রহস্যে আবৃত। আপাদমস্তক। যখন
অভিনয়ের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন তখনও, যখন অভিনয় জীবন থেকে বিরতি নিলেন,
তার পরেও। ২৬ বছর ভারতীয় ছবির
দর্শককে নিজের রূপ ও অভিনয়গুণে মাতোয়ারা করে রেখেছিলেন। তাঁর সেই 'অঁরা'
যেন কোনও কিছুতেই ছোঁয় না। তিনি সুচিত্রা
সেন। মহানায়িকা। শনিবার
তাঁর ৮৮ বছরের জন্মদিন।
৫২টি বাংলা ছবি এবং বেশ কয়েকটি হিন্দি ছবি করার পর ১৯৭৮-এ
অভিনয় জীবন ছেড়ে দিয়েছিলেন। তার পর আর কোনওদিন সজ্ঞানে
ক্যামেরার সামনে আসেননি। প্রায় ৩৬ বছর নিজেকে 'বন্দি'
করে রেখেছিলেন নিজের চেনা ও বেছে নেওয়া জগতে।
সুচিত্রা সেনকে বলা হত বাংলা সিনেমার মধুবালা। যদিও
মধুবালার সঙ্গে তাঁর তুলনা করাটা বাঙালি দর্শকের কাছে অযৌক্তিক ঠেকতেই পারে। তবে
দু'জনেই বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরীদের মধ্যে অন্যতম সেরা। বাংলা
হোক বা হিন্দি,
তাঁর মতো অভিনেত্রী খুঁজে পাওয়াটা একটু কঠিন।
বিয়ের আগে তাঁর নাম ছিল রমা দাশগুপ্ত। পরিচালক
নীতীশ রায় তাঁকে ছবির জন্য নাম দিয়েছিলেন 'সুচিত্রা'। জানা
যায়, সময়ের অভাবে সত্যজিত্ রায়ের সঙ্গে ছবির করার অফার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। রাজ
কাপুরের সঙ্গে কাজ করার সুযোগও ছেড়ে দিয়েছিলেন। উত্তম কুমারের
সঙ্গে তাঁর রোম্যান্টিক সম্পর্ক নিয়ে চলেছে নানা জল্পনা-কল্পনা, সুচিত্রা
সেসব নিয়ে কখনও কোনও উত্তর দেননি। আসলে, নিজের
মতো করে নিজের নিয়মেই বেঁচে থাকতে পছন্দ করতেন তিনি। জীবনের শেষ
দিন পর্যন্তই তাই করেছেন। তিনি ৮২ বছর বেঁচে ছিলেন। তবু
তাঁর বার্ধক্যের নয়,
সবার মানসপটে চির জাগরুক যৌবনের মোহনীয়, শাশ্বত
বাঙালি রূপের সুচিত্রা সেন। কারণ তিনি জানতেন, কখন
থামতে হয়। অনেক
অভিনেতা-অভিনেত্রীই হয়তো সেটা পারেন না।

No comments:
Post a Comment