দেবশ্রী মজুমদারঃ ফের চন্দন গাছ চুরি নিরাপত্তার ঘেরাটপে থাকা বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবন ও মালঞ্চ থেকে। তার জালি কেটে চুরি গেছে দুটি চন্দন গাছের কিছু অংশ। শুক্রবার সকালে বিষয়টি সবার নজরে আসে। জানা গেছে, জানা গেছে, বিশ্বভারতীর আধিকারিকরা সন্নিকটস্থ লাল বাঁধপুকুর থেকে গাছের কাটা অংশটি উদ্ধার করেছে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা আধিকারিক অশোক গুণ জানান, এব্যাপারে থানায় জানানোর পাশাপাশি বিশ্বভারতীর নিজস্ব নিরাপত্তা বিভাগ তদন্ত শুরু করেছে। প্রসঙ্গতঃ ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ জানলার শিক ভেঙে শান্তিনিকেতনের বিচিত্রাগৃহ থেকে নোবেল ছাড়াও গুরুদেবের ব্যবহৃত পকেট ঘড়ি, সোনার বোতাম, রুপোর মগ ও কাঁটা চামচ চুরি যায়। চুরি যায় কবি পত্নী মৃণালিনীদেবীর হাতের সোনার বালা। এব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হলেও উদ্ধার হয় নি নোবেল পদক ও অনান্য মূল্যবান জিনিস পত্র।
প্রসঙ্গত এর আগে ২০০৪ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সর্বশেষ ধরে মোট ছয় বার চন্দন গাছ চুরি গেছে। ২০১৫ সালেই মোট তিন বার চুরি গেছে। বিশ্বভারতীর নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর বরাবর আস্থাশীল। কিন্তু কোনবারই কিনারা হয় নি চুরির। পরবর্তীতে তল্লাশী চালানোর পর চন্দন গাছের অবশিষ্টাংশ উদ্ধার হয়েছে ঠিকই। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয় নিরাপত্তা খাতে।
উচ্চ নিরাপত্তা বলয় এলাকা হিসেবে উত্তরায়ণে সি সি টিভি লাগানো আছে। আছে নিরাপত্তা রক্ষী, সাধারণ রক্ষী, গান ম্যান। তবুও এসব এড়িয়ে কি করে বার বার চন্দন গাছ চুরি যায়? এই প্রশ্ন লাখ টাকার। বিশ্বভারতীতে চন্দন গাছ কেন বার বার টারগেট? তবে কি নোবেল চুরির মত চন্দন চুরি বিশ্বভারতীতে রহস্যময় ঘটনা হিসেবে থেকে যাবে প্রশ্ন প্রাক্তনী থেকে সবার।
পুলিসেরই একটি সূত্র বলছে, চন্দন পাচার চক্রটির হাতিয়ার ব্যাটারিচালিত চিনে করাত। ২০১৫ সালে সাত মাসে চোদ্দটি এবং তার আগের তিন বছরে সতেরোটি চন্দন গাছ একের পর এক চুরি গিয়েছে শান্তিনিকতেন থেকে। এগুলির মধ্যে শ্বেত ও রক্তচন্দন দুই-ই রয়েছে যার মূল্য কোটি ছাড়িয়েছে।
একটি চুরিরও কিনারা হয় নি আজ পর্যন্ত। গ্রেপ্তার হয় নি একজনও। এব্যাপারে বিশ্বভারতীর প্রবীন আশ্রমিক কালীপদ সিংহ রায় বলেন, “ বিশ্বভারতীতে লুঠপাঠ চলছে। সব ফাঁকা করে দেবে। আগেও কিছু ধরা পড়ে নি। এবারও আশা কিছু করছি না। বর্তমান উপাচার্য তো নিরব দর্শক। উনি তো বিজেপি আর এস এসের লোক”।
পি/ব
No comments:
Post a Comment