দেবশ্রী মজুমদারঃ গতকাল পাঁড়ুই থানা এলাকায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের মোট ৮ জনকে গ্রেপ্তার করল পাড়ুঁই থানার পুলিশ। এদিন তাদেরকে সিউড়ি আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, পুলিশকে হেনস্থা করা, খুনের চেষ্টা, বিস্ফোরক মজুত, অস্ত্র আইন সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।
তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৪৪, ১৮৬, ৩৫৩, ৩৩২, ৩০৭, ৩০৮, ও ৩, ৪, ৫ বিস্ফোরক আইন, ২৫, ২৭ অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। ৮ জনের মধ্যে লক্ষ্মীন্দর বাউরী, শেখ মোজাম্মেল, শেখ শরিয়দ এই তিনজনের তিন দিনের পুলিশ হেফাজত, এবং বাকিদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। উল্লেখ্য, গত শনিবার এলাকা দখলের লড়াইয়ে বিজেপি তৃণমূল রাজনৈতিক সংঘর্ষ ঘটে পাড়ুই থানার সাত্তোরে। শনিবার রাত থেকে রবিবার বেলা দুপুর বারোটা পর্যন্ত চলে ব্যাপক বোমাবাজি।
ঘটনাস্থলে বীরভূম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবিমল পাল কম ব্যাট ফোর্স নিয়ে এলাকা ঘিরে ফেলে। শনিবার বোলপুরে বিজেপির মিটিং ছিল। অভিযোগ, বোলপুর থেকে ফেরার পথে সবুর সেখ, সেখ ফিরোজ সহ বেশ কয়েকজনের উপর হামলা চালায় তৃণমূল সমর্থক সেখ মিলন, হাফিজুল সেখ, ইয়াসিন সেখ, লালচাঁদ সেখ। এই ঘটনার পর উত্তেজনা ছড়ায়। দুই পক্ষে রাত থেকে বোমা বাজি শুরু হয়। সেখ মিলনের বাড়িতে বিজেপি সমর্থকেরা আগুন লাগায় বলে অভিযোগ।
জানা গেছে, বেলুটির বাসিন্দা মিলন সেখ সপরিবারে দীর্ঘদিন ধরে ঘরছাড়া। ঘরে ঢুকতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এদিন তাদের ঘরে আগুন লাগানো হয়। যদিও বিজেপি নেতা শিমুলিয়া পলসার বাসিন্দা ফিরোজ সেখের দাবি, তৃণমূল সমর্থক মিলন সেখ এলাকায় ঢুকলেই অশান্তি করে। এদিন মিলন সেখ শিমুলিয়ায় বিজেপি সমর্থক সেখ মঙ্গলের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। সেটা ঢাকার জন্য মিলন নিজের বাড়িতে নিজেই আগুন লাগিয়েছে। এলাকায় গুলি বোমা ছূঁড়েছে।
তাদের নেতৃত্ব দিয়েছে সাত্তোর উপপ্রধান সেখ কুরবান ও পঞ্চায়েত কর্মী। ফিরোজ সেখ জানান, রবিবার সকালে বিজেপি সমর্থক লালচাঁদ সেখ তার শ্বশুর বাড়ি ভেড়ামাড়ি যায় মাংস কিনতে। সেখানে তাকে তৃণমূল সমর্থকেরা মারধোর করে। তার নাক ও কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। বর্তমানে সে বোলপুর সিয়ান হাসপাতালে গুরুতর আবস্থায় চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে, বেলুটি,শিমুলিয়া, পলসা শিমুলিয়া, মৌলারা বিজেপি প্রভাবিত। অন্যদিকে ভেড়ামাড়ি তৃণমূল প্রভাবিত। সাত্তোর অঞ্চলের তৃণমূল নেতা সেখ মোস্তফা বলেন, এলাকায় বিজেপি ঘরছাড়া তৃণমূল সমর্থকদের ঢুকতে দিচ্ছে না। পুলিশ সঠিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। অন্যদিকে বিজেপি নেতা ফিরোজ সেখের বলেন, আমরা প্রতিরোধ করে তৃণমূল দুষ্কৃতীদের তাড়াতে চাইছি। কারণ তারা গ্রামে অশান্তি বাধায়।
পি/ব
No comments:
Post a Comment