কি উপায় আগুন থেকে রক্ষা পাওয়া যায় - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, 10 June 2019

কি উপায় আগুন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়




আগুন হলো সাধারণত বাতাসের অক্সিজেনের সাথে জ্বালানির কার্বন ও হাইড্রোজেনের মিলনে সৃষ্ট এক বিশেষ রাসায়নিক বিক্রিয়া। আলোর মাধ্যমে এ রাসায়নিক বিক্রিয়া শক্তিতে প্রকাশ পায়। যতক্ষণ পর্যন্ত আগুন আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত তা আমাদের বন্ধু। 

আবার একটু অবহেলার কারণে তা আবার শত্রু হতে বিন্দুমাত্র দেরি করে না। সতর্কতার অভাবে মুহূর্তেই অগ্নিকাণ্ড ভস্মিভূত করতে পারে আপনার প্রিয় সাজানো সংসার, বসতবাড়ি, অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে।তাই  অবশ্যই যে তিনটি প্রধান বিষয় আপনাকে মাথায় রাখতে হবে-

প্রথমত, অগ্নিকান্ডের কারণ। দ্বিতীয়ত, এ থেকে সতর্ক থাকার নিয়ম কানুন আর তৃতীয়ত, অগ্নিকাণ্ডের পর করণীয়।
যেসব কারণে অগ্নিকান্ড ঘটে
১. ভালোভাবে গ্যাসের চুলা বন্ধ না করা এবং গ্যাসের লাইন ত্রুটিপূর্ণ বা ছিদ্র থাকা।
২. চুলা জ্বালিয়ে চুলার উপর কাপড় শুকাতে দেওয়া।
৩. সিগারেটের জ্বলন্ত আগুন।
৪. উত্তপ্ত ছাই।
৫. বৈদ্যুতিক গোলযোগ ও ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক তার।
৬. উত্তপ্ত তেল থেকে সৃষ্ট কারণে।
৭. আতশবাজি বা পটকা থেকে।
৮. বজ্রপাত।
৯. সাধারণ বিদ্যুতের তার দিয়ে বেশি ভোল্টের বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে।
১০. নিম্নমানের বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার করলে।
১১. বাচ্চাদের আগুন নিয়ে খেলা করা।
যেভাবে আমরা সতর্ক থাকতে পারি
১. রান্নার সময় সহজে খুলে ফেলা যায় এমন পোশাক ব্যবহার করুন। কিন্তু ঢিলেঢালা কাপড় নয়। রান্না ঘরে আপনার (মেয়েদের) ওড়না-শাড়ি সাবধানে রাখুন। ২. চুলার কাজ শেষ হওয়ার পর তা বন্ধ করে রাখা। গ্যাসের চুলা হলে ভালোভাবে সুইচ বন্ধ করে পরীক্ষা করা−ঠিকমতো বন্ধ হয়েছে কি না। সাধারণ চুলা বা লাকড়ির চুলা হলে ব্যবহারের পর পানি দিয়ে পরিপূর্ণভাবে নেভানো। ঠাণ্ডা ছাই ঢেলে নিশ্চিত হোন আগুন নিভেছে। ৩. মাটির চুলার তিন পাশে অন্তত আড়াই ফুট দেয়াল তুলে দিন। ঢাকনা বা চিমনিযুক্ত বাতি ব্যবহার করুন। এমনকি মোমবাতি ব্যবহারের সময়ও সতর্ক থাকুন    

 ৪. চুলার উপর কখনোই কাপড় শুকাতে না দেওয়া। ৫. গরম তরকারি ও ফুটন্ত পানি নাড়া চাড়ার সময় সতর্ক থাকুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখবেন ৬. মশার কয়েল এমন স্থানে রাখুন, যেখান থেকে অন্য কিছুতে আগুন লাগার কোনো ঝুঁকি থাকবে না। ৭. মানসম্পন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা, ত্রুটিপূর্ণ তার ব্যবহার না করা ও ত্রুটিপূর্ণ তার দ্রুত সারিয়ে নেয়া।

৮. কেউ বিদ্যুতায়িত হলে সম্ভব হলে- মেইন সুইচ বন্ধ করে তারপর তাকে ধরুন। ৯. ধূমপান শেষে বিড়ি-সিগারেটের বাদ দেয়া অংশের আগুন নিভিয়ে ফেলুন। যেখানে-সেখানে তা ফেলবেন না। মশারির ভেতর বা খাটে শুয়ে শুয়ে ধূমপান করবেন না। আমাদের দেশের বেশির ভাগ পুরুষরা বাসায় পরিবারের সকল সদস্যে/ছোট্ট বাচ্চাদের সামনে সিগারেট খেতে পছন্দ করেন যা অন্যায়ের সামিল। 

১০. বাচ্চাদের আগুন নিয়ে খেলা করতে না দেয়া। ১১. অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধের পর্যাপ্ত জ্ঞান এবং এর বিভিন্ন কারণ নিয়ে আলোচনা করে জানা, ইন্টারনেটে অনেক ইনফরমেশন আছে যা পড়ে জেনে আগুন সম্পর্কে সতর্ক থাকা যায়।
আগুন লাগলে কি করণীয়?
আগুন যদি লেগেই যায়, তাহলে প্রথমেই খুব দ্রুততার সঙ্গে আপনাকে কাছের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দিতে হবে। আপনার কাছে কি স্থানীয় লোকাল ফায়ার স্টেশনের ফোন নাম্বার আছে? না থাকলে তা সংগ্রহ করা অত্যন্ত জরুরী। আগুন নেভানোর জন্য আপনাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাহায্যের জন্য তারা সব সময়ই প্রস্তুত থাকে।
আপনার-আমার একটু অবেহলা ধ্বংস করে দিতে পারে জান-মাল, স্বপ্নের সাজানো সংসার। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে আমাদের সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। কেননা ‘বাঁচতে হলে জানতে হবে’ এজন্য আগুনের বিষয়ে আপনাকে অন্তত এই প্রধান তিনটি বিষয় সবসময় মাথায় রাখতে হবে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ, সতর্ক থাকার নিয়মকানুন, অগ্নিকাণ্ডের পর করণীয়।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad