দেবশ্রী মজুমদারঃ কথিত আছে এই জীবিত কুণ্ডের জলেই জয় দত্ত সদাগরের মৃত পুত্র বেঁচে উঠেছিল। এবার সেই জীবিত কুণ্ডের জল শোধন করা হল বৈদিক যাগযজ্ঞের মাধ্যমে। চলতি বছরের ৩ আগস্টএক তীর্থ যাত্রী জীবিত কুণ্ডে ডুবে মারা যাওয়ার পর জল শোধন করে মাতার জন্য জল ব্যবহার্য করা হল। প্রায় দেড়মাস পর্যন্ত জীবিত কুণ্ডের জল দেবদেবী কার্য্যে অব্যবহার্য ছিল।
শুক্রবার বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করে যজ্ঞের মাধ্যমে এই জল সূচিকরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তারাপীঠ মাতার সেবায়েত সংঘ। তারামাতা সেবায়েত সংঘের সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিধি মেনে এদিন বৈদিক যজ্ঞ করে জীবিত কুণ্ডের জল শোধন করা হয়। প্রায় দেড় মাস মায়ের সেবায় এই জল ব্যবহার হয় নি। কারন মাস দেড়েক আগে এই জীবিত কুণ্ডে ডুবে এক পূন্যার্থী মারা যান।
শুদ্ধিকরণ না হওয়ায় এবার কৌশিকী অমাবস্যাতেও জীবিতকুন্ডুর জল পুজোর কাজে ব্যবহার করা হয়নি বলে জানায় মন্দির কমিটি। এদিন প্রথমে জীবিত কুণ্ড থেকে ১০৮ ঘড়া জল তুলে অন্য জায়গায় ফেলা হয়।
তারপর জীবিত কুণ্ডের জল শোধন করে তাতে রঘুনাথ গঞ্জের গঙ্গা থেকে আনা ১০৮ ঘড়া জল ঢালা হয়।
সকাল ৮ থেকে গোটা দিন যাগযজ্ঞ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই জল শোধন পর্ব চলে।
হোম যজ্ঞ করেন পার্শ্ববর্তী দেখুরিয়া গ্রামের ভাস্কর ভট্টাচার্য ও চন্দ্রশেখর ভট্টাচার্য। জানা গিয়েছে, তারাপীঠ মন্দিরের সামনের জীবিতকুণ্ডর জলে মা তারার পুজো, স্নানের কাজ করা হয়।
কিন্তু চলতি বছরের ৩ আগস্ট আসামের রঙ্গিয়া গ্রাম থেকে আসা এক পুণ্যার্থী জীবিতকুণ্ডে স্নান করতে নেমে তলিয়ে মারা যান। ওই পুণ্যার্থী দেওঘরে শিবের মাথায় জল ঢেলে তারাপীঠ এসেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন পাঁচ প্রতিবেশী এবং তার ছেলে। দুপুরের দিকে পুকুরে নেমে সাঁতার কাটতে গিয়ে তলিয়ে যান। ২০ মিনিট পর তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে জীবিতকুণ্ডর জল পুজোর কাজে ব্যবহার করা হত না।
মন্দির কমিটির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শাস্ত্র মতে জীবিতকুণ্ডে কোন মানুষের মৃত্যু হলে সেই জল অশুদ্ধ হয়।ফলে জল শুদ্ধিকরণ করতে যে আচার রয়েছে সেই মতো এদিন শুদ্ধিকরণ করা হল”। এদিন সকাল থেকে পুকুরের ষষ্ঠীমন্দির সংলগ্ন ঘাটে পুজোর আয়োজন করা হয়। প্রথমে পুকুর থেকে ১০৮ ঘড়া জল তুলে ফেলা হয়। এরপর পুকুরে সমপরিমাণ গঙ্গাজল ঢেলে বৈদিক মন্ত্রে হোম যজ্ঞের মাধ্যমে শুদ্ধিকরণ করা হয়।
ধ্রুববাবু বলেন, “জীবিতকুণ্ডের জলে মায়ের স্নান করানো হয়। এছাড়া মন্দির চত্বরে থাকা বামাখ্যাপা, শিব সহ সমস্ত ঠাকুরের স্নান করানো হয়। পুজোর কাজেও ব্যবহার করা হয়। কিন্তু পুণ্যার্থীর মৃত্যুর পর থেকে ওই পুকুরের জল ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। কৌশিকী অমাবস্যাতেও জীবিতকুণ্ডর জল ব্যবহার করা হয়নি। শুদ্ধিকরণের পর থেকে ফের জল পুজোর কাজে ব্যবহার করা হবে বলে মন্দির কমিটি জানিয়েছে।
পি/ব
No comments:
Post a Comment