প্রেসকার্ড নিউজ : মেনোপজ নিয়ে কথা হলে, বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায় হটফ্ল্যাশ, খিটখিটে মেজাজ, মানসিক অবসাদ, বিষণ্ণতা, অল্পতে হাপিয়ে উঠা, ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস, চুলকানি এসবই মেনোপজের লক্ষণ। এসবের পাশাপাশি কখনো শরীর থেকে গরম হল্কার মতো বের হবে, কখনো প্রচন্ড ঘাম হবে কিংবা হাত পা জ্বালাপোড়া করবে।
সহজ ভাষায় মেনোপজ হচ্ছে নারীদের পিরিয়ড স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া। মেয়ে শিশুর জন্মের সময়েই নির্দিষ্ট সংখ্যক ডিম্বাণু জরায়ুতে জমা থাকে। প্রতিমাসে পিরিয়ডের সাথে অনিষিক্ত ডিম্বাণু বের হয়ে যাওয়ায় সঞ্চিত ডিম্বাণুর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। এভাবে কমতে কমতে ডিম্বাণুর সংখ্যা একেবারে শেষ হয়ে যাওয়ার অবস্থাকেই ‘মেনোপজ’ বলে। মেনোপজ নারীদের একটি শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। সাধারণত ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সে এই বিষয়টি হয়।
মেনোপজ বলতে গেলে আগে ঋতুস্রাব সম্পর্কে জানতে হবে। ১৩-১৪ বছর বয়স থেকে ৪৫-৫০ বছর পর্যন্ত প্রতি মাসে মেয়েদের শরীর থেকে যে রক্ত ঝরে যাচ্ছে, এটিকে ঋতুস্রাব বলা হয়। এর সঙ্গে অবশ্যই হরমোনের একটি বিষয় থাকে। আর ঋতুস্রাব না হওয়াটাই হলো মেনোপজ। ৪৫ বছরের পরে ৫০ বছর বয়সী কোনো নারীর এক বছর বা সমপরিমাণ সময় পর্যন্ত ঋতুস্রাব বন্ধ থাকে, সে ক্ষেত্রে ওই নারী মেনোপজ হয়ে যাচ্ছে বলা হয়। ডিম্বাশয়ে যে ফলিকলগুলো থাকে, এগুলো কমে যাওয়ার কারণেই আসলে হরমোনের সহযোগিতা না থাকার
কারণে মেনোপজ হয়। তখন ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়।
দীর্ঘমেয়াদে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার কারণে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হয়। কারণ পুরো বিষয়টি হরমোনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। প্রজনন বয়সের মেয়ের রূপ, গুণ, চাকচিক্য সবকিছু হরমোনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই হরমোন যখন শরীর থেকে হঠাৎ চলে যায় অথবা ধীরে ধীরে চলে যাওয়ার সময় হয়, তখন শরীরে ব্যাপক পরিবর্তন হয়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। কোনো কিছু ভালো লাগে না। হঠাৎ করে কান-মাথা গরম হয়ে যায়। রোগীর অভিযোগ থাকে- হাতের তালু জ্বলে, পায়ের তালু জ্বলে, চিকন ঘাম হয়।
মেনোপজের আগে একটি সময় থাকে, যাকে প্রিমেনোপজাল পিরিয়ড বলা হয়। রোগীরা অনেক সময় আমাদের কাছে এসে বলে যে, 'শরীর শুকনো লাগে'। ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস হয়। এতে তাদের দাম্পত্য জীবন ব্যাহত হয়। এ ধরনের অনেক সমস্যা নিয়ে রোগীরা আমাদের কাছে এসে থাকে। একটি সময় জিনিসগুলো আরেকটু বাড়বে, যখন একদমই হরমোন থাকবে না। তবে ভয় পাবেন না। উপসর্গগুলো যেন কম থাকে সেজন্য আপনার খাওয়াসহ অন্যান্য অভ্যাসগুলো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলে দেবেন। উন্নত বিশ্বে এইচআরটি তো খুব প্রচলিত। এইচআরটি হলো হরমোন রিপেল্গসমেন্ট থেরাপি। যে হরমোনগুলো না থাকার কারণে শরীরের পরিবর্তনগুলো আসছে, বাইরে থেকে হরমোন সাপিল্গমেন্ট দিয়ে এই উপসর্গগুলো কিছুটা কমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। তাই সমস্যার শুরুতেই চিকিৎসকের শরণাপম্ন হোন, চিকিৎসা নিন, ভালো থাকুন।
No comments:
Post a Comment