নারীদের পিরিয়ড নিয়ে লুকোচুরি নয়! - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, 1 July 2019

নারীদের পিরিয়ড নিয়ে লুকোচুরি নয়!

অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় ঘটনার মত পিরিয়ডও শরীরের একটা সাধারণ বিষয়। পৃথিবীর প্রত্যেকটা মেয়ের পিরিয়ডকালীন সপ্তাহে চার থেকে ছয়দিনে শরীর থেকে ত্রিশ থেকে চল্লিশ মিলিলিটার রক্ত চলে যায়। কারো কারো ক্ষেত্রে এটা আশি মিলিলিটার পর্যন্ত।

প্রক্রিয়াটা স্বাভাবিক হলেও যার সাথে হয় সে স্বাভাবিক থাকতে পারে না। পেটের ব্যথায়, গায়ের ব্যথায়, পায়ের ব্যথায়, কোমরের ব্যথায় বেচারার অবস্থা তখন কাটা মুরগির মত থাকে। তারপর কাউকে ওষুধ আনতে পাঠালে বাড়ির নারী সদস্যরা দোকানদারের সামনে গিয়ে লজ্জায় আনত মুখে এদিক-সেদিক তাকিয়ে পুরুষ মানুষের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দৌড়াদৌড়ি করে কিছু একটা ব্যবস্থা করেন। অবশ্য পুরুষ সদস্য থাকলে সে পর্যন্ত মরমে মরমে সেটা তার অবধি পৌঁছে দিতে পারলে কিছু সহজ হয়।

বউ বা গার্লফ্রেন্ডের পিরিয়ড হয়েছে এটা মানুষ জানলেও সমস্যা ! তার ডাক্তার ছেলেবন্ধুর কাছে বিষয়টা জানিয়ে কোন ওষুধের সাজেশন চাওয়াও বেশ লজ্জাজনক ! সিরিয়াসলি? পিরিয়ড কি কয়েকটা মেয়ের হয় নাকি খারাপ মেয়েদের হয় যে এটা লুকিয়ে রাখার বিষয়? জ্বর, মাথা ব্যথা, সর্দির মত পিরিয়ডের সাময়িক শরীর খারাপ হলে সেটা জড়তা ছাড়াই মানুষকে জানানো উচিত।

শরীর খারাপ জানার পরে কেউ কারণ জিজ্ঞেস করলে আর সব উত্তরের মতো পিরিয়ড চলছে এটাও সরল স্বাভাবিক উত্তর হতে পারে। এটা মেনে নিতে ছেলেদের পাশাপাশি কিছু ব্রেইনওয়াশড মেয়েদেরও ঘোরতর আপত্তি। তাদের মতে, পিরিয়ড লজ্জা স্থানের মতো একটা জিনিস, যা লোকচক্ষু এবং লোক জ্ঞাতির উর্ধ্বে থাকা আবশ্যক। এটা নিয়ে আলোচনা নিষিদ্ধ করা উচিত, ছেলেরা এসব জানলে তো আরো অস্বস্তিকর ব্যাপার !

ফলে যেসব ছেলেরা এসময় মেয়েদের সাহায্য করতে চায় এবং আসে তারা তাদের লজ্জার হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে নাকি শরীরের সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে সেটা নিয়ে বিপদে পড়ে যায় । ভাই ও বোনেরা, পিরিয়ডকে যেভাবে আপনারা ট্যাবু বানিয়ে রেখেছেন এবং সেটা অব্যহত রাখার চেষ্টা করছেন সেটা আদৌ কতখানি কাজে আসবে জানি না, কিন্তু অকাজে আসবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত ।

দয়া করে একটু মাথার মগজ ব্যবহার করেন, সহানুভূতিশীল হোন । এসব যতো লুকিয়ে রাখা হবে, টিপিক্যাল বাঙ্গালী পুরুষরা তত বিকারগ্রস্ত হবে, মেয়েদের অপদস্থ করতে চাইবে। এখান থেকে বের হতে চাইলে নারীদেরকেই বের হয়ে আসতে হবে। আপনি-আমি মুখ বুজে থাকলে থাকতেই পারি, হাজার বছরের ঐতিহ্য আর মৌলবাদী মানসিকতার উত্তরণ আজীবনেও ঘটবে না।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad