সন্যাসি থেকে কোটী ডলারের মালিক হওয়ার গল্প - pcn page old

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday, 22 September 2019

সন্যাসি থেকে কোটী ডলারের মালিক হওয়ার গল্প




প্রেস কার্ড নিউজ ডেস্ক ;      অ্যান্ডি পাডিকোম্বের জীবনে পরপর ঘটে যায় দুঃখজনক কিছু ঘটনা। তারপর তার জীবনটাই সম্পূর্ণভাবে বদলে যায়। জানা গেছে, তখন ২২ বছর বয়স ছিল তার। লন্ডনের একটি পানশালার বাইরে বন্ধুদের নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন এক মদ্যপ গাড়িচালক তার বন্ধুদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিলে দু’জন মারা যায়।  ওই ঘটনার কয়েকমাস পর তার সৎ বোন মারা যান সাইকেল দুর্ঘটনায়। তারও কিছুদিন পর অপারেশনের সময় মারা যান তার সাবেক বান্ধবী।



ওই সময় অ্যান্ডি স্পোর্টস সাইন্সের ওপর পড়াশোনা করছিলেন। টানা কয়েকটি ঘটনার শোক সহ্য করতে না পেরে পড়াশোনা ছেড়ে দেন। জীবন পুরোপুরি পরিবর্তন করার জন্য তিনি হিমালয়ে গিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষু হওয়ার দীক্ষা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। পরের ১০ বছর ভিক্ষু হিসেবে জীবনযাপন করেন অ্যান্ডি। ভ্রমণ করেন এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে, কখনো কখনো দিনে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্তও ধ্যান করতেন। তিনি বলেন, সবকিছু আবার সহজভাবে মেনে নেয়ার ক্ষেত্রে ধ্যান আমাকে সাহায্য করেছে। ধ্যান আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এনেছে।



 নিজের বিষয়ে কম চিন্তা করে অন্যান্যদের সুখের জন্য চিন্তা করতে শিখিয়েছে এটি।অ্যান্ডি আরো বলেন, পরিবারের একজনও জানতো না যে কীভাবে এ বিষয়টি সামাল দেবে। কিন্তু তার পরেও প্রত্যেকে সমর্থন ও সাহস দিয়ে গেছেন। এরপর ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যে ফিরে গিয়ে ধ্যানে সহায়তা করার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেন তিনি। কিন্তু যুক্তরাজ্যে সে সময় মেডিটেশনের তেমন একটা চল ছিল না। তিনি এ ব্যাপারে বলেন, ধ্যানের সময় যেন ভঙ্গিতে কথা বলা হয়, তা নিয়ে আপত্তি ছিল অনেকের।



কেউ আবার এটিকে কিছুটা হিপি বিষয় বলে মনে করতো। মানুষের ধ্যান করার সময়ও ছিল না, আর তারা জানত না যে এটা কীভাবে করা যায়। লন্ডনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে মেডিটেশনের প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করেন অ্যান্ডি, যেখানে অতিরিক্ত কাজের চাপে থাকা পেশাজীবীদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের ক্ষেত্রে সাহায্য করার চেষ্টা করতেন তিনি। বর্তমানে তিনি এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড পিয়েরসন জনপ্রিয় চিকিৎসা বিষয়ক অ্যাপ হেডস্পেস পরিচালনা করেন। যা বিশ্বজুড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি বার ডাউনলোড করা হয়েছে এবং যাদের বার্ষিক আয় ১০ কোটি ডলারেরও বেশি বলে ধারণা করা হয়।



২০১০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করা শুরু করে তারা। ধ্যানের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করার পাশাপাশি দলগতভাবে মেডিটেশনের সেশনও পরিচালনা করে তারা।বর্তমানে তাদের অ্যাপ ব্যবহার করতে মাসে প্রায় ১০ পাউন্ড অর্থ ব্যয় করতে হয়। ২০১৩ সালে রিচার্ড ও অ্যান্ডি ব্যবসার কেন্দ্র সরিয়ে লন্ডন থেকে লস অ্যাঞ্জেলসে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তখন থেকে হেডস্পেসের সদর দপ্তর লস অ্যাঞ্জেলসে রয়েছে।



 শুরুতে নিজেদের অর্থায়নে পরিচালিত হলেও, ২০১৪ সাল থেকে ব্যবসা ও অ্যাপের কার্যক্রম বড় করার উদ্দেশ্যে বাইরের বিনিয়োগ গ্রহণ করা শুরু করে হেডস্পেস। বর্তমানে সাড়ে সাত কোটি ডলার লগ্নি করা রয়েছে হেডস্পেসে, যদিও সিংহভাগ মালিকানা অ্যান্ডি ও রিচার্ডের হাতেই। শুরুতে অ্যান্ডি ও রিচার্ড দু’জনই ব্যবসার সব অংশের দেখভাল করলেও ব্যবসা বড় হওয়ার পর থেকে তারা কাজ ভাগ করে নেন।



  পি/ব 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad