আধুনিকতার ছোঁয়া সম্পর্কে এনেছে জটিলতাও

আধুনিক হয়েছে মানুষ। এই আধুনিক সমাজে মানুষ যেমন বদলে গেছে তেমনই বদলে গেছে তাদের আবেগ। এই আধুনিকতা বর্তমান সমাজে আমাদের পারস্পারিক সম্পর্কের মধ্যেও কিছু দেয়াল তৈরী করে দিয়েছে। মানুষ এখন আর সম্পর্ককে কোন আবেগ দিয়ে বিচার করে না।

সম্পর্ক মানুষের জীবনে এখন একটি অর্থহীন অধ্যায়। সম্পর্কে কেবলই ব্যাক্তিগত চাহিদা আর লোভ ছাড়া এখন আর কিছুই নেই। বেশীরভাগ মানুষের কাছেই সম্পর্ক মানেই একটি বাহুল্যতা।

আমরা আজকে দেখে নেব কিভাবে আমাদের আধুনিক সমাজের যোগাযোগ মাধ্যমগুলো আমাদের সম্পর্কতে নিয়ে আসছে নানান জটিলতা।

১. প্রথম সমস্যাটি হচ্ছে বিশ্বাস। এইযুগে বিশ্বাস এখন কারো প্রতি কারো নেই বললেই চলে। ধরুন একজন মেয়ে তার বান্ধবীকে বলছে এমন যে, ‘আমি একজন এমন পুরুষ চাই যে কিনা বিশ্বাসী হবে, সত্যবাদী হবে, ধৈর্যশীল হবে, আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে, রাগী হতে পারে, তবে স্বার্থপর হবে।’ এই কথা শুনে ওপর দিকে বসে থাকা তার বান্ধবী বললো, ‘তুই কি কুকুরের কথা বলছিস’

২. আজকাল ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়েো সম্পর্কে ধরছে চিড়।

৩. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন জায়গা নিয়ে আমাদের পারস্পারিক সম্পর্কে নানান জটিলতা তৈরী হচ্ছে। কেন কেউ এই পোষ্টে লাইক দিল, কেন এই ধরণের ছবি পোষ্ট করলো? ফেসবুক্ময় একটি জীবনে আর কি আশা করা যায়?

৪. পকেটে পয়সা আছে? দারুন কোন উপহার কিনতে পারবেন? ভালবাসা ছাড়া এইসব ফিকে পন্য দ্বারা টিকে আছে আমাদের পরস্পরের সম্পর্ক।

৫. আমাদের এখন আরেকটি সমস্যা দেখা দিয়েছে তা হল আমরা যখন কারো সাথে সম্পর্কে জড়াই তখন একে অপরকে বদলে ফেলতে চাই নিজের মত করে। এটা ঠিক না।

৬. আজকাল যা হয়ে গেছে তা হল আপনি আপনার পার্টনারকে ছুঁতে পারবেন কিন্তু তার ফোনকে নয়। মানুষের জীবনে নিজস্ব একটা জায়গা থাকা খুব জরূরী কিন্তু তা যদি পরস্পরকে পরস্পর থেকে দূরে ঠেলে নিয়ে যায় তাহলে যার যার ব্যাক্তিগত জায়গায় তাকে একাই থাকতে হবে।

৭. সম্পর্কের মোদ্দা কথাই আজকাল বদলে গেছে। কারন কারন আজকাল কথা হয় টেক্স করার মাধ্যমে, ঝগড়া হয় ফোনে আর অনুভুতি প্রকাশ করা হয় স্ট্যাটাস আপডেটের মাধ্যমে।

৮. স্ট্যাটাস আপডেট, ছবি আপডেট করতে করতে আজকাল মানুষ জীবন উপোভোগ করতেই ভুলে গেছে,অনুভব করা ভুলে গেছে।

৯. এখন পরস্পর পরস্পরকে মুখে সামনা সামনি ভালবাসি বলার চেয়ে ফেসবুকের স্ট্যাটাস বেশী শক্তিশালী হয়ে গেছে।

১০. ব্যাস্ত জীবনে মোবাইল ফোন হয়ে উঠেছে আরো একটি যন্ত্রনার নাম। এক রেস্টুরেন্টে প্রেমিকা তাঁর প্রেমিককে বলছে, ‘তোমার মোবাইল্টা আমার মাথার উপর রাখো যাতে তুমি একটু তাকাতে পারো আমার দিকে।