কখনও কবিতা কখনও রং শেখাচ্ছেন মরমী স্নেহময়ী মা - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday, 9 March 2019

কখনও কবিতা কখনও রং শেখাচ্ছেন মরমী স্নেহময়ী মা




নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও অবিচল হয়ে সমাজ গড়ার কাজ করে চলেছেন দেশের এক প্রত্যন্ত এলাকার অঙ্গওয়াড়ি কবিতা মাহাতো। লতিকা, শিবু, তানিশা, সুমন, তসলিমা-রা গোল করে বসে আছে। আর তাদের মধ্যমণি হয়ে বসে কখনো কবিতা বলছেন, কখনও ওদের রং শেখাচ্ছেন বিথীকা। পুরুলিয়ার মানবাজার-১ ব্লকের প্রত্যন্ত এক গ্রামের অঙ্গনওয়ারী কর্মী তিনি।

 শরীর বিদ্রোহ না করলে একদিনও বন্ধ হয় না তাঁর কেন্দ্রে আসা। এটা যে হয়ে উঠেছে তাঁর দ্বিতীয় ঘর। তাঁর নিরলস সেবা ও একাগ্রতার কারণে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার সম্প্রতি তাঁকে পুরস্কৃতও করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ২০১৭-২০১৮ বর্ষের জন্য পেয়েছেন ‘ন্যাশন্যাল অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যাওয়ার্ড’। দক্ষিণ ভারতে চিকিৎসাধীন থাকার কারণে তিনি সশরীরে আনুষ্ঠানিকভাবে সে পুরস্কার নিতে যেতে পারেন নি। প্রশাসনের প্রতিনিধি তাঁর সেই পুরস্কার ও সম্মান বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে গেছেন। একই বর্ষে রাজ্য সরকার দিয়েছে উৎকর্ষতা পুরস্কার। এই সব পুরস্কার তাঁর কাছে আরও ভাল কিছু করার অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে বলে জানালেন বীথিকা। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে নারীকুলের কাছে তাঁর আর্জি ‘সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসুন। নারী শক্তিই সমাজ গড়বে এবং পথ দেখাবে।’

   পুরুলিয়ার মানবাজার-১ ব্লকের চাপাতি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ১৯৭৫ সাল থেকে এই কেন্দ্রের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বিথীকা মাহাতো। রাজ্যের অন্যতম মডেল আইসিডিএস কেন্দ্র হিসেবে এটি চালু হয়েছিল। রাস্তার ধারে অবস্থিত এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিতে সকাল-সকাল হাজির হন তিনি। ছোট্ট সে ঘর জুড়ে পরিশীলতার ছাপ দেখা যায়। ছোট ছোট শিশুদের হাতে কলমে পাঠ দেওয়ার নিদর্শন ঘর জুড়ে। কখনো কবিতা বলছেন, কখনো ফল চেনাচ্ছেন, কখনো খেলা করছেন ওদের সাথে। আবার কখনো পরম যত্নে ওজন নিচ্ছেন শিশুদের। ওদের সাথে গানও গেয়ে ওঠেন। এলাকার মানুষজন থেকে শিশুদের অভিভাবক সবাই খুশি এমন মানুষ পেয়ে। ওই বাচ্চা গুলোই তাঁর ভালোবাসা, তাঁর জীবন। অসুস্থ শরীরেও তাই ছুটে যান ওদের কাছে। হয়ে ওঠেন এক মরমী স্নেহময়ী মা।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad