কলকাতার বাজার থেকে বাংলাদেশ থেকে আসা ৫০০ টন ইলিশ উধাও। কলকাতা বা শহরতলীর বড়ো বড়ো বাজার গুলিতে এখন আর দেখা মিলছে না বাংলাদেশের ইলিশের। ফলে পদ্মা পারের ইলিশের প্রত্যাশায় বসে থেকেও পাতে ইলিশ না পেয়ে কার্যত এখন হতাশ রাজ্যের মানুষ।
বাংলাদেশ থেকে ৫০০ টন ইলিশ কলকাতায় আসায় বড়ো আশা নিয়ে বুক বেঁধেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের আম বাঙালি। ভেবেছিলেন, বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশ আসায় সস্তা হবে ইলিশের দাম। কিন্ত বাজারে পদ্মার ইলিশ ঢোকার পরই শুধু দামের বহর হতাশ করেছে মধ্যবিত্তকে। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আসার এক সপ্তাহের মধ্যেই ঝড়ো ইনিংসের মতো উধাও পদ্মার ইলিশ।
উল্লেখ্য, গত ১ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে ভারতের ‘নাজ ইমপেক্স প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে এক আমদানি সংস্থার মাধ্যমে ২৪ টন করে মোট ৫০০ টন ইলিশ ভারতে পাঠায় বাংলাদেশের শেখ হাসিনার সরকার। প্রায় সাত বছর পর দুর্গাপুজোর উপহার হিসাবে এই ইলিশ পাঠায় বাংলাদেশ। প্রত্যেক ইলিশেরই ওজন ছিলো ১ কিলোগ্রাম থেকে ২ কিলোগ্রামের মধ্যে। যা প্রতি কিলোগ্রাম ৬ ডলার করে দাম ধার্য করে বাংলাদেশ। ভারতীয় মুদ্রায় যার দাম দাঁড়ায় ৪০০ থেকে ৪৩০ টাকার মধ্যে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাংলাদেশের ওই ইলিশের উপর আমদানি শুল্ক না চাপানোর ফলে কলকাতা ও শহরতলীর বাজারে গত এক সপ্তাহের উপর ধরে পদ্মার ইলিশ বিকিয়েছে ২১০০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে। কিন্ত গত দুইদিন ধরে কলকাতা ও শহরতলীর বিভিন্ন বাজার থেকে উধাও বাংলাদেশের ইলিশ। হাওড়া, মানিকতলা, নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাট থেকে কলকাতা ও শহরতলীর বিভিন্ন নামি দামী বাজারগুলিতে আর দেখা মিলছে না পদ্মার ইলিশের।
কোথায় বাংলাদেশের ইলিশ? এই প্রশ্ন এখন পশ্চিমবাংলার ইলিশ প্রিয় মানুষের মুখে মুখে। ৫০০ টন ইলিশ মানে তো প্রায় ৫ লক্ষ কিলোগ্রাম ইলিশ। সাত দিনের মধ্যে তা কি করে শেষ হতে পারে? উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না কেউই।
বিশেষ সুত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার বড়ো বড়ো আড়তদাররা বিপুল পরিমান পদ্মার ইলিশ স্টক করে রেখেছেন শুধুমাত্র অতিরিক্ত মুনাফার লোভে। সুযোগ বুঝেই দাঁও মারবেন তারা।
দুর্গাপুজো চলে গিয়েছে, এখন আড়তদারদের টার্গেট ভাইফোঁটা। পদ্মার এই রুপোলি ফসল ধরে রাখতে পারলেই ভাইফোঁটার সময় ঘরে ঢুকবে আরও বাড়তি মুনাফা। পধচিমবঙ্গের মাছ ব্যাবসায়ীদের মতে, ভাইফোঁটাতেও ইলিশের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। সেই সময় ইলিশের দাম যাই হোক না কেন, ভাই বা বোনেদের কাছে টাকাটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায় না। বছরের ওই একটা দিনে সব বোনেরাই চায়, ভাইদের পাতে সেরাটা তুলে দিতে।
তাই ওই সময় পদ্মার ইলিশ বাজারে ছাড়তে পারলেই বাড়তি মুনাফা। ওই সময় পদ্মার ইলিশের দাম উঠতে পারে ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত। আর সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশের ইলিশ এখন আড়তদারদের গোপন আস্তানায় লুকানো রয়েছে বলেই মনে করছেন সাধারন মাছ ব্যাবসায়ীরা।
পি/ব
No comments:
Post a Comment