তমানে পুলিশ সে বিষয়টি নিয়ে কিছু বলছে না। পুলিশ বলছে বন্ধুপ্রকাশ দরজা খোলা মাত্র উৎপল পিছন থেকে আক্রমণ করে। সেখানেই পড়ে যায়। এরপর ভিতরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বিউটিকে আক্রমণ করে। এরপর বাচ্চাটাকে মারে। তাই যদি হয় তাহলে দিদি জামাইবাবুর মৃতদেহ খাটের উপর তুলল কে? দরজার সামনে রক্ত পড়ে থাকল না কেন? কিভাবে তারা খাটের মধ্যে গেল? সব পাওয়া গেল শুধু জামাইবাবুর মোবাইল পাওয়া গেল না। এটা মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশ প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতেই ২০ বছরের এক যুবককে ধরে গল্প সাজিয়েছে”।
বিউটির বাবা সুখেন মণ্ডলের দাবি একটা যুবক, যার বিরুদ্ধে আগে কোন অপরাধের রেকর্ড নেই সে একা কিভাবে তিনজনকে খুন করতে পারবে? তাছাড়া ওই যুবক পাঁচ মিনিটে পেশাদার খুনির মতো খুন করে বেরিয়ে গেল এটা আষাঢ়ে গল্প ছাড়া কিছু নয়। পুলিশ প্রকৃত ঘটনা আড়াল করছে। আমরা রাজ্য পুলিশের তদন্তের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। সিবিআই তদন্ত করব”।
পুলিশি তদন্তে অখুশি গ্রামের বাসিন্দা জহর ঘোষ বলেন, “পুলিশ সিনেমার গল্প তৈরি করছে। অমিতাভ বচ্চন একাই অনেকজনকে মেরে ফেলল। পুলিশের এই তদন্ত ঠিক ওই রকম। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ওই যুবক একা খুন করতে পারে না। পুলিশ তদন্তের নামে পরিহাস করছে। চাপে পড়ে পুলিশ এমন বিবৃতি দিচ্ছে। এই বক্তব্য শুনে বাচ্চা ছেলেতেও হাসছে। আমরা চাই প্রকৃত তদন্ত হোক”।
পি/ব
No comments:
Post a Comment