আমরা দু পায়ের প্রাণিরা যে কতটা ভয়ানক হতে পারি তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। একদিকে যে প্রকৃতি আমাদের জন্য আসীম ভান্ডার খুলে দিয়েছে, সেই প্রকৃতিকে অনবরত ধ্বংসের মুখে প্রতিনিয়ত আমরা ঠেলে দিচ্ছি। অবশ্য প্রকৃতিও এবার শোধ তুলছে। এক তো করোনা মহামারী, অন্যদিকে আম্ফান, এরপর জানা যাচ্ছে সূর্যের তাপও শিথিল হয়ে আসছে, ভারত মহাসাগরের টেকটনিক প্লেট ভেঙ্গে যাচ্ছে, পৃথিবী নিজের চৌম্বক ক্ষেত্রের শক্তি হারাচ্ছে, যা অদূর ভবিষ্যতে ব্যাপক ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়াবে। আবার পঙ্গপাল কোথাও নিজেদের বীরত্ব দেখাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এক কথায় সব মিলিয়ে মানুষের ওপর প্রকৃতি তার ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও যেন কিছুতেই হুঁশ ফিরছে না মানুষের। তার জ্বলন্ত প্রমাণ এই ঘটনাটি।
হাওড়া জেলার শ্যামপুর গাদিয়াড়া রাস্তার ধারে গুজারপুর এলাহাবাদ ব্যাংক থেকে কিছুটা শ্যামপুরের দিকে এগিয়ে একটা বিউটি পার্লারের সামনে কেউ বা কারা নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বর্বরতার পরিচয় দিয়ে গাছের গোড়ায় নিয়মিত আগুন দিয়ে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করছে। এটা দেখে শ্যামপুর অধিবাসীরা প্রশ্ন তুলেছেন -কোথায় প্রশাসন ?
এলাকার সচেতন মানুষের বক্তব্য, আর কত নীচে নামবে মানুষ! মানুষ কথার অর্থ মান আর হুঁশ। এদের তো মান বা হুঁশ-এর কোনটাই নেই। ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে আর কত নীচে নামবে এরা?
গাছের গোড়ায় আগুন দেওয়া প্রসঙ্গে কারণ জিজ্ঞাসা করায় জানা গেল , লোকচক্ষুর অন্তরালে প্রথমে গাছের গোড়ার দিকে কিছুটা অংশ কেটে গর্তের আকার দেওয়া হয়। তারপর সেই ফাঁকা অংশে রাতের অন্ধকারে বেশ কিছুদিন আগুন দেওয়া হয়। এর ফলে গাছটি আস্তে আস্তে শুকিয়ে যেতে থাকে। এক সময়ে গাছটি মারা যায়। তারপর ব্যক্তিগত ভাবে ব্যবসায়িক কারণে সেই গাছ কেটে ফেলা হয়।
এলাকার পরিবেশ সচেতন কয়েকজন বলেন, আমরা এই ঘটনার ছবি সহ উলুবেড়িয়া রেঞ্জ অফিসারের কাছে লিখিত ভাবে অবগত করেছি। ইতিমধ্যে শ্যামপুর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় অনেক গাছ মানুষের লোভের বশবর্তী হয়ে আগুনে পুড়ে মারা গেছে এবং ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে তাদের কেটে ফেলা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যে সমস্ত গাছ আছে এবং যে সমস্ত গাছ গুলির গোড়ার অংশটা কিছুটা কাটা হয়েছে আগুন দেওয়ার জন্য কিন্তু এখনও আগুন দেওয়া হয় নি, অবিলম্বে সরজমিনে পরিদর্শন করে সেই গাছ গুলিকে বাঁচান।
সচেতন পরিবেশকর্মীরা এলাকার জনগণের কাছে বার্তা দিয়ে জানাচ্ছেন, "এখনও সজাগ হন। নাহলে ভবিষ্যতে করোনার থেকেও মারাত্মক দিন অপেক্ষা করছে"।


No comments:
Post a Comment