পুলিশের ভূমিকায় সরব নাগরিক সমাজ , রাম নামেই তৃণমূল ফিনিশ হবে না তো ? - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday, 2 June 2019

পুলিশের ভূমিকায় সরব নাগরিক সমাজ , রাম নামেই তৃণমূল ফিনিশ হবে না তো ?


 রাম নামেই তৃণমূল ফিনিশ !
সত্যজিত চক্রবর্তী, দৈনিক যুগশঙ্খ

প্রতিবেদনটি দৈনিক যুগশঙ্খ থেকে সংগৃহীত



প্রেসকার্ড নিউজ ডেস্ক : তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের " জয় শ্রীরাম " স্লোগান বিক্ষোভ দেখানোয় পুলিশের বেদম প্রহার খেতে হল বিজেপি কর্মীদের। অথচ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় , রাজ্য বিজেপির সভাপতি দীলিপ ঘোষ থেকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ সকলেই কালো পতাকা বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়েছেন। তখন বিক্ষোভকারী তৃণমূল কর্মীদের পুলিশ মারেনি। পুলিশের এই দ্বিচারিতা নিয়ে সরব সাধারণ মানুষ বলছেন, রাম নামেই তৃণমূল ফিনিশ হবে না তো ?


পুলিশের ভূমিকা শাসক বিরোধীদের জন্য ভিন্ন তা দেখা গেছে গত তিন দিনে ঘটা কয়েকটি ঘটনায়।
শুক্রবার দত্তপুকুরের বড়বড়িয়ার একটি বাড়িতে বিজেপির দলীয় কর্মীসভা চলছিল।অভিযোগ, সেই সময় তৃনমুল আশ্রিত দুঃস্কৃতিরা সেই সভায় হামলা চালায়। বেশ কয় একজনকে মারধর করে বলে অভিযোগ। এবং বাড়ির সামনে রাখা বিজেপি কর্মীদের বাইক ভাংচুর করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা ছিল কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথ। অন্যদিকে আমডাঙার কুমারদুনি গ্রামে বিজেপিকে সমর্থন ও বিজেপির ঝাণ্ডা বাড়িতে রাখার   অপরাধে তৃণমূলের  দুষ্কৃতিরা  মারধর  ও বাড়ি দোকান ভাঙচুর  ও লুট করে বলে  অভিযোগ করে আহত  বিজেপি সমর্থক একরামুল মণ্ডল।  বিজেপি সমর্থক একরামুল মণ্ডল বলেন,  আমডাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পাল্টা চাপ দেন পুলিশ। এমনকি উত্তর চব্বিশ পরগনার শাসন থানার ঘোষপাড়ায় হামলা, ভাংচুর ও মহিলাদের পোশাক ছেঁড়া ঘটনায় গ্রেফতার নেই।


নাগরিক সমাজের প্রশ্ন, পুলিশ কি তাহলে কেবল মাত্র তৃণমূলের জন্য। বিজেপির কর্মী সমর্থকদের বাড়ির মহিলাদের পোশাক ছেঁড়া যায়। শিশুদের আছাড় মারা সহ সব ধরনের অত্যাচার করা যাবে ।
উত্তর চব্বিশ পরগনার কংগ্রেস নেতা আবু হেনা বলেন, পুলিশ ও তৃণমূলের জন্য মানুষ আজ বিজেপি মুখি। গনতান্ত্রিক অধিকার বিরোধীদের থেকে পুলিশকে সাথে নিয়ে হরণ করছে শাসক তৃণমূল। রাজারহাট গোপালপুরের তৃণমূলের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত বারাসতে এসে আগেই বলেছেন, পুলিশ চলে ওপরতলার নির্দেশে। নির্দেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশ যা করেন তা জনমানষে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। এটা ওপরতলা এবং পুলিশ উভয়কেই বুঝতে হবে।

ছবি : ফেসবুক থেকে সংগৃহীত


 বারাসত আদালতের আইনজীবী সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, সংবিধানে রাজনৈতিক রং দেখে গ্রেফতার ও বিচার হবে এধরণের কোনও উল্লেখ নেই। কোনও গনতন্ত্রে এবং সভ্য সমাজে শাসক বিরোধী রং দেখে অভিযোগ নেওয়া, পুলিশের সক্রিয় হওয়া এবং নিষ্ক্রিয় থাকার ঘটনা ঘটলে তা সমাজের অবক্ষয়। আর গনতন্ত্রের জন্য ভয়ঙ্কর। সিআরপিসি ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ধারা অনুযায়ী ১৫৬/৩ পুলিশ কোনও অভিযোগ না নিলে অভিযোগকারী আদালতে গিয়ে তদন্ত ও বিচারের জন্য অভিযোগ জানাতে পারেন।



সক্রিয় রাজনীতি না করা নাগরিক সমাজ এমনকি জনসংযোগে থাকা তৃণমূল নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, ব্যাথা কি কেবল তৃণমূলের লাগে। হামলা কি শুধু বিজেপি করে। বিজেপি বিক্ষোভ করলে লাঠি চার্জ। জয় শ্রীরাম ধ্বনিতে হুমকি, গ্রেফতার ও হামলা করতে হবে। এসব যত করবে তত বিজেপি জনপ্রিয় হবে।  তৃণমূল নেতার ব্যাখ্যার ছবি দেখা গেল উত্তরবঙ্গে। শনিবার দুপুরে জলপাইগুড়ি লোকসভার ধুপগুড়িতে বিজেপির বিজয় মিছিল করে। দক্ষিণ বঙ্গের মত রোদের তেজ ও তৃণমূলের প্রতিরোধ উত্তরবঙ্গে নেই।  ফলে বিজেপির মিছিলে জয় শ্রীরাম ধ্বনি মানুষের মনে দোলা দেয়। বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় বিভিন্ন বয়সের মানুষ। বাম ও তৃণমূল পরিবারের সদস্যরা মিছিলের অংশ নেওয়াদের থেকে মাখে গেরুয়া আবির । দু হাত তুলে বলে জয় শ্রীরাম। দোকানে থেকে বেরিয়ে এসে ব্যবসায়ীরাও দাঁড়িয়ে কেউ হাত তুলে সমর্থন করে কেউ আবার বলে ওঠেন, জয় শ্রীরাম।

বাড়ি ও দোকান থেকে বেরিয়ে এসে বিজেপির বিজয় মিছিল থেকে আবির মাখা ও জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়া কয়েক জনদের কাছে প্রশ্ন ছিল, এরপর যদি তৃণমূল হামলা করে। পুলিশ সক্রিয় হয়? পাশের  বছর সাতেক অবোধ ছেলে বলে উঠল জয় শ্রীরাম। প্রবীণ ব্যবসায়ী হেসে বললেন,  বাংলায় জয় শ্রীরাম এখন আবেগ। এই আবেগে যদি আঘাত পড়ে তাহলে তার প্রভাব পড়বে। কি রকম প্রভাব? সাফ জবাব ফিনিশ হতে হবে। কলেজ পড়ুয়া চয়নিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,  রাম হল শক্তির আধার। সত্য, দাপর , ত্রেতা ও কলি যুগে অবতাররা হলেন একেক জন শক্তি। শক্তিকে আঘাত করলে ফল পেতে হবে। শক্তিশালী বীর হনুমান শক্তি সঞ্চয় করতেন রাম নামে। জয় শ্রীরাম হল শক্তির প্রেরণা। ধর্মের নয়। বাংলার রাজনীতিকরা যে ব্যাখ্যা করছেন সব মানুষ তা মানছেন এমনটা নয়। আমি রাজনীতি বুঝি না কিন্তু ভুল বোঝালে মেনে নেব এমনটা নয়। গত দুমাসের বাংলার রাজনৈতিক ভাষ্য শুনে মনে হল,  বিজেপির উত্থানের আর তৃণমূল শেষের শুরু। উত্থান এবং শেষের জন্য অনুঘটক হতে পারে ,  " জয় শ্রীরাম। "

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad