মঞ্চ দিয়েই অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন। এরপর
তাকে দেখা গেছে বহু চলচ্চিত্রে। ‘দাদার কীর্তি’, ‘সাহেব’,
‘অন্তরঙ্গ’, ‘আশীর্বাদ’, ‘শিমুল পারুল’ ইত্যাদি ছবি দিয়ে বাংলা ছবির ইতিহাসে উজ্জ্বল এক নাম হয়ে আছেন
তাপস পাল।
তিনি জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ২০০৯
সালের ভারতীয় সাধারণ নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে টিকিট নিয়ে নির্বাচিত হয়ে কৃষ্ণনগর
থেকে এমপি হন। কিন্তু
২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্বাচনের কিছুদিন আগে একটি নির্বাচনী প্রচারণা সভায়
বক্তৃতা দিতে গিয়ে তাপস পাল বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন।
ওই সভায় তিনি নিজেকে ‘চন্দননগরের মাল’ বলে পরিচয় দেন এবং
জানান যে তিনি পকেটে ‘মাল’ নিয়ে ঘুরে বেড়ান। এছাড়া তিনি
ছেলে পাঠিয়ে বিরোধী পক্ষের সমর্থকদের ধর্ষণ করে দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। পরে
এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলে তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চান।
২০১৬ সালের শেষ ভাগে তাপস পাল আবার সংবাদ শিরোনামে আসেন রোজ
ভ্যালি নামে একটি চিট ফান্ডের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ১৩
মাসের জেল জীবন শেষে জামিনে মুক্ত হন তিনি। ইমেজ সংকটে তাকে আর
এবার নির্বাচনে প্রার্থী করেনি মমতার তৃণমূল কংগ্রেস।
রাজনীতি থেকে বিতাড়িত হয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন তিনি। দলে
তার কিছুমাত্র পাত্তা নেই। তার বেপরোয়া আচরণ হজম
করতে পারেনি তৃণমূল। তাই সবরকম যোগাযোগ করেও
দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাক্ষাত পাননি।
তার প্রভাব পড়েছে যেন সিনেমাতেও। কোনো কাজ নেই
হাতে। কেউ
কোনো প্রস্তাব নিয়ে আসছেন না। বেকার সময় কাটাতে ও
জীবনের প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে তাই ফিরেছেন সেই পুরনো যাত্রামঞ্চে। যার
দাপটে একদিন কৃষ্ণনগর কাঁপতো সেই তিনি এখন জীবীকার জন্য যাত্রার মঞ্চে নামতে চলেছেন।
কিছুদিন আগে বেশ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তাপস পাল। এখন
অনেকটাই সুস্থ বলে জানা গেছে। তাই ফের যাত্রায় নামার
সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রত্নদীপ
অপেরায় আবার তাপস পাল অভিনয় করবেন। এরইমধ্যে বেশ কিছু প্রস্তাব
রাজার ঘরে রাজলক্ষ্মী, হিয়ার মাঝে মোর প্রিয়া,
চাঁদের প্রিয়া চন্দ্রমুখী, ভালবাসা কি আগে বুঝিনি,
একটুকু ছোঁয়া লাগে প্রভৃতি সফল যাত্রাপালা গ্রামবাংলার দর্শকদের উপহার
দেওয়ার পর সাময়িক বিরতি নিয়ে আবার তার যাত্রায় আগমন। দেখা যাক, পুরনো
ইনিংসে ব্যাট করতে নতুন করে মাঠে নামা তাপস পাল কতোটা সাফল্য পান যাত্রায়।

No comments:
Post a Comment