YELLOW TALK মিডলাইফ ক্রাইসিস শুধু নয়, দশের শিশুও মত্ত সেক্সটিং-এ, অভিভাবকরা শুনছেন তো? - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, 30 April 2019

YELLOW TALK মিডলাইফ ক্রাইসিস শুধু নয়, দশের শিশুও মত্ত সেক্সটিং-এ, অভিভাবকরা শুনছেন তো?




‘গোপন কথাটি রবে না গোপনে’.. জীবনের মিড-পয়েন্টের অর্থাৎ চল্লিশ-পঞ্চাশের উসখুসুনি নয়, স্মার্ট ফোনের হাত ধরে শরীরী খেলায় মেতেছে শিশুরাও প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া যে দেশে নৈব নৈব চ, সেখানে গোপনে-আড়ালে-আবডালে যৌনতার বুনো গন্ধে কখন যে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে শৈশব তা বোধকরি টেরও পায়নি সমাজ চেতনা যখন ফিরেছে তখন জল গড়িয়ে গেছে অনেকটাই শরীরী উষ্ণতার স্বাদ নিতে নিতে চুপিসাড়ে পা পড়েছে সাইবার অপরাধের জগতে, স্মার্ট ফোনের কিছু ছবি-ভিডিও ঘিরে বেড়েছে ব্ল্যাকমেলিং, নগ্ন ছবি নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যবসা পরতে পরতে জমাট বেঁধেছে অবসাদ, সেখান থেকে আত্মহত্যার প্রবণতা এখনও অন্ধকারে রয়েছেন যে অভিভাবকরা তাঁরা সতর্ক হন দ্রুত

মনোবিদদের মতে, এই সেক্সটিং-এর চল কিছু নতুন নয় অনেকদিনের প্রেম, অনেক দিনের দাম্পত্যে একঘেয়েমির কারণে রোম্যান্স বা যৌন উত্তেজনা হারিয়ে যায় সেক্সটিং সেই বসন্তকেই নতুন করে হাজির করে কমিটেড রিলেশনে ভালোবাসা বা মরচে পড়া সম্পর্কে উত্তেজনা ফিরিয়ে আনতে সেক্সটিং-এর প্রবণতা দেখা যায় যে কোনও বয়সেই তবে সেটা দু’জন মানুষের মধ্যে একান্তই গোপন, ব্যক্তিগত ভালোলাগার জায়গা বর্তমান ডিজিটাল প্রযুক্তির বাড়বাড়ন্তে এই গোপন কথা আর কোনও ভাবেই গোপন থাকছে না শরীরী খেলার খ্যাপামিতে মেতে সেক্সটিং-এর গোপন উঠোন এখন নেট দুনিয়ায় দাঁত বার করে হাসছে বাড়ছে শিশু পর্নোগ্রাফি, পারভার্সন, অপরাধমূলক কাজের প্রবণতা  
এই সেক্সটিং আসলে কী?
একটা সময় চল্লিশ-পঞ্চাশ অথবা ষাট-পঁয়ষট্টিদের আড়ালে প্রশ্ন করলে জানা যেত, জীবনের মিড-পয়েন্টে পৌঁছে তাঁরা খুবই অসুখী, তাই থেকেই গোমড়া, খিটখিটে মেজাজ জীবন নিয়ে সাংঘাতিক বিপর্যস্ত এই জটিল সংকট থেকে সামান্য মুক্তি পেতেই চিঠিপত্রে বা ফোনে হাল্কা অশ্লীল কথার চালাচালি যেন ভ্যাপসা গরমে দক্ষিণের বারান্দায় এক মুঠো তাজা বসন্তের বাতাস তখনও সেক্সটিং এই কথাটা গাম্ভীর্যে ছিল অনেকটাই ভারী কারণ যেখানে সেখানে ‘সেক্স’ উচ্চারণ করাটা ছিল সমাজের চোখে অপরাধের মতো যুগ বদলেছে, এখন খুল্লমখুল্লা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বা অলিগলিতে সাপটে চুমু খেতে আপত্তি করে না জেন ওয়াই, জেন এক্স চোখ রাঙালে তার জন্য হয় প্রতিবাদও তাই ফোনে বা হালে অ্যাপ নির্ভর যৌন উত্তেজক কথার চালাচালির নতুন নাম এখন সেক্সটিং
আলোচনার শুরুটা হয় অপর প্রান্তের মানুষ কী ধরনের পোশাক পরে আছে তার একটা নিখুঁত ও ‘স্বচ্ছ’ আলোচনা দিয়ে পরের ধাপটা আরও পরিণত নানা উত্তেজক কথার মাঝেই ফুটে ওঠে শারীরিক চাহিদার সুপ্ত বাসনা ধীরে ধীরে নিজেদের একাধিক নগ্ন ছবি বা পর্ন ছবির আদানপ্রদান আর একটু পরিণত হলে ভিডিও (বেশিরভাগই পর্ন ভিডিও)চালাচালি  
কী বলছে সমীক্ষা?

গবেষকরা বলছেন সম্পর্কের দূরত্ব থেকে একসময় যে সেক্সটিং-এর প্রবণতা বেড়েছিল এখন সেটা দাঁড়িয়েছে স্রেফ বিনোদন বা সময় কাটানোর পর্যায়ে প্রাপ্তবয়স্করা শুধু নয় বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েরা সবচেয়ে বেশি মেতে উঠেছে সেক্সটিং-এ মধ্য পঞ্চাশের মহিলা থেকে, আইটির তরুণ, কলেজ পড়ুয়া থেকে স্কুলের কিশোরী—সেক্সটিং-এর নেশা গ্রাস করছে প্রবীণ-নবীনকে সেটা শুধু এ দেশে নয়, বিশ্বজুড়ে সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, ১১-১৭ বছর বয়সী লক্ষাধিক ছেলেমেয়ে সেক্সটিং-এ সবচেয়ে বেশি আগ্রহী গড় বয়স ১৫ ১০-১১ বছরের শিশুরাও পিছিয়ে নেই সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের সূত্র অনুযায়ী, প্রতি সাত জন শিশুর মধ্যে ১৪ শতাংশই এই ধরনের চ্যাটে আসক্ত তার মধ্যে ১২ শতাংশ নিজেদের বুদ্ধি-বিবেচনা ছাড়াই যৌন উত্তেজক মেসেজ বা ভিডিও পাঠিয়ে থাকে মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধরনের সুড়সুড়ি দেওয়া কথাবার্তা শিশু বা কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রথমে থাকে একটা মজার বিষয় বা হাসির খোরাক ধীরে ধীরে তাতেই এসে যায় আসক্তি অনেকটা নেশার মতো আমার অনেক সেক্সটিং পার্টনার আছে সকলেই ক্লাসমেট এটা আমার ভালোলাগা, সময় কাটে,” নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর মুখেই শোনা গেছে এমন কথা

ছেলে কিংবা মেয়ে বর্তমান প্রজন্ম অনেকটাই এগিয়ে গেছে সেক্সটিং-এ শুধুমাত্র সম্পর্ক বা ভালোলাগা নয়, সেক্সটিং এখন পৌঁছে গেছে ব্যবসার জায়গাতেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, কোনও কমিটমেন্ট বা সরাসরি যোগাযোগ নেই, কিন্তু চ্যাটের মাধ্যমে ক্লায়েন্টদের কাছে থেকে হাতখরচ তুলে নিচ্ছে অনেক তরুণ-তরুণী বা কিশোর-কিশোরী
কতটা ক্ষতি করছে স্মার্ট ফোনের অ্যাপ বা সোশ্যাল মিডিয়া

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একাধিক মেসেজিং অ্যাপের হাত ধরেই সেক্সটিং-এর বাড়বাড়ন্ত প্রযুক্তির ভাষায় এর পোশাকি নাম ‘সেক্সট’ (Sext)অর্থাৎ সেক্স+টেক্সট ছবি শেয়ারিং বা সেক্সুয়াল কথাবার্তার মাধ্যমে যৌন আনন্দ খুঁজে নেওয়া তার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ, স্কাইপ, স্ন্যাপচ্যাটের মতো একাধিক মেসেজিং বা ভিডিও অ্যাপ রয়েছে সে ক্ষেত্রে স্ন্যাপচ্যাট সেক্সটিং-এর একটা বড় প্ল্যাটফর্ম প্রতিদিন প্রায় ৭০ কটি ছবি দেওয়া-নেওয়া হয় স্ন্যাপচ্যাটে তা ছাড়া স্কাইপে ভিডিও চ্যাট তো রয়েছেই
২০১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডের একটি স্কুলে ধরা পড়ে শতাধিক পড়ুয়া সেক্সটিং চক্রে জড়িত জানা যায়, স্মার্টফোনের ‘ভল্ট অ্যাপ’-এর মাধ্যমে প্রায় ৩০০-৪০০ নগ্ন ছবি তারা আদান-প্রদান করেছে পারস্পরিক ক্লাসমেটদের মধ্যে, এমনকি মোবাইল অ্যাপের হাত ধরে সেই সব ছবি ও ভিডিও পৌঁছে গেছে পর্নোগ্রাফির দুনিয়াতেও
সেক্সটিং-এ আসক্ত শৈশব, বাড়ছে শিশু পর্নোগ্রাফি
২০০৮ সালে গবেষণা জানিয়েছিল, ,২৮০ কিশোর-কিশোরী সেক্স-চ্যাটে আসক্ত ২০-২৬ বছর বয়সীদের সংখ্যা সেখানে ৩৩ শতাংশ ২০১১-তে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ১,৫৬০-তে ২০১২ সালে উটাহ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দাবি করেন, শিশু এবং কিশোরদের মধ্যে সেক্সটিং-এর প্রবণতা বেড়েছে ২০ শতাংশ বর্তমান সময় সেটা আরও বেশি  মনোবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই প্রজন্মের বহু ছেলেমেয়ে টাকার জন্য সেক্সটিং করে থাকে স্কুল বা কলেজের পকেটমানিতে মদ বা আরও কোনও নেশার খিদে মেটে না, অনেক সময় সেটা পূরণের জন্য বা নিছকই টাকার লোভে ছেলেমেয়েরা বয়সে অনেকটা বড় কারও সঙ্গে সেক্সটিং করতে আরম্ভ করে, যা থেকে বেরিয়েও আসতে পারে না ফলে ধীরে ধীরে মানসিক অবসাদ গ্রাস করে শুধু তাই নয়, এই সব ছবি বা ভিডিও হাত ঘুরে চলে যায় সাইবার অপরাধীদের কাছে বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশু পর্নোগ্রাফি অত্যাধিক বাড়বাড়ন্তের একটা অন্যতম কারণই এই সেক্সটিং পরিবারে সব বয়সীদের হাতেই এখন স্মার্ট ফোন কাজেই অভিভাবকরা বা পরিবারের বয়স্করা জানতেই পারেন না কখন চুপিসাড়ে সেক্সটিং-এর জগতে পা রেখেছে তাঁদের আদরের সন্তান কাজেই, সতর্কবার্তাটা শুরু হওয়া উচিত পরিবার থেকেই সচেতন থাকতে হবে বাবা, মাকেই নিজের সন্তানকে প্রতিকূল পরিবেশ থেকে রক্ষার সিংহভাগ দায়িত্বটা তাঁদের উপরেই বর্তায়


from মিস বাংলা http://bit.ly/2PBQ27q

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad