নিজস্ব প্রতিনিধিঃ অনেকে জানতে চায় স্বপ্নদোষ কেনো হয়। অনেকেই বিরক্তি বা অস্বস্তি বোধ করে এই কারণে। জীবনে স্বপ্ন দোষ হয় নি, এমন পুরুষ নেই। আর স্বপ্ন দোষ হওয়ার পর ঘুম ভেঙে যায়। অপরাধ বোধ হয়। মনে হয় দেহের ক্ষতি হয়ে গেল। কিন্তু তা হয় না। বিয়ের পর এই দোষ কেটে যায়। এবার জেনে নিই, স্বপ্ন দোষের কারণ।
আমরা যখন ঘুমাই তখন আমাদের শরীরে এক ধরনের হরমোন নিঃসরণ হয়। এই হরমোনের কাজ হলো আমাদের মাংসপেশিকে আমাদের মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রাখা। এর ফলে আমরা যখন স্বপ্ন দেখি তখন আকস্মিক কোন মুভমেন্ট হয় না। এই হরমোন না থাকলে আমাদের বড় অসুবিধা হত। কারণ আমাদের স্বপ্নের স্থায়িত্ব খুবই অল্প সময়। এই অল্প সময়ে আমরা হুলুস্থুল বাধিয়ে দিতাম এই হরমোন যদি কাজ না করতো।
আমাদের কিডনি আজীবন আমাদের দেহের সব বর্জ্য নিষ্কাশনের দায়িত্ব পালন করে। এমনকি কোন দিন কোন প্রকার ছুটি না নিয়েই। আমরা ঘুমালেও জেগে থাকে এই কিডনি দুটো। আর সারা রাত জেগে জেগে কাজ করে।
রাতের বেলা ঘুমানোর পর কিডনি বেশি কাজ করে। কারণ তখন দেহের অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ বন্ধ বা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তখন কিডনি দুটো দেহের বেশির ভাগ শক্তি ব্যবহার করতে পারে। কিডনির এই দ্রুত কাজ আমাদের জন্য কাল হয়ে দাড়ায়। আমাদের ইউরেনারি ব্লাডার প্রত্যেকটি প্রায় ৫০০ মিলিঃ করে বর্জ্য ধারন করতে পারে। তবে মজার বিষয় হচ্ছে, মাত্র ২২০ মিলিঃ ভরলেই আমাদের প্রচন্ড প্রস্রাবের বেগ পায়। তো ঘুমের মাঝে যখন ইউরেনারি ব্লাডার দুটো ১৮০ মিলিঃ করে জমা করে, তখন দেহের তা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হয়।
এই প্রচন্ড চাপ হয়তবা জেগে থাকলে আপনি চেপে রাখতে পারতেন। কিন্তু শরীরের উপর আপনার জোড় নাই তখন। তাই শরীর নিজেই তা নিষ্কাশনের দায়িত্ব নেয়। আপনার ঘুম ভাঙলে স্বাভাবিক ভাবে আপনি বেগ অনুভব করবেন এবং প্রকৃতির ডাকে সারা দেন। কিন্তু আপনার যৌনাঙ্গে তখন যদি উষ্ণ অনুভূত হয় তাহলেই স্বপ্নদোষ হবে। এই উষ্ণতা আপনার শুক্রকে বেরিয়ে আসার জন্য আহ্বান করে, এবং এর ফলে শুক্র বের হয়ে আসে। আর এই জন্য আপনি স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্ন দেখার জন্য আপনার এই দোষ হয় না।
বরং দোষের জন্য আপনি স্বপ্ন দেখেন। এবার আসি আপনার প্রশ্নের উত্তরে। মুলত স্বপ্নদোষ এর মূল কারণ হলো যৌনাঙ্গে উষ্ণতা আর ইউরেনারি ব্লাডারে তৈরি হওয়া চাপ। তাই এর প্রতিকারও দুইটি:
১. ঘুমানোর আগে ভাল ভাবে মুত্রত্যাগ করে ঘুমাবেন।
২. রাতে খাওয়ার পরপরই ঘুমাতে যাবেন না। একটু সময় নিন। অন্ততপক্ষে ১ ঘন্টা পরে ঘুমাবেন।
৩. উপর হয়ে ঘুমাবেন না। এতে দেহের বিভিন্ন অসুবিধার জন্ম দেয়। মেরুদন্ডের সমস্যার মূল কারণগুলার মধ্যে এটি অন্যতম। তা ছাড়া স্বপ্নদোষেও বেশ বড় ভূমিকা পালণ করে এই ভঙ্গি। চেষ্টা করবেন কাত হয়ে ঘুমানোর জন্য, বিশেষ করে ডান কাত হয়ে।
৪. ঘুমাতে যাওয়ার আগে জল পান করুন, তবে সীমিত পরিমাণে। অতিরিক্ত জল পান করবেন না।
No comments:
Post a Comment