সুশীল ও সাহিলদের সাথে গৃহ প্রবেশের আনন্দ ভাগ পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রের - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday, 27 September 2019

সুশীল ও সাহিলদের সাথে গৃহ প্রবেশের আনন্দ ভাগ পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রের




দেবশ্রী মজুমদারঃ   আনন্দের একটাই ধর্ম আনন্দ ভাগ করে নেওয়া। আনন্দের সংস্কৃতিও তাই।  এমনিতে আদিবাসী সাঁওতালদের অন্নপ্রাশন হয় না। মুসলিম সম্প্রদায়ের ও অন্ন প্রাশন নেই।   তো কি হয়েছে! আনন্দ করাই যেতে পারে! এই উপলক্ষে রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুষ্টি পুনর্বাসন মেতে ওঠে অনাবিল আনন্দে।  এই কেন্দ্রের সিফটিং পাক্কা দু'বছর পর। তাই  উৎসবের আমেজ ছিল আগে থেকেই।



 সাজানো হয়েছিল  রঙ-বেরঙের বেলুনে। গত ২৫ তারিখ  সকাল থেকেই লুচি আর আলুর দমের গন্ধে  ম-ম করছিল পুনর্বাসন কেন্দ্রের চত্বর।   লুচি-আলুরদমের সাথে ছিল পায়েস। এই আনন্দের সাথে সুশীল ও সাহিলদের সুস্থ হওয়ার আনন্দ যুক্ত হলো।  জানা গেছে, অপুষ্টির শিকার ছিল সুশীল ও সাহিল নামে দুই শিশু। দুজনের বয়স আট মাস।  পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে,সুশীল ও সাহিল দু’জনের বাবা দিনমজুর। নিয়মিত কাজ জোটে না। তো ছেলের জন্য পুষ্টিকর খাবার! এই অভাবের সংসারে দুধের যোগান ছিল না।



 দিন-সাতেক আগে অপুষ্টিতে ভোগা সুশীল ও সাহিলকে নিয়ে এই বিভাগে ভর্তি হন তাদের দুই মা সুখী হাঁসদা ও রুহিদা বিবি। নিয়ম অনুযায়ী,  এক মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের ওজন উচ্চতার নিরিখে কম হলে পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখা হয়। পনেরো দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত শিশুদের মায়েদের সঙ্গেই ভর্তি রাখা হয়। ওজন বাড়ানোর জন্য পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসাও করা হয়।  দুজনে পথ্য খাবার ও চিকিৎসায় সেরে ওঠে।  জানা গেছে, আদিবাসী সাঁওতালদের শিশুদের অন্ন প্রাশন হয় না।



 তবে তাদের সমাজে "নিম দা মাণ্ডি"  অর্থাৎ নিম ভাত দেওয়া হয় শিশুর মুখে।  সেই ভাতের কিছু অংশ অন্যদেরও দেওয়া হয়। নিম প্রতিষেধক বলেই এই প্রথা।  ছেলে হলে ৫ দিনের মাথায় এবং মেয়ে হলে ৯ দিনের মাথায় এই অনুষ্ঠান হয়। মুসলিমদের ক্ষেত্রেও  একই ভাবে নামকরণের অনুষ্ঠান হয়। যার নাম আক্বিকা। তবে ভোজ হয় না। শিশুর নামে ছাগল বা দুম্বা জবাই দিয়ে তার মাংস আত্মীয় স্বজন প্রতিবেশীর মধ্যে বিতরণ করা হয়। এসবের সময় তো কবে চুকে গেছে।  কেন্দ্রের ইনচার্জ সানন্দা সাঁতরা জানিয়েছেন,  " দু'বছর পর নতুন ভবনের আসার আনন্দে আয়োজন ছিলই।



সুশীল ও সাহিল সহ বাকি ৮ বাচ্চাদের নতুন জামা কাপড় ও খেলনা দেওয়া হয়। ঠিক অন্নপ্রাশন নয়। তবে   শিশুদুটির মুখেও পায়েস দেওয়া হয়েছে।” হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার সুস্মিত ভট্টাচার্য শিশুদুটির মুখে পায়েস তুলে দেন। দেন উপহারও। সেই আনন্দ ঘন মুহূর্তের ছবি তুলে দেওয়া হয় শিশুদুটির মায়েদের হাতে।  সুশীল ও সাহিলের মা সুখী হাঁসদা ও রুহিদা বিবি খুব আনন্দিত।



সুস্মিত ভট্টাচার্য বলেন, অন্ন প্রাশন হয়েছে, তা বলবো না। কারণ বাচ্চা দুটির মুসলিম ও আদিবাসী সংস্কার বা রীতি অনুযায়ী অন্ন প্রাশন হওয়ার কথা নয়।  পুনর্বাসন কেন্দ্রের নতুন ভবনে স্থানান্তরিত হওয়া উপলক্ষে আয়োজন করায় ছিল।  এই আনন্দের মুহূর্তের ফ্রেমে  সকলের সাথে বাচ্চা দুটোকেও বন্দী করে রাখা হলো।




পি/ব 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad