মাসের এই কয়েকটা দিন তাঁরা কোনও ঠাকুরের পুজো করেন না, কোনও মন্দিরে যান না, গাছে জল দেন না, ফুল তোলেন না এমনকী কোনও শুভ কাজেও অংশ নেন না। তাঁদের ধারণা, এই সময় যদি তাঁরা কোনও কিছু ভুলকরে ছুঁয়ে ফেলেন তাহলে নিজেরই ক্ষতি করবেন। তাঁর বিশেষ কষ্টের কটা দিন তিনি অশুচি। এখনও ভারতবর্ষের নানা প্রান্তে ঋতুস্রাব নিয়ে মেয়েদের মধ্যে এমন ভ্রান্ত ধারণাই প্রচলিত।
তবে সেই ট্যাবু এখন আগের চাইতে অনেকটাই পাল্টেছে। কিন্তু তাও শহুরে শিক্ষিতদের মধ্যেই। সর্বসমক্ষে ঋতুস্রাব নিয়ে অনেক মেয়েই কথা বলতে নারাজ। বিশেষত গ্রামীণ ভারতবর্ষে। তাই সমস্যার আঁতুড়ঘর এখনও সেখানেই। সেই ট্যাবু কাটাতেই শুরু হয়েছে মাসিক মহোৎসব। এই নিয়ে তৃতীয় বর্ষে পা দিল এই উদ্যোগ। দেশ জুড়েই মূলত মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুতে পালন করা হয় এই বিশেষ উৎসব। মে মাসের ১৯ থেকে ২৮ পর্যন্ত চলে। শুধুমাত্র ঋতুস্রাবের উৎসবই নয়, পালন করা হয় কন্যাসন্তান হয়ে জন্মানোর জন্যেও। জানালেন এই উৎসবের উদ্যোক্তা ২৭ বছরের নিশান্ত বাঙ্গেরা।
ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্যই এই উৎসবের মূল লক্ষ্য। আলোচনা হয় স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে। বোঝানো হয় খুব সহজেই মেয়েদের শরীরে কি কি রোগ বাসা বাঁধতে পারে, কীভাবে নিজেরা নিজেদের খেয়াল রাখবে, সবসময় কেন গোপনাঙ্গ পরিষ্কার রাখবে, এই সময় কোনও রকম কাপড় ব্যাবহার কতটা ক্ষতি ডেকে আনতে পারে ইত্যাদি। এছাড়াও নাচ, গান, নাটক তো থাকেই। থাকে ছেলেদের বিশেষ পাঠ। মেয়েদের যেমন স্যানিট্যারি ন্যাপকিন বানানো শেখানো হয় তেমনই আজকাল প্যাডের বদলে menstrual cups ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হয়।
এবারে এই উৎসব শুরু হওয়ার পর নেপালে মিথ্যে রক্ত দিয়ে মেয়েরা একটি দারুণ আর্ট ওয়ার্ক করেছে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের থানে আর বানজারার বস্তিতে পিরিয়ড পার্টি নাম দিয়ে একটি আলোচনা চক্র চালানো হয়। সেখানেই উঠে আসে কোনও প্যাড ২৪ ঘন্টা যদি আপনার শরীরে থাকে তাহলে সেখান থেকে ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশনের আশঙ্কা থেকে যায়। এছাড়াও প্রস্বাবের সময় অন্যান্য অসুবিধেও হতে পারে। ব্যবহারের পর স্যানিট্যারি ন্যাপকিন কখনই কোমডে ফেলে ফ্লাশ করবেন না। কাগজ ও প্লাস্টিকে মুড়ে তবেই ডাস্টবিনে ফেলুন। পিরিয়ড সংক্রান্ত যাবতীয় ট্যাবু দ্রুত কাটিয়ে উঠুক মেয়েরা। এটাই তাঁদের একমাত্র চাওয়া।
from ap bangla | অ্যানালিটিক্যাল প্রেস | Analytical Press | http://bit.ly/2KgMEOS
No comments:
Post a Comment