খুদে রোগীর ফ্যান চিকিৎসক! - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday, 14 September 2019

খুদে রোগীর ফ্যান চিকিৎসক!




নিজস্ব প্রতিনিধিঃ      অনন্য তো অনন্যই! আর সেই জন্য তার নাম অনন্য। এবার হেঁয়ালি ছেড়ে বলি, মাত্র ছয় বছরের শিশু অনন্য চক্রবর্তী। সে কিনা অপারেশন থিয়েটারে ছুরি কাঁচির সামনে  নির্ভয়ে গান গেয়ে গেল! একবাক্যে সবাই স্বীকার করছে, হার্জের টিন টিন কেও দুঃসাহসিকতায়  একদিন ছাড়িয়ে যাবে এই শিশু!   চিকিৎসকেরা মুগ্ধ! অপারেশন থিয়েটারে বুড়োদের হাত পা সিধিয়ে যায়! এ কিনা!! 



 ছুড়ি, কাঁচির ঝনঝনানি,  সূচ সুতো!  চোখের সামনে  চিকিতসক নার্সরা মুখে মাস্ক পরে,  হাতে গ্লাভস পরে রেডি অপরেশনের জন্য। আর তার মাঝে লিটল চ্যাম্প গাইছে-তো গাইছেই-- "টিপটিপ টুপটাপ বৃষ্টি, সেই থেকে পরছে তো পরছে। চুপচাপ ঘরে বসে থাকতে মনটা কেমন যেন করছে"। স্টেজ পারফরমেন্সেও একটু নার্ভাস লাগে অনেকের!  একটার পর একটা! কখনও স্কুলে শেখানো মাতৃবন্দনা, কখনও রাষ্ট্র বন্দনা! বীর শিশুর এই  গানই ভাইরাল নেট দুনিয়ায়। 


কুর্ণিশ নেটিজেনদের!  অনন্য চক্রবর্তীর বয়স মাত্র ছয় বছর। সিউড়ি শহরের পাইক পাড়ার বাসিন্দা এই শিশু মাস কয়েক ধরে ফাইমোসিস রোগে ভুগছিলো। এই সমস্যা এখন অনেক বাচ্চাদের দেখা দেয়। পুরুষাঙ্গের সামনের চামড়ার সমস্যায় প্রস্রাবের সময় ও চামড়া বেলুনের মত ফুলে যায়। তখন ব্যাথা অনুভূত হয়। পরে আর সেটা থাকে না।  চিকিতসকের পরামর্শ মত আধ ঘন্টার অপারেশন। খুব মাইনর অপারেশন। তবে যে সাহস অনন্য দেখালো, তা অসামান্য! 







 চিকিতসক দীপক কুমার মুখোপাধ্যায় অপারেশন করেন। তিনিও ভূয়সী প্রশংসা করেন অনন্যর।   সিউড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন হয় অনন্যর।  প্রথমে গুরু গম্ভীর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য চিকিসক অনন্যকে বলেন,  গান জানিস। সঙ্গে সঙ্গে গান শোনাতে শুরু করে অনন্য। আর এটাই তাক লাগিয়ে দিয়েছে অপারেশন থিয়েটারে সবাইকে। তাঁদের কাছে, এ এক বিরল অভিজ্ঞতা! তাঁরা এখন সবাই অনন্যর ফ্যান! 



জানা যায় সরোজীনিদেবী শিশু মন্দিরে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে সে।  প্রতিদিন যে মাতৃবন্দনা করানো হয়। সেই গান দিয়ে শুরু করে সে। অপারেশন শেষ হওয়ার পর পেরিয়ে গিয়েছে চারটি দিন। বাড়ির বিছানায় বসে থাকা অনন্যর চোখে মুখে সেই নির্ভীক সারল্য।  এদিনও সে জানায়  ভয় লাগেনি তার।  অনন্যর জবাব, “সাহসী হয়েই তো বসলাম। ডাক্তারবাবু বললেন তুমি কি গান শেখো? আমি হ্যাঁ বলেই দুটি গান শোনালাম”।



 সাহসী ছেলেমেয়ের বাবা মা হতে পেরে কার না গর্ব হয়!  সৌগত চক্রবর্তী গর্বে টইটুম্বুর মুখ এক গাল হাসিতে ফেটে পড়ছিল। যেন তার চোখের ভাষা বলেছিল--  শিশু হবার ভরসা আবার/ জাগুক আমার প্রাণে/ লাগুক হাওয়া নির্ভাবনার পালে। (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)।




পি/ব 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad